Saturday, December 8, 2012

এফডিআই যুদ্ধে জয়ী ইউপিএ সরকার এবার জনগণের বিরুদ্ধে সর্বত্মক যুদ্ধ শুরু করতে চলেছে।সংসদে এফডিআই ভোটে বিপক্ষকে টুকরো টুকরো করার পর এখন কোনও বাধাই নরমেধ মহাযজ্ঞে অন্তরায় হবে না, করপোরেট ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদী কর্তৃত্ব এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।পলাশ বিশ্বাস http://basantipurtimes.blogspot.in/

এফডিআই যুদ্ধে জয়ী ইউপিএ সরকার এবার জনগণের বিরুদ্ধে সর্বত্মক যুদ্ধ শুরু করতে চলেছে।সংসদে এফডিআই ভোটে বিপক্ষকে টুকরো টুকরো করার পর এখন কোনও বাধাই নরমেধ মহাযজ্ঞে অন্তরায় হবে না, করপোরেট ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদী কর্তৃত্ব এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। 

পলাশ বিশ্বাস



এফডিআই যুদ্ধে জয়ী ইউপিএ সরকার এবার জনগণের বিরুদ্ধে সর্বত্মক যুদ্ধ শুরু করতে চলেছে।সংসদে এফডিআই ভোটে বিপক্ষকে টুকরো টুকরো করার পর এখন কোনও বাধাই নরমেধ মহাযজ্ঞে অন্তরায় হবে না, করপোরেট ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদী কর্তৃত্ব এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। খুচরো ব্যবসায়ে একচেটিয়া করপোরেট আধিপাত্য সুনিশ্চত করতে একগুচ্ছ আইন প্রণয়ন প্রথম পদক্ষেপ।গুড়গাঁও মারুতি কারখানায় শ্রমিক অশান্তির জেরে করপোরেট ইন্ডিয়া ভারতবর্ষের যাবতীয় শ্রম সম্পর্কিত আইন সংশোধিত করার দাভি জানিয়ে আসছে কাজের ঘন্টা ও কার্য পরিবেশ সন্ক্রান্ত আইনী বাধা কাটাতে তাই রাত দিন ওয়ালমার্টের মত শপিংগ ণল খোলা রাখার জন্য শ্রম আইন সংশোধিত হতে চলেছে ইতিমধ্যে ইপিএফ বোর্ট নিযুক্তা কম্পানীকে কর্মচারিদের পিএফ জমা করার দায়িত্ব ছেড়ে দেবার ঘোয়ণা করে দিয়েছে  পিএফ যাবে শেয়ার বাজারে  পেনসন ও বীমায় বিদেশী বিনিয়োগ 49 শতাংশ করার কেবিনেট সিদ্ধান্তও এবার সংসদীয মন্জুরী পেতে চলেছে এফডিআই যুদ্ধে কংগ্রেসের এই জয়ে সবচেয়ে লাভ হল মার্কিনী একচেটিয়া জায়নবাদী করপোরেট ব্যবসার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাই আনন্দে  আটখানা এবার চড়চড় করে বাড়বে শেযযার বাজার, জনগণের জমাপুঁজি , সম্পত্তি, বীমা, পেনসন ও পিএপের হয়ে যাবে জলান্জলি 

খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগকে অনুমোদন দিয়েছে ভারতীয় সংসদ। সংসদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বিদেশ দফতরের মার্ক টোনার আশাপ্রকাশ করেছেন, এবার, উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশগুলির মতোই ভারতের খুচরো বাজারেও বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে। একইসঙ্গে তাঁর দাবি, এর ফলে ভারতের কৃষক সমাজের পাশাপাশি উপকৃত হবেন ছোটো ব্যবসায়ীরাও। 

আম্বেডকরবাদী নেত্রী মায়াবতী  বিজেপির বিরোধিতা করে অন্যায় কিছু করেন নি কিন্তু তিনি রাজ্যসভায় নিজের বক্তৃতায় রাজ্যের অধিকার এফডিআই চালূ করা না করা নিয়ে যা বলেছেন, কেন্দ্র সরকার তাঁর ব্যবস্থা করে ফেলেছে ইউনিফর্ম লাইসেন্সিংগ প্রণালী চালু করে রাজ্যকে কার্যতঃ পন্গু করে দেওয়া হবে  লাইসেন্সের কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা হলে রাজ্যের সিদ্ধান্তের প্রশ্নই উঠবে না  এছাড়া জমি ব্যবহার সন্কান্ত আইন প্রণয়ন করে চাষীদের করপোরেট নিয়ন্ত্রণে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ফসল ফলাতে বাধ্য করা হবে নীলচাষের মত  বাজারের দাবী অনুযায়ী চাষ প্রচলিত হলে শষ্য ভান্ডারে টান পড়বে ক্ষুধার  অধিকার আইন হলেও খাদ্য নিরাপত্তার কোনও সম্বাবনা খাকবে না ক্রয়শক্তিবিহীন জনগণের জন্য 

আমি বার বার বলে এসেছি, লিখেছি নিয়মত বাংলায়, ইংরাজি ও হিন্দীতে, জায়নবাদী ধর্মান্ধ জাতীয়তাই মুক্ত বাজার অর্থনীতির মূল শক্তি  ডিজিটাল নাগরিকত্ব করপোরেট একটচেটিয়া আগ্রাসনের সবচেয়ে ধারালো অস্ত্র  ডিজিটাল নাগরিকত্ব বহুসংখ্যক  পিছিয়ে পড়া তফসিলী জাতি, উপজাতি, সংখ্যালঘু, উদ্বাস্তুদের জল জন্গল জমি আজীবিকা থেকে উত্খাত করার পাকা পোক্ত স্থাই বন্দোবস্তই শুধু নয়, এতদ্দ্বারা করপোরেট ডাটা ব্যান্কে গচ্ছিত আপনার ফিন্গার প্রিন্ট আপনার বিরুদ্ধে যেমন খুশি তেমন ব্যবহার করা যাবে  সম্পত্তি দখলে  বেয়াড়া হলে রাষ্ট্রবিরোধী তকমা এঁটে দিতে উত্পাদন প্রণালী কে ধ্বংস করে সার্ভিস ভরষায় বাজারের বৃদ্ধি কে রাষ্ট্র ওজণগণের বৃদ্ধি দেখিয়ে যে করপোরেট সংস্কৃতির আবাহন কারা হয়েছে, তাঁকে মজবুত করতেই আধার মারফত ক্যাশ সাবসিডি বিতরণের বন্দোবস্ত উপভোক্তা বাজারে নগদ সন্চলন অব্যাহত রাখার জন্য  তাই এফডিআই পাস হওয়া মাত্র আধার অভিযান নূতন করে শুরু হয়েছে৤ অতি আশ্চর্যের বিষয হল বামপন্থীরাও এই ডিজিটাল নাগরিকত্ব ও বেআইনী আধার করপোরেট প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন না  যে হেতু এই প্রকল্পে বহুজন সমাজেরই সর্বনাশ অথচ সংখ্যালঘু ব্রাহ্মণ্যশ্রেণীর পোয়া বারো 

আধার ক্যাশে সবার আগে মৃত্যু হতে চলেছে গণ বিতরণ প্রণালীর ব্যান্কিং সংশোধন আইন দিয়ে খতম করা হবে এসবিআই কে  ব্যাংন্কে আবার একচেটিয়া করপোরেট পুঁজির কর্তৃত্ব হবে 

খুচরো এফডিাই কে করপোরেট একচেটিয়া কারোবার বানাতে নগর বরিকল্পনা ঢেলে সাজানো হবে  ইনভ স্টমেন্ট বোর্ট হচ্ছেই  ইনফ্রাস্ট্রাকচার বন্ড চালূ হয়েছে জমা পুঁজি অনিয়ন্ত্রিত চিটফান্ডের দখলে এখন করপোরেট ও চিটফন্ড ব্যান্কই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যান্কগুলির ধ্বংসাবশেষে মাথা তুলে দাঁড়াবে 

ভূমি অধিগ্রহণ সংশোধন আইন আসছেই ভূমি সংস্কার না করেই  পরিবেশ আইন, স্থানীয় নিকায় আইন এবং কমপিটিশন আইন আসছে সংস্কারের দ্বিতীয় চরণে, একচেটিযা দখলদারি নিশ্চিত করতে কোম্পানী বিল আনা হবে করপোরেট রাজ আরও মজবূত করতে 

এফডিআই জেহাদ শুরু করার জন্য মমতাকে শিক্ষা দিতে তত্পর কংগ্রেস লালগড়ে কংগ্রেসের সভামঞ্চ থেকে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দলের সাংগঠনিক লড়াই মজবুত করার ডাক দিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী জয়রাম রমেশ। এদিন জয়রামের নজরে একদিকে ছিল রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন, তেমনই তার নিশানায় ছিলেন মুখ্যমুন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়রাম বলেন, "কংগ্রেসকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেউ সরাতে পারবে না`। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রদেশ কংগ্রেস নতুন রাজনৈতিক শক্তি নিয়ে লড়াই করবে বলেও মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। 

ছমাসও কাটেনি। বদলে গেল ভারত নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি। আর্থিক সংস্কার নিয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণে দেরি করায় একসময় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম। এফডিআই নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরেই বদলে যায় ছবিটা। সেই মার্কিন সংবাদমাধ্যমেই প্রশংসার ঝাঁপি উপুড় করে সাধুবাদ জানিয়েছিল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে। এবার আবার। এফডিআইয়ের সংসদীয় অনুমোদনকে স্বাগত জানাল আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মার্ক টোনার জানিয়েছেন, ``বহুব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে ভারতীয় সংসদ। এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।``

এফডিআইকে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভারতীয় সংসদে ভোটাভুটির মাধ্যমে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হওয়ায়, সন্তোষ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। টোনার বলেছেন, 
রাজনৈতিক উপায়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেখানে সবপক্ষের কাছেই সুযোগ ছিল নিজের মতামত প্রকাশ করার। তারপরেই এই সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

একইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্বাস, কৃষকসমাজের পাশাপাশি, এফডিআই থেকে উপকৃত হবেন ভারতের ছোটো ব্যবসায়ীরাও। এফডিআইয়ের ফলে, কৃষক ও খুচরো ব্যবসায়ীদেরও উন্নতির সুযোগ রয়েছে। এর ফলে খাদ্যপণ্যের দাম কমে গিয়ে উপকৃত হবেন উপভোক্তারা। তেমনই, পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ আসবে। মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের পাশাপাশি, ইন্দো-মার্কিন বিজনেস কাউন্সিলের পক্ষ থেকেও এফডিআইয়ের সংসদীয় অনুমোদনকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী বাণিজ্যিক চাহিদার কাছে দেশীয় বাজারকে সঁপে দিচ্ছে মনমোহন সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হলেও, মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের বার্তা সামনে আসার পর এ নিয়ে বিরোধীরা ফের সরব হবেন বলে ধারনা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। 


খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি লগ্নিতে আর কোনও বাধা রইল না।  লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও এফডিআই বিরোধিতার প্রস্তাব পরাস্ত হল। তবে প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে ঠিক কতগুলি ভোট পড়েছে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অস্পষ্টতা। দ্বিতীয়বার গণনার পর জানানো হয়, প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১২৩টি। বিপক্ষে পড়েছে ১০২টি ভোট। যদিও সরকারপক্ষের দরকার ছিল ১১৭টি ভোট। চারজন নির্দল সাংসদ সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ভোটদানে বিরত থেকেছেন ১৯ জন সাংসদ। পূর্ব ঘোষণামতো বহুজন সমাজ পার্টি সরকারপক্ষেই ভোট দিয়েছে। ভোটাভুটি শুরুর ঠিক আগে ওয়াকআউট করেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদরা। তবে কোন পক্ষে কত ভোট তা নিয়ে অস্পষ্টতা এখনও কাটেনি।

 
একদিকে মায়াবতী, অন্যদিকে তাঁর চিরশত্রু মুলায়ম। প্রায় মুখ দেখাদেখি না থাকা এই দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এফডিআই নিয়ে এসে মিলল একই বিন্দুতে। খুচরো বিতর্কের ভোটাভুটিতে মায়া-মুলায়মই হয়ে উঠলেন মনমোহন সরকারের বাজি। মূলত তাঁদের বদান্যতাতেই খুচরো ব্যবসায়ে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে আর কোনও বাধা থাকল না।


সংখ্যা নিয়ে অস্পষ্টতা স্বত্বেও এসপি, বিএসপির বদান্যতায় রাজ্যসভাতেও শেষ পর্যন্ত জয়ী উইপিএ-২ সরকার। গতকাল মায়াবতীর সমর্থনের আশ্বাসের পর আজ রাজ্যসভায় ভোটাভুটি শুরু হওয়ার আগে সপার ৯ জন সাংসদ ওয়াকয়াউট করেন।

এই ৯ সাংসদ ও মনোনীত সাংসদ সচিন তেন্ডুলকরের অনুপস্থিতির ফলে ম্যাজিক ফিগার ১২৩ থেকে কমে দাঁড়ায় ১১৮। কক্ষে মোট ২১২ জন সাংসদের ভোট নথিভুক্ত হয়। তার মধ্যে ১২৩ জন সাংসদ এফডিআই এর পক্ষে ভোট দেন। বিপক্ষে ভোট দেন ১০২ জন সাংসদ।

গত মঙ্গলবার দীর্ঘ বিতর্কের পর লোকসভায় ভোটাভুটিতে জয়ী হয় সরকার পক্ষ। এর পর গতকাল এবং আজ রাজ্যসভায় এফডি আই ইস্যু নিয়ে বিতর্কের পর ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে গেল এফডিআই বিরোধী প্রস্তাব।

লালগড়ে দাঁড়িয়ে রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুরধার ছিলেন রমেশ। তৃণমূল কংগ্রেসে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে তিনি বলেন, "কংগ্রেস কোনও দলের বি টিম নয়।" রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সবকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে না বলেও মন্তব্য করেছেন রমেশ। রাজ্যে তিনটি জেলা মাও অধ্যুষিত। রাজ্যের মাওবাদীদের কথা মাথায় রেখে তিনি বলেন, "মাওবাদীদের জন্য আমাদের দরজা খোলা আছে, আমরা আলোচনা করতে চাই।" কেন্দ্রীয় সাহায্যেই গত তিন বছরে জঙ্গলমহলে পরিবর্তন এসেছে বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী। 

ঠিক এক বছর আগে শেষবার যখন জয়রাম জঙ্গলমহলে এসেছিলেন সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারীর। এই একবছরে সময়টা অনেকটা পাল্টেছে। দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গ ছেড়েছে তৃণমূল। আজকে কংগ্রেসের সভায় জয়রাম রমেশের পাশাপাশি অন্য দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চৌধুরী ও দীপা দাশমুন্সীও ছিলেন। রাজ্যসরকারের ব্যর্থতা ও সন্ত্রাস নিয়ে সমালোচনা করেছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী বলেন, "জঙ্গলমহলের মানুষের দারিদ্র-হতাশার পরিবর্তন হয়নি।" রাজ্যে একশ দিনের টাকা নয়ছয় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন অধীর। 

সংসদে অনুমোদন পাওয়ার একদিন পরেই এফডিআই-এর সমর্থনে আরও জোরালো সওয়ালে সরব হলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি বিনিয়োগের ফলে কৃষক থেকে ক্রেতা, প্রত্যেকেই উপকৃত হবে বলে দাবি করেছেন তিনি। কৃষিপণ্য বিপণনে উন্নততর প্রযুক্তির ব্যবহার করা সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

শনিবার ছিল পঞ্জাব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ডক্টর অফ সায়েন্সের সাম্মানিক ডিগ্রি প্রদান করা হয় তাঁকে। সদ্য শুক্রবার রাজ্যসভায় খুচরো বিতর্কের ভোটাভুটিতে বিরোধীদের হারিয়ে জয় পেয়েছে সরকারপক্ষ। একদিন পরেই এফডিআই-এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে সচেষ্ট হলেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদে এফডিআই অনুমোদন পাওয়ার পর খুচরো ব্যবসায়ে বিদেশি বিনিয়োগের সমর্থনে সরব হওয়ার প্রথম মঞ্চ হিসেবে বেছে নিলেন পঞ্জাব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কেই। কৃষিজ পণ্য উত্‍পাদনে দেশের মধ্যে যে রাজ্য সবচেয়ে এগিয়ে সেখান থেকেই নিজের সংস্কারমুখী পদক্ষেপের গুরুত্ব তুলে ধরলেন তিনি। কারণ সংসদে রাজনীতির হিসেবে জয় পেলেও, সামনে বড় পরীক্ষা লোকসভা ভোট। তার দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আনা আর্থিক সংস্কারের গ্রহণযোগ্যতা সাধারণ মানুষের কাছে বাড়ানো প্রয়োজন। এফডিআই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে না পারলে, আগামী লোকসভা ভোটে বড় ধাক্কা খেতে পারে ইউপিএ সরকার। 

এর পাশাপাশি, কৃষিকাজে আগামী দিনে দেশ যে সব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, তারও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। পঞ্জাব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এইসব ক্ষেত্র অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কৃষিপণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত নয় বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মনমোহন সিং। কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াতে পরিকাঠামোর উন্নতি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। এতে পচনশীল কৃষিদ্রব্য মজুত করার ব্যবস্থা আরও উন্নত হলে লোকসানের মাত্রা কমে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি। দেশের কৃষিকাজে পাঞ্জাবের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা উল্লেখ করেও, এখানে যেভাবে মাটির নিচের জল অপচয় করা হয়, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

রেলভাড়া নিয়ে সক্রিয় প্রধানমন্ত্রী

আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আন্তঃমন্ত্রক গোষ্ঠীকে রেলের ভাড়া নির্ধারণকারী কমিটি গঠনের প্রস্তাব চূড়ান্ত করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷ প্রধানমন্ত্রীর দন্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রেল ট্যারিফ অথরিটি গঠনের চূড়ান্ত প্রস্তাব আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে আন্তঃমন্ত্রক গোষ্ঠীকে৷ ওই একই সময়ের মধ্যে প্রস্তাবটি জমাও দিয়ে ফেলতে হবে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীকে৷ পাশাপাশি, এই গোষ্ঠীর প্রস্তাব সম্পর্কে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ক্যাবিনেট নোটও তলব করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ 

রেলের ভাড়া কতটা বাড়ানো যায়, এবং কোন রুটে কত শতাংশ ভাড়া বাড়ানো যেতে পারে, তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে চায় রেল৷ ২০১২-১৩ রেল বাজেটে এই কমিটি গঠনের প্রস্তাব ছিল৷ মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রেল চালানোর খরচও বাড়ছে৷ ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে৷ বিদ্যুতের খরচও ঊর্ধ্বমুখী৷ সুতরাং 'অপারেশনাল কোস্ট' মেটাতে যাত্রীভাড়া বাড়াটাই বাঞ্ছনীয়৷ এ ছাড়াও বর্তমানে ২৪ হাজার কোটি টাকার লোকসানে চলছে রেল৷ সেই বোঝা কমাতে ভাড়া বাড়ানোই বিকল্প ব্যবস্থা৷ 

কিছুদিন আগেই রেলমন্ত্রী পবন বনশল লোকসভায় জানিয়েছিলেন, রেলকে চালাতে হলে আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে৷ টাকার অভাবে রেলের বিভিন্ন প্রকল্প থমকে রয়েছে৷ ভাড়া না বাড়ালে দেশের আর্থিক বৃদ্ধিতে রেল কোনও অবদানই রাখতে পারবে না৷ তাই মন্ত্রকের ভার নেওয়ার প্রথম থেকেই যাত্রীভাড়া বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী পবন বনশল৷ এ ছাড়া যাত্রী পরিষেবার মান বাড়াতেও ভাড়া বাড়ানো প্রয়োজন৷ কিন্ত্ত তিনি বরাবরই বলে এসেছেন, আচমকা ভাড়া বাড়ানো হবে না৷ রেল ট্যারিফ অথরিটির সুপারিশ মেনেই বর্ধিত ভাড়া চালু হবে৷ 

ভুল হয়েছে বিলকুল, মানছে বাম-বিজেপি
সাতসকালেই এক শীর্ষ সিপিএম নেতা বললেন, "খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে ১৮৪ ধারায় ভোটাভুটি করতে চাওয়াটাই আমাদের একটা মস্ত বড় ভুল হয়ে গেল।"
রাজ্যসভায় মায়াবতীর সমর্থন নিয়ে কংগ্রেস যে এই ভোটযুদ্ধে জিততে চলেছে, সেটা জানতে তখন আর কারও বাকি নেই। ওই সিপিএম নেতা দুঃখ করে বললেন, "সংসদে যদি আমরা ভোটাভুটিহীন বিতর্ক করতাম (অর্থাৎ ১৯৩ ধারায় বিতর্ক), তা হলে গোটা দেশের মানুষের কাছে দেখিয়ে দিতে পারতাম, বেশি সংখ্যক দল ও বেশি সংখ্যক বক্তাই কিন্তু বিদেশি লগ্নির বিরুদ্ধে। যাকে বলে সেন্স অফ দ্য হাউস।"
আজ দিল্লিতে সিপিএম পলিটব্যুরো বৈঠকও হয়েছে। সেখানেও বিষয়টি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বিমান বসু কলকাতায় অনেক দিন আগেই এক বার বলেছিলেন, "১৮৪ ধারায় যদি না-ও হয়, সংসদে ১৯৩ ধারাতেও বিতর্ক হতে পারে।" কেন্দ্রীয় সরকারেরও প্রথম থেকেই ইচ্ছে ছিল ১৯৩ ধারায় আলোচনা করার, যেখানে বিতর্ক-আলোচনা হত, ভোটাভুটি হত না। কিন্তু সিপিএম ও বিজেপি সাঁড়াশি আক্রমণে কংগ্রেসকে বাধ্য করেছে ১৮৪ ধারায় আলোচনা এবং ভোটাভুটিতে যেতে। 
এখন ভোটে কংগ্রেস জিতে যাওয়ার পরে শুধু সিপিএম নয়, বিজেপি নেতারাও বুঝতে পারছেন, চালে ভুল হয়ে গেল। ময়না-তদন্ত করতে গিয়ে বিজেপি বুঝতে পারছে, কংগ্রেসকে মরিয়া হয়ে ভোটে জেতার জন্য উল্টে তারাই উদ্বুদ্ধ করেছে। আর তাই সুষমা স্বরাজকে সংসদে বলতে হচ্ছে, "ভোটে জেতাটা লক্ষ্য নয়। আমরা যুক্তি দিয়ে সরকারকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে বাধ্য করতে চাই।"
প্রশ্ন হল, তা-ই যদি হবে, তবে বিজেপি ভোটাভুটির দাবি করল কেন? সুষমা বলেছেন, "বেশি সংখ্যক দল ও বক্তা বিদেশি লগ্নির বিরুদ্ধে। ভোটাভুটি যা-ই হোক, এই বিষয়টি স্পষ্ট।" এখানেই এখন প্রশ্ন তুলছেন সিপিএম ও বিজেপির অন্য নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ১৯৩ ধারায় বিতর্ক হলেই হয়তো সুষমার যুক্তিকে প্রতিষ্ঠা করা সহজ হত। 
মাঝখান থেকে এই জয়ের ফলে সরকারের মনোবল অনেক বেড়ে গেল। কংগ্রেস নেতা তথা সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কমল নাথ তো বলেই দিয়েছেন, "যো জিতা ওহি সিকন্দর।" কেন্দ্রে যে কোনও সরকার আড়াই বছর অতিবাহিত করলে তার আঁধার দশা শুরু হয়। শরিকরা সমর্থন প্রত্যাহার করে, ছোবল মারে। সেখানে দু'দফা মিলিয়ে ইউপিএ-র বয়স আট বছর ছাড়িয়েছে। দ্বিতীয় দফায় নতুন শরিক নিয়ে শুরু করেও সরকারকে বিভিন্ন সময়ে প্রবল চাপে থাকতে হয়েছে। 
এমনই এক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে চলে যাওয়ার পরে নতুন রণকৌশল নিয়েছে সরকার। অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা এক দিকে সংস্কারমুখী আদর্শের বিজয় কেতন ওড়াতে সক্রিয়। অন্য দিকে, কমল নাথ-রাজীব শুক্ল সংসদে কক্ষ সমন্বয়ে কৌশলী ভূমিকায়। মায়াবতীর সমর্থন আদায় এই পরিস্থিতিতে সামগ্রিক ভাবে কংগ্রেসের পালে বাতাস আনার পক্ষে যথেষ্ট। এনডিএ জমানায় এই কক্ষ সমন্বয়ের কাজটাই করতেন প্রমোদ মহাজন। এ ভাবে বিল পাশ করিয়ে বহু বার তিনি বাহবা পেয়েছেন। কমল নাথদের কক্ষ সমন্বয়ের কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পর বিজেপি নেতারা এখন নৈতিক জয়ের কথা বলছেন। কিন্তু তাকে উড়িয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেন, "হেরে গেলে বিজেপি ইমানুয়েল কান্টের নৈতিকতায় চলে যায়। আর জিতলে মেকিয়াভেলি।"

• সরকারকে ভোট বিএসপি-র (১৫ সাংসদ)
• সপা-র ওয়াক আউট (৯ সাংসদ)
এখন বিজেপি ও সিপিএম নেতারা বলছেন, গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিদেশি লগ্নির বিরুদ্ধে প্রচার করবেন। কিন্তু দু'টি দলেরই সাংগঠনিক সমস্যা প্রবল। গ্রামে প্রচার করতে গেলে সাংগঠনিক শক্তি লাগে। বিজেপি সংসদীয় দল এখন দলীয় সভাপতির পদ থেকে নিতিন গডকড়ীকে সরাতেই বেশি ব্যস্ত। এ দিকে গডকড়ী আজও বলেছেন, "আমি সৎ। আমি সরবো না।" তাই বিজেপির মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, নেতৃত্বের সমস্যায় জেরবার দল কি পারবে গ্রামে গিয়ে প্রচার করতে? অনেক বিজেপি নেতারই বক্তব্য, "তা হলে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করাই ভাল ছিল। সংখ্যা ছিল না বলে সেই প্রস্তাব আমরা সমর্থন করিনি। অথচ ১৮৪ ধারায় ভোটাভুটি আছে জেনেও তা নিয়ে জোর করেছি।" তাঁরা মানছেন, "এটা উচিত হয়নি।" সমস্যা হল, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বে অন্তর্কলহ এত তীব্র যে, আত্মসমীক্ষার সুযোগও খুব কম। প্রথা অনুসারে, দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক তিন মাস অন্তর হওয়ার কথা। তা এখন আট মাস অন্তর হচ্ছে। কংগ্রেস বরং কখনও সুরজকুণ্ডে, কখনও জয়পুরে আত্মসমীক্ষায় বসছে। 
জয়ের নতুন উদ্দীপনায় সরকার এখন চেষ্টা করবে কিছু অর্থ বিল পাশ করাতে। বিরোধী দলের ভূমিকা কী হবে সেটাই এখন দেখার।
http://www.anandabazar.com/8desh1.html

এই দেশে গোটা ব্যবস্থা বিষময়, মত টাটার
রকারের সাহায্য না পাওয়াতেই চিনাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে পারে না নানা ভারতীয় সংস্থা। ভারতে ব্যবসা করতে গেলে 'বিষময়' আবহাওয়ার মোকাবিলা করতে হয়। অবসর নেওয়ার কিছু দিন আগে ঠিক এই ভাষাতেই ভারত সরকারের সমালোচনা করলেন টাটা গোষ্ঠীর বিদায়ী কর্ণধার রতন টাটা।
সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ সংবাদপত্র ও টাটা গোষ্ঠীর একটি পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন রতন টাটা। তাঁর বক্তব্য, টাটা গোষ্ঠী অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের বাজারে বিনিয়োগ করতে কার্যত বাধ্য হচ্ছে। কারণ, দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের পথে বাধা অনেক। তাঁর মতে, মনমোহন সিংহ সরকার লাল ফিতের ফাঁস কাটানোর বিষয়ে বিশেষ কিছু করতে পারেনি। এখনও বড় প্রকল্পের অনুমোদন পেতে দশ বছরের মতো সময় লেগে যায়। টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধারের বক্তব্য, ভারতে একই আইন সম্পর্কে সরকারের এক এক সংস্থার ব্যাখ্যা এক এক রকম। কী করতে হবে তা নিয়ে মতান্তর প্রচুর। বেশিরভাগ দেশেই এই পরিস্থিতি দেখা দিলে বিনিয়োগকারীরা পিছু হটে যাবে। 
আগেও ভারতে ব্যবসা করার অসুবিধা নিয়ে মুখ খুলেছেন টাটা। ঘুষ দিতে না চাওয়ায় বিমান পরিবহণে বিনিয়োগ করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছিলেন এক বার। শিল্প সম্পর্কে ভারত সরকারের মনোভাবেরও আগেই সমালোচনা করেছেন তিনি। 
ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ির ব্র্যান্ড জাগুয়ার-ল্যান্ড রোভার কিনে তাক লাগিয়েছিলেন টাটা। সম্প্রতি চিনে ওই ব্র্যান্ডের গাড়ি তৈরির একটি কারখানা খুলেছেন তিনি। চিনা সরকার যে ভাবে শিল্পকে উৎসাহ দেয়, ভারতীয় সংস্থাগুলি সেই ধরনের উৎসাহ পেলে চিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামা যেতেই পারে বলে মনে করেন তিনি।
টাটার দাবি, ভারতে গোটা ব্যবস্থাটাই 'বিষময়'। সেই ব্যবস্থাকে তুষ্ট করতে পারলে তবে সহজে ব্যবসা করা যায়। ২৮ ডিসেম্বর টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন তিনি। দায়িত্ব নেবেন তাঁর উত্তরসূরি সাইরাস মিস্ত্রি। টাটার দাবি, তাঁদের শিল্পগোষ্ঠী কিছু নীতি মেনে চলে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে সেই নীতির কথা মাথায় রাখতে হবে সাইরাস ও তাঁর সহযোগীদের। নীতি থেকে সরে দাঁড়িয়ে আপস করার প্রলোভন আসবে।
ন্যানো নিয়ে কিছুটা হতাশ টাটা। তাঁর মতে, ওই গাড়ির সঙ্গে অনেক নেতিবাচক ধারণা জড়িয়ে গিয়েছে। তাই নতুন ভাবে বিপণন করা প্রয়োজন।
http://www.anandabazar.com/8bus1.html

রাজ্যের এমপিএস গ্রিনারি এ বার সেবির নজরে



এই সময়: বৃহস্পতিবারই ইংরাজি, বাংলা সব পত্রিকায় বেরিয়ে ছিল বিজ্ঞাপনটি৷ শেয়ার বাজারের নিয়ামক সংস্থা সেবির একটি বিজ্ঞাপন৷ তবে, সাহারা নিয়ে নয়৷ জনসচেতনী ওই বিজ্ঞাপনের লক্ষ্য এ রাজ্যের মেদিনীপুরে স্থাপিত এমপিএস গ্রিনারি ডেভেলপার্স৷ ওই সংস্থার 'কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমে' টাকা রাখতে সাধারণ মানুষকে মানা করে ওই বিজ্ঞাপন৷ 

একদিন পর, শুক্রবার, এমপিএস গ্রিনারি ডেভেলপার্সকে সমস্ত 'কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম' গুটিয়ে নিয়ে ওই প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগকারীদের লগ্নী এক মাসের মধ্যে ফেরত দিতে নির্দেশ পাঠাল সেবি৷ না হলে, সংস্থার কর্তৃপক্ষ এবং ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ 

'...এর মাধ্যমে এমপিএস গ্রিনারি ডেভেলপার্স লিমিটেডকে নির্দেশ দেওয়া হল সংস্থাটি যেন সমস্ত কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্প বন্ধ করে দেয় এবং ওই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে তোলা টাকা চুক্তি অনুযায়ী উপযুক্ত প্রতিদানসহ এই নির্দেশ পাওয়ার একমাসের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ফিরিয়ে দেয়৷' 

সেবি আরও জানিয়েছে, এমপিএস যদি এই নির্দেশ না মানে তবে সংস্থাটির এবং তার প্রোমোটার, ডিরেক্টর, ম্যানেজার এবং ব্যবসার দায়িত্বে থাকা সমস্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ 

এমপিএসের এই আধিকারিকেরা হলেন, প্রমথনাথ মান্না, শান্তনু চৌধুরী, অরূপকুমার রায় গুপ্তা, সুব্রত বাসু, প্রবীরকুমার চন্দ, মধুসূদন অধিকারী এবং সুকুমার ঘোষাল৷ 

সেবি বলেছে, বিনিয়োগকারীদের টাকা ফেরত না দেওয়া অবধি এই ব্যক্তিরা শেয়ার বাজারে কোনও রকম লেনদেন করতে পারবেন না৷ তাছাড়াও, এমপিএসের নামে পুলিসকে একটি মামলা দায়ের করতে বলা হবে ও কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রকেও বলা হবে যাতে সংস্থাটিক ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ 

১০ মার্চ ২০০০-এ 'কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম' শুরু করার লক্ষ্যে সেবির কাছে রেজিস্ট্রেশনের জন্য সেবির কাছে আবেদন করে এমপিএস৷ কিন্ত্ত, 'কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম' নিয়ে সেবি জারি নির্দেশিকা, বিজ্ঞন্তি এমপিএস মানছে না জানতে পেরে ৩ সেপ্টেম্বর ২০০২-এ ওই সংস্থাকে একটি নোটিশ পাঠায় সেবি৷ ওই নোটিশে বলা হয়, এমপিএস যেন সেবির নির্দেশিকা মেনে চলে, তাদের সমস্ত প্রকল্প গুটিয়ে ফেলে এবং বিনিয়োগকারীদের পাওনা মিটিয়ে দেয়৷ 

এর পর, এমপিএস রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় সেবি সংস্থাটিকে ২০০৯-এ সাময়িক রেজিস্ট্রেশন (প্রভিশনাল রেজিস্ট্রেশন) দেয়৷ ওই রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় অগস্ট ২০১১-য়৷ 

'এমপিএসের এই আইন মেনে না চলার বেপরোয়া মনোভাব' দেখে সেবি সংস্থাটিকে দ্বিতীয় নোটিশ পাঠায় এবং নির্দেশ দেয় কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমের মাধ্যমে তোলা বিনিয়োগকারীদের ১১৬৯.৩৯ কোটি টাকা কোনও ব্যাঙ্কে একটি 'এসক্রো' অ্যাকাউন্টে (যে অ্যাকাউন্টের টাকা অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করার জন্য তোলা যায় না) জমা রাখতে৷ 

সেবি শুক্রবার জানিয়েছে, 'সাময়িক রেজিস্ট্রেশনের শর্ত না মেনে কালেকটিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তোলা চালিয়ে গেছে এমপিএস৷ তাছাড়া, সংস্থাটি দ্বিতীয় নোটিশও মানেনি৷ 

এর আগে রোজ ভ্যালিকেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোনও রকম টাকা তুলতে মানা করে সেবি৷ 

বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর ডি সুব্বারাও রাজ্যে এই ধরণের সংস্থাগুলির বাড়-বাড়ন্তে বিশেষ চিন্তা ব্যক্ত করেন এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এই ধরণের বেআইনি টাকা তোলা বন্ধ করতে রাজ্য সরকারকে 'অ্যাকসন প্ল্যান' তৈরি করার পরামর্শ দেন৷ 

মায়ায় মজল শেয়ার বাজারও




পড়ছিলও৷ কিন্ত্ত, দুপুর দু'টো গড়াতেই মায়াতে মজল বাজার৷ রাজ্যসভায় বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী জানালেন, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগে তাঁর ও তাঁর দলের সায় না থাকলেও, এ বিষয়ে তাঁর দলের সাংসদরা সরকারের পক্ষেই ভোট দেবেন৷ 

ব্যস, এতেই বদলে গেল শেয়ার বাজারের গতিপ্রকৃতি৷ শুক্রবার খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ ইস্যুতে রাজ্যসভায় ভোট গ্রহণ এবং মায়াবতীর সাহায্যে প্রথম বাধাটা হয়ত সহজে টপকাতে পারবে সরকার৷ 

টেলিভিশনে সাক্ষাতকার দেওয়া বিশেষজ্ঞ মহাশয়ের মতো যাঁরা দিনের শুরুতে শেয়ার বেচে রেখেছিলেন এই ভেবে যে বাজার আরও নীচে নামলে তখন কমদামে শেয়ার কিনে মোটা মুনাফা ঘরে তুলবেন তাঁরা পড়লেন মহা ফাঁপরে৷ 

ঘড়িতে তখন তিনটে বেজে কুড়ি মিনিট৷ মায়ার মহিমায় সেনসেক্স ততক্ষণে ৩৩০ পয়েন্ট ঘুরে দিনের সর্বোচ্চ ১৯৫১৬.৮৬ পয়েন্টে গিয়ে দাঁড়িয়েছে৷ গত তিরিশ দিনে সেনসেক্স ১০০০ পয়েন্ট বেড়েছে৷ কিছু বিনিয়োগকারী তো লাভের টাকা ঘরে তুলবেনই৷ তাতেই দিনের শেষে ১৯৪৮৬.৮০ পয়েন্টে বন্ধ হল সেনসেক্স৷ বুধবারের মতো বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এদিনও ৮০০ কোটি টাকার লগ্নি করেছে শেয়ার বাজারে৷ অন্যদিকে, দেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা, যেমন ব্যাঙ্ক এবং বিমা সংস্থারা, ৬০০ কোটি টাকার বেশি বিক্রি করে৷ 

বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আশা এতটাই এদিন বেড়ে যায় যে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে ডলারের তুলনায় টাকার দাম বুধবারের চেয়ে আরও ৪০ পয়সা বাড়ে৷ বুধবার লোকসভায় ভোটাভুটিতে সরকারের জয়ের খবরে টাকার দাম ১৪ পয়সা বেড়েছিল৷ ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্কিং গ্রুপ ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোলের মতে, ভারতীয় মুদ্রার দাম খুব তাড়াতাড়ি ৫২ টাকা প্রতি ডলারে পৌঁছবে৷ 

বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে টাকার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের বাজারে সোনার দামও এদিন যথেষ্ট কমে৷ বৃহস্পতিবার কলকাতায় পাকা সোনার দাম প্রায় ৫০০ টাকা পড়ে যায়৷ 

খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে শুক্রবার রাজ্যসভায় ভোট৷ ইউপিএ সরকার ভোটে জিতলে শেয়ার বাজার আরও বাড়বে৷ মর্গান স্ট্যানলি, সিটি ব্যাঙ্ক, ডয়েচে ব্যাঙ্কের মতো সংস্থাগুলি মনে করে ডিসেম্বরেই সেনসেক্স ২০ হাজার পয়েন্ট পেরোতে পারে৷ গত কয়েকদিনের বাজারের ধরনের ইঙ্গিতও তেমনটাই৷ 


বাঙালির বিত্তসাধনা: সাহারা(ইন্ডিয়া)-র 'ইতি'কথা



শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় 

প্রায় তিন কোটি বিনিয়োগকারীরা কী সাহারা গোষ্টীর দুই সংস্থা, সাহারা ইন্ডিয়া রিয়েল এস্টেট কর্পোরেশন এবং সাহারা হাউজিং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন-এ রাখা টাকা শেষমেশ ফেরত পাবেন? কারণ, বুধবার এই বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পর সাহারার পক্ষ থেকে তাঁদের কৌঁসুলি, ডিএসকে লিগাল অ্যাডভোকেটস অ্যান্ড সলিসিটরস,-এর মারফত্‍ সংবাদমাধ্যমগুলিকে যে বিবৃতি পাঠানো হল তাতে বিনিয়োগকারীদের টাকা শীঘ্র ফেরত পাওয়া নিয়ে আশঙ্কা কিন্ত্ত রয়েই গেল৷ 

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ সাহারাকে নির্দেশ দেন ওই দুই সংস্থায় প্রায় তিন কোটি বিনিয়োগকারীর লগ্নী ১৫ শতাংশ সুদ সমেত ফেরত দিতে৷ সাহারার দুই সংস্থাকে তিম দফায় ওই টাকা ফেরত দিতে হবে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবিকে৷ সেবি ওই টাকা বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দেবে৷ যে ৫,১২০ কোটি টাকার পে-অর্ডার সাহারা সিকিওরিটিজ অ্যাপিলেট ট্রাইবুনালকে দিতে চেয়েছিল তা এক্ষুনি সেবির হাতে তুলে দিতে হবে৷ দ্বিতীয় দফায় ১০ হাজার কোটি টাকা আগামী জানুয়ারির প্রথম সন্তাহে দিতে হবে এবং বাকি টাকা দিতে হবে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সন্তাহের মধ্যে৷ 

কিন্ত্ত, এদিন সন্ধাবেলা সংবাদ মাধ্যমকে পাঠানো এক লিখিত বিবৃতিতে সাহারার পক্ষের কৌঁসুলি সতীশ কিষানচন্দানি বলেছেন, 'এখনও যে সমস্ত বিনিয়োগকারী টাকা পাননি, তাঁদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য সাহারা পুরো টাকাই দিতে চেয়েছিল৷ সেই জন্য সাহার দু'টি পে-অর্ডারও তৈরি করে রেখেছিল৷ বিধিবদ্ধ হিসাব পরীক্ষকের (স্ট্যাটুটরি অডিটর) সার্টিফিকেট অনুযায়ী, ২০১২-র নভেম্বর ৩০ অবধি ওই দুই সংস্থার মোট দায়বদ্ধতা (লগ্নীকারীদের প্রতি) কেবল ২,৬২০ কোটি টাকা৷ ৩০ নভেম্বর সাহারা ২৬২০ কোটি টাকার পে-অর্ডার এবং আরও ২,৫০০ কোটি টাকা দিতে চাওয়া হয়েছিল এই ভেবে যে সংস্থাগুলির তরফে কিছু পাওনাগণ্ডা মেলানোর হিসাব তখনও বাকি ছিল৷ যাইহোক, মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট সাহারাকে নির্দেশ দিয়েছেন সুদসহ ১৭,৪০০ কোটি টাকা দিতে৷ আজও (বুধবার) সাহারা ১৪,৭৮০ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি দেওয়ার জন্য প্রস্ত্তত ছিল৷ তাহলে, (১৪,৭৮০ কোটি ও ২,৬২০ কোটি) মোট ১৭,৪০০ কোটি টাকাই দেওয়া হয়ে যেত৷ সেবিকে এখন ৫১২০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা দু'দফায় দিতে হবে - ১০ হাজার কোটি টাকা ২০১৩-র জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ও বাকি ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে৷ যেহেতু, সাহারা অনেক বিনিয়োগকারীর টাকা ইতিমধ্যে মিটিয়ে দিয়েছে, তাই সেবিকে বিনিয়োগকারীদের বকেয়া পাওনা মিটিয়ে অতিরিক্ত টাকা থাকলে তা সাহারাকে ফেরত দিতে হবে৷ সাহারাকে বিনিয়োগকারীদের সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে এবং সেবিকে সেই তথ্য জমা নিতে হবে৷'
সাহারার দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে সেপ্টেম্বর ২০১১ থেকে এখন পর্যন্ত সাহারা বিনিয়োগকারীদের ২১,৪০৯ কোটি টাকা পাওনা মিটিয়ে দিয়েছে৷ এই হিসাব অবশ্য বুধবার সুপ্রিম কোর্ট মানতে রাজি হয় নি৷ প্রধান বিচারপতি কবীরকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ সাহারার কৌঁসুলি গোপাল সুব্র্যমনিয়ামকে বলেন, 'কেন আপনারা টাকার পরিমাণ বদলাতে চাইছেন? সাহারা কবে টাকা ফেরত দিতে পারব সেটা ছাড়া আর কোনও কিছু আদালত শুনতে রাজি নয়৷ আপনারা দয়া করে অন্য কোনও বিষয় টেনে আনবেন না৷ কত টাকা আপনাদের দিতে হবে সেটা প্রশ্ন নয়৷ আপনারা সেবিকে বিনিয়োগকারীদের সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করেননি৷ ভুল আপনাদের৷' বেঞ্চ এটাও পরিষ্কার করে দেন যে ৩১ অগস্ট এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সাহারাকে যে পরিমাণ টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে তা পরিবর্তন করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না৷ 

৩১ অগস্ট বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি জগদীশ সিং খেহারকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ সাহারাকে নির্দেশ দেন তারা যেন তিন মাসের মধ্যে (নভেম্বর ৩০, ২০১২) ১৭,৪০০ কোটি টাকা ১৫ শতাংশ সুদসমেত কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা করতে বলেন এবং সেই সঙ্গে তারা যদি ইতিমধ্যে কোনও টাকা বিনিয়োগকারীদের ফেরত দিতে থাকে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও যেন ১০ দিনের মধ্যে সেবির হাতে তুলে দেয় সত্যাসত্য পরীক্ষা করে দেখার জন্য৷ 
কিন্ত্ত বিনিয়োগকারীদের তথ্য দেওয়া নিয়েই যে আসল সমস্যা৷ সাহারার সংস্থা দু'টি সেবিকে প্রথমে কোনও তথ্য পাঠাতে অস্বীকার করে এই বলে যে শেয়ার বাজারে নথীভূক্ত না হওয়ার কারণে তারা সেবির নিয়ন্ত্রণাধীন নয়৷ পরে, কমপ্যাক্ট ডিস্কে সেই তথ্য পাঠালেও ওই সিডিগুলি ছিল পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড যাতে কোনওরকম তথ্য বিশ্লেষণ করা না যায়৷ পাসওয়ার্ড না পাওয়ার কারণে সেবির কোনও কাজে লাগেনি ওই সিডিগুলি৷ সফট কপির পরিবর্তে এর পর সাহারার সংস্থাদু'টি কয়েক ট্রাক ভর্তী কাগজের ফর্ম সেবির অফিসে পাঠায়৷ 

এর থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার, কোনও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের তথ্য শেয়ার করতে সাহারা সহজে সহযোগীতা করতে চায় না৷ বুধবার কিষানচন্দানির বিবৃতির পর (শেষ লাইনটি লক্ষ্য করুন) সেই আশঙ্কা আরও বাড়ে৷ ২০ ডিসেম্বর বিনিয়োগকারীদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য (যাদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে তাদেরও) সেবিকে দেওয়ার কথা সাহারার৷ 

তবে কী এবার বিনিয়োগকারীদের তথ্য নিয়ে আবার নতুন কোনও মামলা শুরু হবে যাতে টাকা দেওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে যায়? বিনিয়োগকারীদের পরিচয় গোপন রাখার এত চেষ্টাই বা কেন? কেন বারবার বিনিয়োগকারীদের ফেরত দেওয়ার টাকার পরিমাণ নিয়ে পরিবর্তন? 

পয়লা ডিসেম্বর শহরের বিভিন্ন সংবাদপত্রে দু'পাতা জুড়ে বিজ্ঞাপনে সাহারা জানালো যে তারা ইতিমধ্যে বিনিয়োগকারীদের ৩৩ হাজার কোটি টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে৷ কেবল ৫,১২০ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার বাকি আছে যা তারা দিয়ে দিতে চায়৷ 

বুধবার বলা হল বিনিয়োগকারীদের দেওয়া বাকি আছে ২,৬২০ টাকা (স্ট্যাটুটরি অডিটরের হিসাব মতো)৷


আপাতত হাজতবাস থেকে মুক্তি পেলেন রজত গুপ্ত

নিউ ইয়র্ক: জেলের মুখ আপাতত দেখতে হচ্ছে না রজত গুপ্তকে৷ ১ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে জেল হেফাজতের শাস্তি কাটিয়ে শর্তাধীন মুক্তি পেয়েছেন তিনি৷ জামিনে মুক্ত রজত গুপ্ত আপাতত জেলের বাইরে থেকেই ইনসাইডার ট্রেডিং মামলায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য লড়বেন৷ 

আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে রজত গুপ্তর জেল হেফাজত শুরু হওয়ার কথা ছিল৷ আমেরিকার সেকেণ্ড সার্কিট কোর্ট অফ আপিলে জেল হাজতের বিরুদ্ধে আবেদন করেন রজত গুপ্ত৷ মঙ্গলবার আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে৷ ১ কোটি মার্কিন ডলারের বন্ডের বিনিময়ে আপাতত জেলের বাইরে বসেই মামলা লড়বেন ওয়াল স্ট্রিটের ইনসাইডার রজত৷ 

রজতের জামিন না মঞ্জুরের জন্য আমেরিকার বিভিন্ন মহল থেকে আওয়াজ উঠেছিল৷ জামিন পেলে আমেরিকা ছেড়ে অন্য কোথাও পালিয়ে যেতে পারেন রজত, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছিল৷ কিন্ত্ত আপিল কোর্টের বিচারক হোসে ক্যাব্রানেস জানান, রজতকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্ত্ত সেই মুক্তির উপর নির্দিষ্ট কিছু শর্ত রয়েছে৷ রজতকে তাঁর পাসপোর্ট মার্কিন প্রশাসনের কাছে জমা রাখতে হবে৷ পাশাপাশি, তাঁর গতিবিধি ও পর্যটনের উপরও কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ আপিল কোর্টের রায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়ে কোর্টে উপস্থিত রজত গুন্তর স্ত্রী অনিতা ও চার মেয়ে৷ 

ইনসাইডার ট্রেডিং মামলায় দোষী রজত গুপ্তর দু'বছরের জেল ও ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা হয়েছিল৷ অক্টোবরে মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারপতি জেড র্যাকফ এই রায় দিয়েছিলেন৷ রজত গুপ্ত সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে উচ্চতর আদালতে যেতে চান৷ আগামী বছর এপ্রিলে রজত এই আবেদন দাখিল করতে পারেন৷ এবং সেই মামলা আরও এক বছর চলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ 

তবে আপিল কোর্টের রায় রজত গুপ্তকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে৷ গত বছর রজত গুপ্তর বিরুদ্ধে ওয়ালস্ট্রিটের বৃহত্তম ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের অভিযোগ ওঠে৷ গোল্ডম্যান স্যাক্সের অন্দরের খবর বন্ধু রাজারত্নমের কাছে পাচার করে, রাজারত্নমের সংস্থাকে লাভের মুখ দেখিয়েছেন রজত৷ এই অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন গোল্ডম্যান স্যাক্সের প্রাক্তন ডিরেক্টর রজত গুপ্ত৷ রজতের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনেন ম্যানহাটনের উচ্চমানের আইনজীবী ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রিত ভারারা৷ এ বছর জুনে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি৷ শাস্তি ঘোষণা হয় অক্টোবরে৷ 

২০০৮-এর ২৪ অক্টোবরে রেকর্ড হওয়া একটি টেপ মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট আদালতে রজতের বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহূত হয়৷ সিঙ্গাপুরের 'গ্যালিওন' ফান্ডের পোর্টফোলিও ম্যানেজার ডেভিড লাউয়ের সঙ্গে রাজারত্নমের কথোপকথন রেকর্ড করা ছিল তাতে৷ টেপে শোনা যায়, রাজারত্নম লাউকে বলছেন, ''গোল্ডম্যান স্যাক্সের একজন বোর্ড সদস্য আমায় জানিয়েছেন কাল ওদের (গোল্ডম্যান স্যাক্সের) শেয়ার দু'ডলার পড়বে৷'' 

রজতের দুই আইনজীবী- শেথ ওয়াক্সম্যান এবং গ্যারি নাফতালিস যুক্তি দেখিয়েছিলেন, কোনও টেপেই রজতের গলা কিন্ত্ত ধরা পড়েনি৷ তা ছাড়া লাউ নামক ব্যক্তিটি গোল্ডম্যানের শেয়ারে আদৌ বিনিয়োগ করেছিলেন কিনা তা কারও জানা নেই৷ সর্বোপরি 'গোল্ডম্যানের একজন বোর্ড সদস্য' বলতে রজতকেই বোঝানো হচ্ছে এর প্রমাণ কী? আর রাজারত্নম যে সত্যি কথা বলছেন তারই বা প্রমাণ কী? 

শেথ আরও বলেছিলেন, রাজারত্নমের সঙ্গে রজতের সম্পর্ক সাম্প্রতিককালে মোটেই ভাল ছিল না৷ এ বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য রজতের বড় মেয়ে গীতাঞ্জলীর সাক্ষ্য চেয়েছিলেন শেথ৷ কিন্ত্ত মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট সে আবেদন খারিজ করে দেয়৷ শেথ বলেছেন, ২০০৮-এর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে রজত তথ্য পাচার করেছেন বলে যে অভিযোগ উঠছে, তার আগেই কিন্ত্ত রাজারত্নমের সঙ্গে রজতের তেতো সম্পর্ক৷ কারণ রাজারত্নম তাঁকে ঠকাচ্ছেন, এই আঁচ পেয়েই রাজারত্নমের থেকে সরে আসেন রজত৷ এমনকী বড় মেয়ে গীতাঞ্জলীকে তিনি বলেন, ভোয়েজার ফান্ড থেকে টাকা তুলেছেন রাজারত্নম৷ সে ক্ষেত্রে শেথের যুক্তি ২০০৮-এর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে কিছুতেই রাজারত্নম কোনও সুবিধা দিতে পারেন না রজত৷ কারণ রজত তখনই জানতেন রাজারত্নম তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করছেন৷

No comments:

Post a Comment