Friday, December 21, 2012

বিগত দুদশক উদার অর্থনীতির দোসর যে উগ্রতম জাতীয়তাবাদ, যার জন্য শিখ নরসংহার, ভুপাল গ্যাস দুর্ঘটনা, বাবরি ধ্বংস, সংখ্যালঘু উত্পীড়ন, ডিজিটাল বায়োমেট্রিক নাগরিকত্ব, উপজাতি বসতিবহুল অন্চলসমূহের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধঘোষণা, ভারত মার্কিন পরমাণু চুক্তি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমেরিকা ইজরায়েলর যুদ্ধে ভারতের পার্টনরশিপ,তা বর্ণ হিন্দু মনুস্মৃতি ব্যবস্থাপনারই অঙ্গ এবং এই ব্যবস্থা বহিস্কৃত বহুজন বহুসংখ্যক সামাজের বিরুদ্ধে ।অতএব ভারতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদীর উত্থান এই রাজনীতিরই স্বাভাবিক নির্বিঘ্ন পরিণতি। ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ানো রাজনীতির এজেন্ডায় মোদীর বিরোধিতা ছিল না কোনও দিন।সেই অর্থে ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র শাসিত ভারতবর্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের অস্তিত্ব নোই আদৌ। নেই মানবাধিকার, নেই নাগরিক সম্প্রভুত্ব। নেই আইনের শাষন। গুজরাতের নির্বাচনে ভারতবর্ষের ভাগ্যলিপি লেখা হয়ে গেল তাই,মোদী প্রধানমন্ত্রী হোন বা না হোন, এই উগ্রতম জাতীযতাবাদ ও মুক্তবাজারের জয়জয়কারই ভবিতব্য। পলাশ বিশ্বাস http://basantipurtimes.blogspot.in/

  বিগত দুদশক উদার অর্থনীতির দোসর যে উগ্রতম জাতীয়তাবাদ, যার জন্য শিখ নরসংহার, ভুপাল গ্যাস দুর্ঘটনা, বাবরি ধ্বংস, সংখ্যালঘু উত্পীড়ন, ডিজিটাল বায়োমেট্রিক নাগরিকত্ব, উপজাতি বসতিবহুল অন্চলসমূহের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধঘোষণা, ভারত মার্কিন পরমাণু চুক্তি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমেরিকা ইজরায়েলর যুদ্ধে ভারতের পার্টনরশিপ,তা বর্ণ হিন্দু মনুস্মৃতি ব্যবস্থাপনারই অঙ্গ এবং এই ব্যবস্থা বহিস্কৃত বহুজন বহুসংখ্যক সামাজের বিরুদ্ধে ।অতএব ভারতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদীর উত্থান এই রাজনীতিরই স্বাভাবিক নির্বিঘ্ন পরিণতি। ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ানো রাজনীতির এজেন্ডায় মোদীর বিরোধিতা ছিল না কোনও দিন।সেই অর্থে ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র শাসিত ভারতবর্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের  অস্তিত্ব নোই আদৌ। নেই মানবাধিকার, নেই নাগরিক সম্প্রভুত্ব। নেই আইনের শাষন। গুজরাতের নির্বাচনে ভারতবর্ষের ভাগ্যলিপি লেখা হয়ে গেল তাই,মোদী প্রধানমন্ত্রী হোন বা না হোন, এই উগ্রতম জাতীযতাবাদ ও মুক্তবাজারের জয়জয়কারই ভবিতব্য

পলাশ বিশ্বাস


গুজরাতের মসনদে মোদীর হ্যাটট্রিক নিয়ে দেশ তোলপাড়। মোদী কি এবার রাজ্য জিতে দেশ জয়ে নামবেন তা নিয়েই চলল আলোচনা। উগ্রতম হিন্দু জাতীয়তাবাদের রাজপথে জাযনবাদী করপোরেট বিশ্ব ব্যবস্থার ক্ষমতা ভোগ করা যায়, কিন্তু ঔ পুঁজিবাদী উন্নয়ন ও বাজার অর্থনীতির পথিক নরেন্দ্র মোদীকে থামানো অসম্ভব।গুজরাত গণহত্যার অপরাধে অভিযুক্ত মোদীর এই জয় উগ্রতম জাতীয়তাবাদ ও মুক্ত বাজার অর্থনীতিরই জয়। এই পথে কর্তৃত্বের অন্তর্ভুক্ত রাজনীতিতে কংগ্রেস ও ইউপিএ জোট মোদীর প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রতিপক্ষ নয়।গুজরাতে জয় হয়েছে উগ্রতম জাতীয়তাবাদ ও জায়নবাদী মূক্ত বাজারের।কংগ্রেস বা ভারতীয় রাজনীতির মতাদর্শেরই বিজয়গাথা রচিত হল।মোদীকে আটকাতে হলে উগ্র জাতীয়তাবাদ ও মুক্ত বাজার অর্থনীতির বিরোধিতা করতে হয়।ভারতীয় রাজনীতিতে যা একেবারেই অসম্ভব। বিগত দুদশক উদার অর্থনীতির দোসর যে উগ্রতম জাতীয়তাবাদ, যার জন্য শিখ নরসংহার, ভুপাল গ্যাস দুর্ঘটনা, বাবরি ধ্বংস, সংখ্যালঘু উত্পীড়ন, ডিজিটাল বায়োমেট্রিক নাগরিকত্ব, উপজাতি বসতিবহুল অন্চলসমূহের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধঘোষণা, ভারত মার্কিন পরমাণু চুক্তি, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমেরিকা ইজরায়েলর যুদ্ধে ভারতের পার্টনরশিপ,তা বর্ণ হিন্দু মনুস্মৃতি ব্যবস্থাপনারই অঙ্গ এবং এই ব্যবস্থা বহিস্কৃত বহুজন বহুসংখ্যক সামাজের বিরুদ্ধে ।অতএব ভারতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদীর উত্থান এই রাজনীতিরই স্বাভাবিক নির্বিঘ্ন পরিণতি। ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আওড়ানো রাজনীতির এজেন্ডায় মোদীর বিরোধিতা ছিল না কোনও দিন।সেই অর্থে ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র শাসিত ভারতবর্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের  অস্তিত্ব নোই আদৌ। নেই মানবাধিকার, নেই নাগরিক সম্প্রভুত্ব। নেই আইনের শাষন। গুজরাতের নির্বাচনে ভারতবর্ষের ভাগ্যলিপি লেখা হয়ে গেল তাই,মোদী প্রধানমন্ত্রী হোন বা না হোন, এই উগ্রতম জাতীযতাবাদ ও মুক্তবাজারের জয়জয়কারই ভবিতব্য

জয়ের হ্যাটট্রিক গড়লেন নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতের মণিনগর বিধানসভা থেকে জয়ী হন নরেন্দ্র মোদী। গুজরাত পরিবর্তন পার্টির প্রার্থী শ্বেতা ভটকে ৮৬ হাজার ৩৭৩ ভোটে পরাস্ত করলেন নরেন্দ্র মোদী। গুজরাতের প্রান্তিক এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন গুজরাত মুখ্যমন্ত্রী। 

জয়ের পর মোদী টুইট করে জানিয়েছেন, "পেছনে তাকানোর প্রয়োজন নেই। অফুরন্ত শক্তি, ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।" 

 চ্যানেলে-চ্যানেলে গুজরাত নির্বাচনের আফটারএফেক্ট নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। রাজনৈতিক গবেষকরা বলছেন, বিজেপির কাছে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরা ছাড়া উপায় নেই। করপোরেট মীডিয়ার এই প্রচার করপোরেট সাম্রাজ্যবাদের অব্যর্থ রণকৌশল মার্কিন বাজারকেন্দ্রিক পুঁজিসর্বস্ব গণতন্ত্র যে উগ্রতম জাতীয়তাবাদেরই নামান্তর, আরব বসন্তে তা প্রমাণিত দক্ষিন এশিয়ায় সম্পূর্ম কর্তৃত্ত্ব অর্জন করতে হলে মোদীই সবার সেরা বাজি,বুঝে গেছে বিশ্বায়নের কর্তারা, সারা পশ্চম দুনিয়া  অন্তর্কলহ যতই তীব্র হোক, সংঘ পরিবার যে জায়নবাদী উগ্রতম ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদ নিয়ে মতাদর্শ তৈরি করে গোটা উপদেশে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ করেছে জন্মলগ্ন থেকেই, যার পরিণতিতে ভারত ভাগ, জনসংখ্যার নির্মম সমায়োজন, সেই মতাদর্শের নয়া অবতার নরেন্দ্রমোদী এবং এই বধস্থলে তিনিই বারত ভাগ্যবিধাতা 

ভোগ সংস্কৃতির ভুগোল নবধণাঢ্য  শহুরে অঞ্চলে যাকে পরিভাষায় বলে আরবান ভোটারদের মন জয় করে ফেলেছেন মোদী। শহরে প্রায় ৭০ শতাংশ অঞ্চলে জয় পেয়েছেন মোদী।উন্ন্য়নের করপোরেট পুঁজিরই সমর্থনে কৃষি নির্ভর জনগোষ্ঠীর মতামত রাজনীতির দিশা ও দশা ঠিক করবে না আর কনো দিন সমাজের উত্পাদক শক্তিগুলি বহিস্কৃত  সামাজিক শক্তিসমুহ এই নবধনাঢ্যদের পেশীশক্তি ও ধনবলের অধীন  মেধা ও চৈতণ্য ব্রাত্য 

গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর এই জয়কে রাজ্যের ৬ কোটি বাসিন্দার জয় বলে অ্যাখা দিলেন মোদী। মোদীকে অনেক বেশি বিনয়ী শোনাচ্ছে। বললেন, আমার ভুল হলে ক্ষমা করে দিন। নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে জানালেন, মাই গুজরাত স্লোগানের কথা। তাত্‍পর্যের কথা হিন্দিতে ভাষণ দেন মোদী। এটাকে জাতীয় রাজনীততে পা দেওয়ার ইঙ্গিত হিসাবেই দেখা হচ্ছে। 

১১৬ টা আসন জিতল বিজেপি। বড়দিনে শপথ নিতে চলেছেন মোদী এমনটাই খবর।

 নীতিন গড়করি জানালেন," মোদির নেতৃত্বে গুজরাট উন্নয়নের রাস্তায় এ ভাবেই এগিয়ে যাবে। রাজ্যবাসী উন্নয়নের রাজনীতির পক্ষে ভোট দিয়েছেন।"

মণীনগর কেন্দ্রে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর কংগ্রেস প্রার্থী শ্বেতা ভাটের বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদী জিতলেন ৮৬,৩৭৩ ভোটে। কেশুভাই প্যাটেলও নিজের কেন্দ্রে জিতলেন। মহাত্মা গাঁন্ধীর জন্মভূমি পোরবন্দরে কংগ্রেসের নিশ্চিত আসনে জয়ী বিজেপির প্রার্থী বাবু বোখিরিয়া। ন্যানোর জন্মস্থান সানন্দে কংগ্রেসের অবাক জয়। ২০০২ ভয়াবহ দাঙ্গার কেন্দ্রস্থলে গোধরায় জিতল বিজেপি। গতবার গোধরায় জিতেছিল কংগ্রেস।

এই সময়ের প্রতিবেদনঃ

 প্রত্যাশিত ভাবেই গুজরাটে ফের ক্ষমতা দখল করলেন নরেন্দ্র মোদী৷ এই নিয়ে পর পর তিন বার৷ তবে গতবারের চেয়ে জয়ের ব্যবধান বাড়াতে পারল না বিজেপি, বরং দু'টি আসন কম নিয়েই সন্ত্তষ্ট থাকতে হল নরেন্দ্র মোদীকে৷ ২০০৭-এর তুলনায় দু'টি আসন বেশি পেলেও টানা ১৭ বছর ক্ষমতায় থাকা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া তুলতে এ বারও ব্যর্থ কংগ্রেস৷ আর মোদীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে রাজনৈতিক অস্তিত্ব প্রায় ধুয়েমুছে গেল প্রবীণ নেতা কেশুভাই প্যাটেলের৷

ভোটে জয়লাভের পর নিজের প্রথম জনসভায় যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণভাবে মোদী জানিয়ে দিলেন, গোটা দেশের উন্নয়নকামী জনতার জয় হয়েছে গুজরাটের ভোটে৷ তাঁর দাবি, 'সরকার যদি সুশাসন, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা দিতে পারে তবে জনগণ কোনও ঘটনাই মনে রাখে না৷ সাম্প্রদায়িকতা ও প্রাদেশিকতাকে পিছনে ফেলে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ভোট দিয়েছেন গুজরাটের মানুষ৷' এই বিপুল জয়ের পর তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার হওয়া নিয়ে জল্পনাকেই মোদী এ ভাবে উস্কে দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷

১৮২ আসনের গুজরাট বিধানসভায় ১১৫টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি৷ গতবার ১১৭টি আসন পেলেও এ বার তার চাইতে দু'টি আসন কম পেতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে৷ কংগ্রেস গতবার পেয়েছিল ৫৯টি আসন, এ বার পেয়েছে ৬১টি আসন৷ কিন্ত্ত এই দু'টি আসন বেশি পাওয়াকেই নিজেদের নৈতিক জয় হিসেবে ঘোষণা করতে চেয়েছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা৷ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছেন, 'এই জয় কংগ্রেসের নৈতিক জয়৷ কারণ বিজেপিকে গত বারের চেয়ে একটি আসন কম পেতে বাধ্য করেছি আমরা৷' চিদম্বরমের এই কটাক্ষের জবাব দিয়েছে বিজেপি৷ মোদী বলেন, 'গুজরাটে আমার সরকারের এই হ্যাটট্রিক কংগ্রেসের সহ্য হচ্ছে না৷ গুজরাটের উন্নয়ন নিয়ে লাগাতার মিথ্যা প্রচার করেও কোনও লাভ হয়নি কংগ্রেসের৷ তবু লজ্জা নেই কংগ্রেস নেতাদের৷' কংগ্রেসকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদও৷ তিনি বলেন, 'অত্যন্ত কুরুচিকর প্রচার সত্ত্বেও নরেন্দ্রভাই সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন৷ পর পর তিনবার জয় সহজ কথা নয়৷'

বুথফেরত সমীক্ষার হিসেব অনুযায়ী গুজরাটে গতবছরের তুলনায় অন্তত ২০টি আসন বেশি পাওয়ার কথা ছিল মোদীর৷ সেই পূর্বাভাস মেলেনি৷ তবে উত্তর ও মধ্য গুজরাট, শহরাঞ্চলের পাশাপাশি সৌরাষ্ট্র ও দক্ষিণ গুজরাটের প্রায় সর্বত্রই ভাল ফল করেছে বিজেপি৷ একদা নিজের গড় সৌরাষ্ট্রে প্রায় কোনও ছাপই ফেলতে পারেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও গুজরাট পরিবর্তন পার্টির সভাপতি কেশুভাই প্যাটেল৷ মোট ১৬৩টি কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়ে মাত্র দু'টি আসন পেয়েছে জিপিপি৷ ভিসাভদার কেন্দ্রে কেশুভাই জিতলেও হেরে গিয়েছেন তাঁর ডান হাত ও ২০০২ সালে মোদীর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গোবর্ধন জাদাপিয়া৷ কেশুভাই যাদের উপর নির্ভর করেছিলেন সেই লেউভা প্যাটেলদের অধিকাংশ ভোটও এবার গিয়েছে বিজেপিরই ঝুলিতে৷ সৌরাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৩২টি আসন, গতবারের তুলনায় সাতটি আসন কম৷ সৌরাষ্ট্রে কংগ্রেস পেয়েছে ১৩টি আসন৷

এ দিনের ফলের পর ২২ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজ্য কংগ্রেসের ছন্নছাড়া দশা আরও স্পষ্ট হয়ে গেল৷ ভাবনগর কেন্দ্র থেকে হেরেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শক্তিসিন গোহিল এবং পোরবন্দর কেন্দ্র থেকে পরাজিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অর্জুন মোড়ওয়াদিয়া৷ আর এক কংগ্রেস নেতা শঙ্করসিন বাঘেলা কোনও রকমে জিতলেও হারের দায়িত্ব নিয়ে সভাপতির পদ ছেড়েছেন মোড়ওয়াদিয়া৷

মণিনগর কেন্দ্র থেকে বিপুল ব্যবধানে মোদী জিতলেও হেরে গিয়েছেন তাঁর পাঁচজন মন্ত্রী৷ তার মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ও কৃষিমন্ত্রীও৷ তবে মোদীকে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা দিয়েছে ন্যানোর আঁতুড়ঘর সানন্দে বিজেপির পরাজয়৷

"টাইম" জার্নাল নিজেদের পাঠকদের মধ্যে এক ইন্টারনেট মত গ্রহণের ব্যবস্থা করেছে, যেখানে চেষ্টা করা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ জন ব্যক্তি নির্ণয় করার. যদিও এই সব প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকা জার্নালের সম্পাদক বর্গ ঠিক করবেন ও প্রকাশ করা হবে ১৭ই এপ্রিল, তাও প্রাথমিক ভাবে ভোট দেওয়ার ফলাফল খুবই অবাক করার মতো হয়েছে. আর এই রকমের একটি প্রধান আচমকা ব্যাপার পক্ষ ও বিপক্ষের ভোটে আধুনিক ভারতের এক সবচেয়ে ব্যতিক্রমী রাজনীতিবিদ নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচন.

    এই ইন্টারনেট – মত গ্রহণের সামগ্রিক ফলকে মনে করা যেতে পারে এক ধরনের বিরুদ্ধ বাদী প্রতিক্রিয়া. সব কিছুতেই বিরোধ দেখা যাচ্ছে. সেটা যেমন ইন্টারনেটে আর্বিভূত লোকদের নেতৃত্বে আসার ব্যাপারে: প্রথম স্থানে হ্যাকার দল "অ্যানোনিমাস", দ্বিতীয় স্থানে – রেড্ডিট ইন্টারনেট সাইটের জেনারেল ডিরেক্টর, যিনি ইন্টারনেটে তথ্য বিনিময়ের বিষয়ে ও "পাইরেসী বিরোধী" আইনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশী সক্রিয় এরিক মার্টিন.

    আর বিশ্বের নেতৃস্থানীয় রাষ্ট্র গুলির নেতারা খুবই দুর্বল ফল করেছেন: ভ্লাদিমির পুতিন একাদশতম স্থানে, বারাক ওবামা – একবিংশতম, তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেঝেপ তৈপ এর্দোগান – সাতাশতম ইত্যাদি. অ্যাঞ্জেলা মেরকেল, ডেভিড ক্যামেরন, বেনিয়ামিন নাথানিয়াখু, নিকোল্যা সারকোজি এমনকি প্রথম পঞ্চাশের মধ্যে জায়গাই পান নি. আর এটাও লক্ষ্যণীয় হয়েছে যে, বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতায় থাকা নেতাদের চেয়ে বেশী ভাল ফল করেছেন.

    ভারতের ক্ষেত্রে খুবই স্পষ্ট ভাবে এই লক্ষণ দেখা গিয়েছে, এই কথা বলেছেন রাশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ বরিস ভলখোনস্কি:

"ভারতীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন গুজরাট ও বিহার রাজ্যের মুখ্য মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও নিতীশ কুমার, আর তাদের সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা অণ্ণা হাজারে. প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা সোনিয়া গান্ধী, আর এই সামান্য কয়েক দিন আগেও প্রধানমন্ত্রী পদে এক নম্বর প্রার্থী হতে পারে এমন রাহুল গান্ধীকেও এই তালিকায় দেখতে পাওয়া যায় নি, যাঁদের জনপ্রিয়তা জার্নালের মতে এখন তালিকার শতকের চেয়ে অনেক পিছিয়ে".

ভারত ও তার বাইরে তালিকার তৃতীয় স্থানে থাকা নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে অনেক ভোট পড়া খুবই সমালোচনার শিকার হয়েছিল. অনেক ক্ষেত্রেই এই ধরনের ফলাফলে সুযোগ করে দিয়েছে টাইম জার্নাল, যারা মার্চ মাসের একটি সংখ্যা একেবারে প্রথম পাতায় নরেন্দ্র মোদীর ছবি ছেপে তার সম্বন্ধে এক বিরাট প্রবন্ধ প্রকাশ করে তৈরী করে দিয়েছিল. মোদীর জন্য ভোট নেওয়ার শেষ দিনের আগেও অনেক পক্ষে ভোট ছিল, কিন্তু তার বিরোধীরা নিজেদের শক্তি সক্রিয় করতে সমর্থ হয়েছিল ও ফলে তার বিরুদ্ধে ভোটের সংখ্যা পক্ষের ভোটকে ছাপিয়ে গিয়েছিল. ভোট গ্রহণে এই ব্যক্তির চরিত্রের সমস্ত পারস্পরিক বিরুদ্ধ বিষয় প্রকট হয়েছে, এই কথা মনে করে বরিস ভলখোনস্কি বলেছেন:

"ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ২০১১- ২০১২ সালের আঞ্চলিক নির্বাচনগুলিতে খুবই বাজ ফল করার পরে, নরেন্দ্র মোদী, সেই লোক, যাকে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে একজন সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী বলে মনে করা হয়েছে, ভারতীয় জনতা পার্টির এক প্রভাবশালী নেতা বলে. এই সম্ভাবনা এক দল লোকের কাছে উত্সাহের কারণ হয়েছে, অন্যেরা তাতে ভয় পেয়েছেন.

নরেন্দ্র মোদীর পক্ষ নিয়ে কথা বলা হচ্ছে তার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শাসন কালে ভারতের এক অন্যতম পিছিয়ে পড়া রাজ্য গুজরাট অর্থনৈতিক ভাবে সবল হতে পেরেছে বলে. কিন্তু তার বিরুদ্ধে যুক্তিও কিছু কম নেই. ২০০২ সালে মুসলমান জনগনের উপরে বীভত্স হত্যা ও ধ্বংস লীলা করানোর পিছনে তার নামও জড়িত হয়ে রয়েছে. তখ এক চরমপন্থী মুসলমান দল তীর্থ থেকে ফেরা এক ট্রেন হিন্দু যাত্রী সহ ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল, তারপরে সারা রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছিল হানাহানি. ফলে নিহত ঘোষণা করা হয়েছে হাজার জনেরও বেশী আর এখনও ২০০ জনকে নিখোঁজ বলে মনে করা হয়েছে. মোদী এই সব রায়টে নিজের যোগদানের কথা অস্বীকার করেন, কিন্তু তার উগ্র পন্থী হিন্দুত্ব ও ভাষণের কথা সকলেই জানে. আর এটাই ভয়ের কারণ হয়েছে, যে এমনিতেই ভারতের বহু কষ্টে ধরে রাখা ধর্ম নিরপেক্ষ চরিত্র ও শান্তি ভঙ্গ হতে পারে, যদি মোদী কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় আসে".

মোদীর সরকারে আসার সম্ভাবনা সেই সমস্ত সমঝোতাকেও প্রশ্নের সামনে উপস্থিত করবে, যা এই রবিবারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারির মধ্যে করা হয়েছে. পাকিস্তান বিরোধী কথাবার্তা মোদীর প্রকাশ্য ভাষণে খুবই বেশী, যা দুই দেশের মধ্যে নতুন ধরনের বিরোধের উত্পত্তি করতে পারে. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার একাধিকবার মোদীকে তাদের দেশে যাওয়ার ভিসা দেন নি, এই ধরনের রাগ চট করে ভুলে যাওয়া হয় না.

সুতরাং "টাইম" জার্নালে নরেন্দ্র মোদীর প্রভাব শালীদের তালিকায় জায়গা হওয়া মোটেও কোনও আংশিক ব্যাপার নয়. আর তা শুধু একজন রাজনীতিবিদেরই ভাগ্য নির্ধারক হবে না, তার একটা সর্ব ভারতীয়, আঞ্চলিক এমনকি বিশ্ব মানের সমস্যাকেও ছুঁয়ে যায়.

হেরে বসে থাকা কংগ্রেসই 
অর্ধেক জিতিয়ে দিয়েছে মোদীকে

সুদীপ্ত বসু

২০শে ডিসেম্বর- 'গুজরাট অস্মিতা'র স্লোগান তার লক্ষ্য ছুঁয়েছে! এক ব্যক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরও রঙ পেয়েছে। নয়া উদারনীতির হুবহু অনুকরণে ভূগোল মেনে 'প্রাণবন্ত' গুজরাটের স্লোগানেও অন্তত পাঁচ বছরের জন্য সিলমোহর পড়েছে। তবুও গুজরাটে জুনাগড়ের শুখা খেত,আরাবল্লী পাহাড়ের কোলে 'নেই রাজ্যের' আদিবাসী জনপদ থেকে ঋণের দায়ে চাষ ছেড়ে দেওয়া রাজকোটের প্রত্যন্ত এলাকা, প্রাণহীন গুলবর্গা, নারোদা পাটিয়াও সমানভাবে উপস্থিত। তা সত্ত্বেও সবরমতীর পাড়ে বৃহস্পতিবারের বাস্তবতা হলো উগ্র হিন্দুত্বের আধুনিক গবেষণাগারে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেই পাঁচবছরের জন্য ফের ক্ষমতায় নরেন্দ্র মোদী।

কারও মতে এই জয় 'উন্নয়নের মোদী মডেলে'-র জয়। কারো মতে এই সাফল্য 'গুজরাট অস্মিতা'র জয়। তবে সব মতেরই অভিন্ন দিক হলো, বি জে পি নয়, এই জয় শুধুই বি জে পি'র প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদারের দৌড়ে থাকা 'নরেন্দ্র মোদীর জয়'।

গত ১৭ বছর ধরে গুজরাটে ক্ষমতার বাইরে কংগ্রেস। বিরোধী দলের চরম অপদার্থতা নরেন্দ্র মোদীর ১১ বছরের হাজারো ব্যর্থতাকেও ইস্যু করে তুলতে পারেনি। আমেদাবাদ শহর থেকেই প্রকাশিত স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক বিজয় ঠাকুরের স্পষ্ট মতামত, কংগ্রেস আত্মসমর্পণ করেছে উগ্র হিন্দুত্বের রাজনীতির কাছে। কংগ্রেসের আন্দোলনে অনীহা, সংখ্যাগুরুর সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতি আপসকামী মনোভাব সংখ্যালঘু মানুষকে আস্থা দেওয়া তো দূরের কথা থেকে বরং তাঁদের ফের ভা জ পা'র দিকেই যেতে বাধ্য করছে'। নির্বাচনের ফলাফলের বিশ্লেষণ তাই দেখাচ্ছে গুজরাটের ১৮২ আসনের একটিতেও মুসলিম প্রার্থী না দিয়ে সরাসরি সংখ্যালঘু মানুষের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করা 'ঔদ্ধত্য' দেখিয়েও জিতে গেছে মোদীর দল। 

আমেদাবাদের বাসিন্দা, সমাজকর্মী অধ্যাপক অচিন্ত্য যাগ্নিকের কথায়, 'ফলাফল যাই হোক এটাই বাস্তব যে আজও সংখ্যালঘুদের মূল ধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে অনীহা রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর। অন্তত ১৮২টি কেন্দ্র অ-মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার মধ্যেই তা স্পষ্ট। তবে এই নির্বাচনের মূল ইস্যু কিন্তু ছিল সেচের জল, গ্রামে বিদ্যুৎ, মানবোন্নয়নের সূচকে পিছিয়ে পড়া গুজরাট। যদিও সে সুবিধা নিতেই পারলো না কংগ্রেস।'

গুজরাটে নির্বাচনী প্রচারের একাধিক প্রান্তে ঘোরার অভিজ্ঞতাও তাই। কংগ্রেসের দিল্লির নেতারা নিজেদের পিঠ চাপড়ানির জন্য গতবারের চেয়ে বি জে পি'র মাত্র তিনটে আসন কমে যাওয়াকে সাফল্যের সূচক হিসাবে ধরতেই পারেন। তবে সৌরাষ্ট্র থেকে দক্ষিণ গুজরাট, আমেদাবাদ, গান্ধীনগর, সুরাটের মত শিল্প এলাকা থেকে মধ্য গুজরাট- বি জে পি ঝড়ে এলোমেলো হয়েছে কংগ্রেস। কেন? এই সৌরাষ্ট্রেই চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন। শুখা মরসুম ঘোষণা করেও সরকারের ন্যূনতম সাহায্য না পেয়ে ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়েছে লক্ষাধিক কৃষক। ১০বছর ধরে বিদ্যুতের আবেদন চেয়েও এক লক্ষ কৃষক তা পাননি। কমেছে ফসল উৎপাদন। আশ্চর্যের এই একটি বিষয়ও হয়ে ওঠেনি কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রচারের মূল ইস্যু। তাহলে কী করেছে কংগ্রেস? সৌরাষ্ট্রে কংগ্রেস তাকিয়ে ছিলো বিক্ষুব্ধ হয়ে বি জে পি থেকে বেরিয়ে যাওয়া কেশুভাই প্যাটেলের নতুন দলের দিকে। সংখ্যালঘু মহল্লায় আস্থা জোগানো তো দূরের কথা বরং ৯ শতাংশের মুসলিম জনগণ নাকি হিন্দুদের ভোট, কোন্‌ কৌশল নেবে কংগ্রেস তা ঠিক করতেই সময় পেরিয়ে গেছে। রাজ্যের মহিলা, সদ্যোজাত শিশুর শারীরিক অবস্থা, অপুষ্টির যে নিদারুণ চিত্র ২০১১ সালের মানবোন্নয়ন রিপোর্টে ফুটে উঠেছে তা নিয়ে কংগ্রেসের কোন আন্দোলন, কোন ধরনার কথা শোনা গেছে? 

বরং নির্বাচনে এক সপ্তাহ আগেই খোদ প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তর ব্যস্ত ছিল দলছুট নরহরি আমিনের বিক্ষোভ ঠেকাতে। প্রদেশ দপ্তরে বসেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অর্জুন মোধাওয়াদিয়ার বক্তব্য ছিল, ' নরেন্দ্র মোদী বেকায়দায়। সোনিয়াজী, রাহুলজী প্রচারে আসছেন। কেশুভাই প্যাটলও ফ্যাক্টর'। খোদ প্রদেশ সভাপতিসহ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শক্তিসিনহ গোহিলও ভোটে হেরে বসে আছেন। কংগ্রেস যখন খুঁজছে ফ্যাক্টর, নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী প্রচারে তখন উগ্র জাত্যভিমান নির্মাণের চেষ্টা। আমেদাবাদ শহরে নরেন্দ্র মোদীর থ্রিডি প্রচার শুনেছি। কি ভয়ঙ্কর দক্ষতায় সূক্ষ সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছিলেন উগ্র স্বাভিমানকে। তাঁকে ভোট দেওয়া মানে নাকি গুজরাটকে ভোট দেওয়া । আবার শেষ লগ্নের প্রচারে বদোদরায় হিয়ে মঞ্চে ইরফান পাঠানকে নিয়ে আসা, কচ্ছের সীমানায় পাকিস্তান জুজু- একেবারে নগ্নভাবেই এসেছে উগ্রতা। সবই হয়েছে সময় মেপে, আমেরিকান পি আর ও সংস্থার শেখানোর ভঙ্গিতেই। এখানেই একেবারে হেরে বসেছিল কংগ্রেস। জেতার খিদেও চোখে পড়েনি। হিসাব বলছে প্রায় ২০টির মত আসনে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মুখে পড়তে হয়েছে কংগ্রেসকে। জামালপুরে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীকে বোঝাতে এসেছিলেন স্বয়ং আহমেদ প্যাটেল। পারেননি। শেষমেশ ঐ আসন ঘরে তুলেছে বি জে পি। আবার সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের ফলাফল দেখিয়েছে লেওবা প্যাটেল সম্প্রদায়ের ভোট পুরোপুরি কাড়তে পারেননি কেশুভাই প্যাটেল। মাত্র দুটি আসন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। কড়কা প্যাটেলের পাশাপাশি লেওবা প্যাটেলের সিংহভাগ ভোট উলটে গেছে বি জে পি শিবিরেই। শুধুমাত্র উত্তর গুজরাটেই পায়ের তলায় জমি ধরে রাখতে পেরেছে কংগ্রেস।

তবে এটাও বাস্তব মোদীর মন্ত্রিসভার পাঁচ মন্ত্রী হেরেছেন। বিজেপি'র প্রাপ্ত ভোট ৫০ শতাংশ ছাড়ায়নি। অর্থাৎ গুজরাটবাসীর দু-হাত তোলা অকুণ্ঠ সমর্থন মিলেছে তা নয়। সদ্ভাবনার মাটিতে আশঙ্কা আছে, আছে বিস্তর বৈষম্য, আছে উদারনীতির ১০০ শতাংশ প্রয়োগ, আছে গরিবের উদ্বেগ। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী যেভাবে সার্বিক ‌আধিপত্য কায়েম করে বসে আছেন, সেই বাতাবরণে অসন্তোষকে রাজনৈতিক চেহারা দিতে পারছে না বিরোধীরা। 

আক্রান্তকে আক্রমণকারীর আশ্বাস দেওয়ার মাঝেই এই গবেষণাগারের যে নতুন রাসয়ন লুকিয়ে আছে তাতেই আবার বাজিমাত করেছেন মোদী।

http://ganashakti.com/bengali/news_details.php?newsid=33675


মোদীর হ্যাটট্রিক, এবার প্রধানমন্ত্রী পদে? জল্পনা

ব্যুরো রিপোর্ট, এবিপি আনন্দ

hursday, 20 December 2012


আমেদাবাদ ও নয়াদিল্লি: বারবার তিন বার৷ হ্যাটট্রিক করলেন নরেন্দ্র মোদি৷ মণিনগর আস্থা রাখল তাঁর ওপরই৷সাসপেন্ড হওয়া আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভট্টর স্ত্রী শ্বেতা ভট্টকে মোদীর বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নামিয়ে চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কংগ্রেস৷ কিন্তু মোদী ম্যাজিকের কাছে সব চমকই ফিকে হয়ে গেল৷ শ্বেতাকে ৮৬ হাজার ৩৭৩ ভোটে হারিয়ে কতৃর্ত্ব বহাল রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী তিনি পেলেন। পেলেন ১ লক্ষ ২০ হাজার ৪৭০ ভোট৷ শ্বেতার প্রাপ্ত ভোট ৩৪ হাজার ৯৭৷ ২০০৭ এর বিধানসভা ভোটে মোদির জয়ের মার্জিন ছিল ৮৭ হাজার৷ এবার সামান্য মার্জিন কমেছে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও মোদী বুঝিয়ে দিয়েছেন, এবার তাঁর টার্গেট নয়াদিল্লি। গুজরাত নির্বাচনে কংগ্রেসের স্লোগান ছিল 'দশা বদলান, দিশা বদলান'৷ কংগ্রেস নিজেদের লক্ষ্য বা হাল কোনওটাই বদলাতে না পারলেও তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফেরার পর বিজয়ী ভাষণে মোদী  স্পষ্ট করে দিলেন, আমদাবাদ বিজয়ের পর এবার তাঁর লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রীর পর প্রধানমন্ত্রীর পদ৷ নরেন্দ্র মোদীর গোটা ভাষণে বারবার উঠে এল সুশাসন-উন্নয়ন, দেশ ও দেশের মানুষের কথা৷ গুজরাতের জয়কে দেশের জয়ের সঙ্গে যুক্ত করতে চেয়েছেন তিনি৷ তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রচারে গুজরাতিকেই বেশি প্রাধান্য দিলেও বিজয়ী ভাষণটা হিন্দিতেই দেন মোদী৷ আর মোদী যখন ভাষণ দিচ্ছেন, তখন উপস্থিত জনসমুদ্র থেকে উঠে এসেছে পি এম, পি এম ধ্বনি৷
প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদারি প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বললেও সমর্থকদের মুড বুঝে মোদীও হাল্কা চালিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, দিল্লি যেতে তিনি প্রস্তুত৷ এক দিন কে লিয়ে ২৭ তারিখ দিল্লি হো কে .......এবার তাঁদের প্রত্যাশা একটাই, মুখ্যমন্ত্রী থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীর উত্তরণ।আজকের ফলাফলের অন্যতম তাতপর্য হল, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রইলেন গুজরাতের শিল্পায়নের পোস্টার বয়৷খোদ রাজধানীর বুকে বিজেপি সদর দফতরে নরেন্দ্র মোদী জিন্দাবাদ ধ্বনি উঠেছে। মণিনগরে বড় ব্যবধানে তাঁর জয়ের পরই দিনভর জল্পনা চলে, এবার কি তবে জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে আসছেন মোদী? ২০১৪-র সাধারণ নির্বাচনে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলে ঘোষণা করে এগিয়ে দেবে বিজেপি?এই জল্পনা নতুন মাত্রা পায় স্বয়ং  মোদীর এক মন্তব্যে।শ্বেতা ভট্টকে বিপুল ভোটে হারিয়ে উতফুল্ল মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটারে লেখেন, আর পিছনে ফিরে তাকানো নয়, এবার সামনের দিকে এগিয়ে চলার সময়। আমাদের অফুরন্ত শক্তি, উদ্যম, অসীম সাহস, ধৈর্য আছে। একথা বলে কি মোদী প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নামার বাসনাই প্রকাশ করলেন, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এনিয়ে জল্পনা শুরু করে দেন। 
তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে মোদী তাঁর দীর্ঘ ভাষণে একবারও বিজেপির কোনও বড় নেতার নামের উল্লেখ করেননি৷ বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির শীর্ষ নয়, ব্র্যান্ড মোদীই এখন সব৷ সেইসঙ্গে তাঁর সমালোচকদেরও এদিন একহাত নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী৷আর মোদীর হ্যাট্রিকের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সামনেও যে প্রশ্ন আরও জোরালো হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হল, এবার মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রজেক্ট না করে আর অন্য কোনও উপায় কি তাঁদের কাছে আছে? মোদীর প্রশংসা করলেও এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু বৃহস্পতিবার দিনভর এড়িয়ে গিয়েছেন বিজেপি নেতারা৷দলের মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদের কথায়, রাজ্য ও আন্তর্জাতিক স্তরে সব রকমের কুতসার বিরুদ্ধে লড়ে নরেন্দ্র মোদী সাফল্য পেলেন। এত জাতপাতের ভেদাভেদ মুছে গোটা গুজরাতের সর্বস্তরের মানুষের নেতা হিসাবে উঠে এলেন, এই সাফল্যের সুখ- আনন্দটা আমাদের উপভোগ করতে দিন! স্মৃতি ইরানি বলেন, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন বহু সাংবাদিক, তা সত্ত্বেও এই বিপুল জয় পেলেন উনি আর তাঁর দল! দশ বছর ধরে ভালভাবে সরকার চালিয়েছেন মোদী, তাই তাঁকে ফিরিয়ে এনেছে রাজ্যের মানুষ৷ বিজেপি নেতা রাজীব প্রতাপ রুডি,  নীতীন গডকড়ী সকলেই মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।কিন্তু মোদীকে সামনে রেখেই কি বিজেপি-এনডিএ ২০১৪-র ভোটে যাচ্ছে, এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই।মোদীই ২০১৪-র মুখ, এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে রবিশঙ্কর বলেন, মোদীভাই সবসময়ই বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা।তাছাড়া আমরা তো পরিবারতান্ত্রিক দল নই। কোনও যুবরাজ আমাদের দল চালান না! আমরা খাঁটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে সিদ্ধান্ত নিই। 
কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীকে কটাক্ষ করে তিনি প্রশ্নের জবাব এড়ালেও রাজনৈতিক মহলের অনুমান, এবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদীকে মুখ বলে তোলা হবে কিনা, সেই প্রশ্নে দল ও এনডিএ জোটে প্রবল মতপার্থক্যের ঝড়ের সম্মুখীন হতে পারে বিজেপি। মোদী গুজরাত দখলে রাখলেও তাঁর দিল্লি যাত্রা যে সহজ হবে না, তা এদিন এনডিএ শরিক জনতা দল ইউনাইটেডের কথা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ মোদী তাঁর জয়কে দেশের জয় বলে অভিহিত করলেও নীতিশ কুমারের দল কিন্তু বুঝিয়ে দিয়েছে তারা তা মানতে রাজি নয়৷ তবে, সব মিলিয়ে গুজরাতের এই ফলাফল যে জাতীয় রাজনীতিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলল সে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই ওয়াকিবহাল মহলের৷

গুজরাতে 'মুসলিম গণহত্যা' মামলার রায়ঃ বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী-সহ ৩২ জন দোষী সাব্যস্ত
india_gujrat_riots_2002.jpg

ইউকেবেঙ্গলি - ২৯ অগাস্ট ২০১২, বুধবারঃ ২০০২ সালে ভারতের গুজরাতে সঙ্ঘটিত মুসলিম গণহত্যা মামলার রায় প্রকাশ হয়েছে আজ। সহায়-হীন নারী ও শিশু-সহ  অন্ততঃ ৯৭ জন ব্যাক্তিকে হত্যা দায়ে প্রাক্তন নারী ও শিশু উন্নয়ণ মন্ত্রী মায়া কোড়নানি-সহ আরো ৩১ জন ব্যাক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। আগামী শুক্রবার দোষীদের কার কী শাস্তি হবে সে-ঘোষণা দেয়া হবে।

দোষী নিশ্চিত হওয়াদের মধ্যে মৌলবাদী দল হিন্দু পরিষদের যুব-সংগঠন 'বজরঙ্গী দল'-এর গুজরাত শাখার নেতা কুখ্যাত বাবু বজরঙ্গীও রয়েছেন। তিনি এ-গণহত্যা সংগঠিত করতে সবিশেষ ভূমিকা রাখেন এবং এর জন্য গর্বিত বলে দাবি করেন। তাঁর বক্তব্য, 'একটি মুসলমান দোকান বা ঘরও বাদ রাখিনি, সব পুড়িয়ে দিয়েছি। পুড়িয়েছি কারণ (মুসলমান) হারামজাদারা (মরার পর) পুড়তে চায় না, ভয় পায়'। এ-মামলায় তাঁর ফাঁসি হলেও তিনি আনন্দিতই হবেন বলে অরুন্ধতী রায়ের কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন। তবে তাঁর ইচ্ছা সে-ক্ষেত্রে শেষবারের মতো তাঁকে যেন দু'টো দিন সময় দেয়া হয় - তিনি আরও ২৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ মুসলমান হত্যা করতে চান।

২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী একটি রেইল-গাড়ীতে আগুন লেগে ৫৮ জন হিন্দু নাগরিক প্রাণ হারান। ঘটনার সঙ্গে-সঙ্গে গুজরাতে ক্ষমতাসীন ভারতের জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল বিজেপি ও অন্যান্য হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনগুলো একে 'মুসলমান গুণ্ডাদের কাজ' বলে অভিহিত করে। পরবর্তীতে উমেশ চন্দ্র ব্যানার্জী কমিটীর অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে যে, এটি ছিল নিছক একটি দুর্ঘটনা। বাবু বজরঙ্গী দ্রুত গুজরাতে হিন্দু মৌলবাদীদেরকে সংগঠিত করে নারোড়া পাতিয়া এলাকায় পরিকল্পিতভাবে মুসলমান বসত-বাড়ি ও ব্যবসা-কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালিয়ে বহু মানুষ হত্যা করেন। ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন-সহ একাধিক সংগঠনের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি'র রাজ্য-সরকারের বিরুদ্ধে জান-মাল-মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হওয়া এবং কোন-কোন ক্ষেত্রে সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগ এনেছে।

দোষী কোড়নানি ২০০৭ সালে রাজ্য সরকারের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী হন। কিন্তু ২০০৯ সালে গুজরাত দাঙ্গার মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হলে তিনি পদত্যাগ করেন - সে-বছরই তিনি জামিনে মুক্ত হন। পুলিস, চিকিৎসক, প্রত্যক্ষ্যদর্শী, সরকারী কর্মী ইত্যাকার ৩২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য যাচাই শেষে আদালত ভারতীয় পেনাল কৌডের ৩০২ ও ১২০ (বি) ধারায় অভিযুক্তদেরকে দোষ নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে বজরঙ্গীকে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্যান্যদের বেশিরভাগকেই যাবৎজীবন কারাদণ্ড প্রদান হবে।

http://portal.ukbengali.com/news/%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AE-%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%83-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A6%B9-%E0%A7%A9%E0%A7%A8-%E0%A6%9C%E0%A6%A8-%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%B7%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4


কেবল গুজরাত কেন?

'অধিকাংশ শিক্ষিত বাঙালিও সাম্প্রদায়িক। আমাদের রাজনীতির ধরন হল, পদে পদে মনে করিয়ে দেওয়া যে হিন্দু আর মুসলমান পরস্পরের 'আদার'। ব্রিটিশের তৈরি ভ্রান্ত ইতিহাসকে এই ভাবেই আমরা ঘাড়ে বয়ে চলি।'

গৌতম চক্রবর্তী 
কলকাতা, ১৮ ডিসেম্বর ২০১২

tapan roy chowdhury

ইতিহাসবিদ তপন রায়চৌধুরী।ছবি- নিজস্ব চিত্র।

ভারতীয় গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা আর দুর্নীতি তাকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। নাগরিকদের সুখদুঃখের চেতনাও সামরিক বুটের চাপে পিষ্ট। ''কাশ্মীরে ভারতীয় সেনা প্রায় ৮৫ হাজার তরুণতরুণীকে খতম করে দিয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরামেও সামরিক বাহিনীর হাতে শেষ হয়ে যাওয়া নাগরিকের সংখ্যা অক্লেশে কাশ্মীরের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। এ সবের পরও দুনিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্রের বাসিন্দা হিসেবে আমরা গর্ব করব?'' সম্প্রতি বেঙ্গল ক্লাবে 'ভারতীয় রাজনীতির ধারা' নিয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রশ্ন তুললেন ইতিহাসবিদ তপন রায়চৌধুরী।
কিন্তু জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা তো বরাবরই ভারতীয় সমাজের ক্যান্সার হয়ে রয়েছে! অনুষ্ঠানের পর এক আড্ডায় সংশয় জানিয়েছিলাম। তপনবাবু সটান নাকচ করে দিলেন, "হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতা ব্রিটিশদের সৃষ্টি। ওঁদের আগে সাম্প্রদায়িকতার এই বিষবৃক্ষ ডালপালা মেলেনি।"
পুরো দায় ইংরেজ শাসকদের ঘাড়ে এ ভাবে চাপিয়ে দেওয়া চায়? মধ্যযুগেও তো হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হত। ঔরংজেবের হিন্দুবিদ্বেষ, জোর করে ধর্মান্তরকরণ, হিন্দু মন্দির ভাঙচুর করা ভুলে যেতে হবে? ইতিহাসবিদের যুক্তি, "জোর করে ধর্মান্তরকরণের কিছু ঘটনা হয়েছিল। সেটা ভয় দেখাতে, প্রজাদের রাজশক্তির তাঁবে রাখতে। মুসলমান শাসকরা এক-আধ বছর রাজত্ব করেননি। প্রথমে পাঠান, তার পর মুঘল। এই কয়েকশো বছর যদি শাসকেরা শুধুই প্রজাদের ধর্মান্তর করতেন, দেশে হিন্দু থাকত না। সবাই মুসলমান হয়ে যেত!"
ঔরংজেবের হিন্দুবিদ্বেষের কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন যদুনাথ সরকারের ছাত্র, "আমরা খেয়াল রাখি না, তারকেশ্বর মন্দিরের জমিটা খোদ ঔরংজেবের দেওয়া। হিন্দু মন্দির ধ্বংস করব বলেই ঔরংজেব রাস্তায় নামেননি। প্রতিটি ধ্বংসের পিছনে আলাদা কারণ ছিল। কখনও ভেবেছেন, এই মন্দির ধ্বংস করলে রাজপুতরা বাড়াবাড়ি করবে না। কখনও ভেবেছেন, ওই মন্দির গুঁড়িয়ে দিলে বুন্দেলা রাজারা তাঁর পথে কাঁটা হবেন না। আমদাবাদের শাসক জোর করে ধর্মান্তরকরণ ঘটিয়েছিলেন। শ্রেষ্ঠী এবং বণিকেরা তার প্রতিবাদ করেছিলেন। অর্থনীতির দায়ে মুঘল সম্রাট ওই শাসককে সরিয়ে দেন।
কিন্তু মধ্যযুগেও দাঙ্গা হত যে! তপনবাবু উড়িয়ে দিলেন: মুঘল আমলে চার-পাঁচটার বেশি সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা পাবেন না। এবং তার একটাও 'কাফেরদের মারতে হবে' মার্কা ইস্যুতে শুরু হয়নি। সবই প্রকাশ্য রাস্তায় গরু জবাই করা গোছের তুচ্ছ ইস্যুতে।
হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িকতার ধারণাটা তা হলে এল কোথা থেকে? ইউরোপের ইতিহাসে বারংবার ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে হানাহানি। কখনও রোমানরা খ্রিস্টানদের ওপর অত্যাচার করছে, কখনও খ্রিস্টানরা ইহুদিদের ওপরে। কখনও জেরুজালেম মুক্ত করতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড। কখনও ক্যাথলিক-প্রোটেস্টান্ট হানাহানি। "টলারেন্স' কথাটায় ভারতবর্ষ ছাড়া কেউ বিশ্বাস রাখেনি," বলছিলেন তপনবাবু।
ইতিহাসের সেই অভিজ্ঞতা থেকেই ব্রিটিশদের ভারত শাসন। ফলে তাদের মনে হয়েছিল, হিন্দু এবং মুসলিম দুই আলাদা সম্প্রদায়। এদের মধ্যে বৈরিতা থাকবেই। কিন্তু বিশ শতকের শুরুতেও ভারতীয় অভিজ্ঞতা অন্য রকম। অক্সফোর্ডে তপনবাবুর প্রতিবেশী, প্রয়াত নীরদচন্দ্র চৌধুরী তাঁর ছেলেবেলায় দুর্গাপুজোয় বলিদানের অভিজ্ঞতা লিখেছিলেন। পাঁঠাগুলি বলির আগে যত জোরে 'ম্যা ম্যা' চিৎকার করত, মুসলমান বাজনদারেরাও তত জোরে বাদ্যি বাজাত। হিন্দুর পুজোয় মুসলমানরাও যোগ দিতেন! ছোঁয়াছুঁয়ি ছিল, কিন্তু তা শুধু হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে নয়, হিন্দুসমাজের বিভিন্ন স্তরে। নীরদবাবুকেই তাঁর গুরুজনেরা এক বার বকেছিলেন, "সতীশ দে-কে ফরাসে বসিয়েছিস?" বাড়ির ভাণ্ডারীর নাতি সতীশকে ফরাসে নয়, পিঁড়িতে বসানো উচিত।
ব্রিটিশ ক্ষমতার ওই ভ্রান্ত 'পারসেপশন' ক্রমে বদ্ধমূল হয়ে গেল। জিন্না পাকিস্তান চেয়েছিলেন, কিন্তু ১৯৪৬ সালের আগে পাকিস্তান ধারণাটি স্পষ্ট ছিল না। "ছোটবেলায় স্লোগান শুনেছি, দেশকে নাম হিন্দুস্থান/ উসকা অন্দর পাকিস্তান"। ভ্রান্ত ইতিহাসবোধের বশবর্তী হয়েই গোলওয়ালকর, আর এস এস এবং হিন্দুত্ববাদের রমরমা। হিন্দুদের অধীনে মুসলমানদের থাকতে হবে, এ রকমটাই ছিল গোলওয়ালকরের দর্শন। স্বাধীনতার পর রাজেশ্বর দয়াল উত্তরপ্রদেশ সরকারের সচিব। আত্মজীবনীতে তিনি জানিয়েছেন, গোলওয়ালকরের ঘরে পুলিশি তল্লাশি চালিয়ে একটি মানচিত্র উদ্ধার হয়েছিল। রাজ্যের মুসলিম গ্রামগুলির মানচিত্র। গোলওয়ালকর গ্রামগুলিতে লুঠতরাজ ও গণহত্যার ছক কষেছিলেন। দয়াল তখনই তাঁকে গ্রেফতারের অনুমতি চান, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী গোবিন্দবল্লভ পন্থ নানা টালবাহানায় এক মাস কাটিয়ে দেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা বেরোলে দেখা গেল, গোলওয়ালকর পগার পার। কয়েক দিন পর নাথুরাম গডসের হাতে গাঁধীহত্যা। তপনবাবুর বক্তব্য, গোলওয়ালকরকে ঠিক সময়ে ধরলে আজ সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ এ ভাবে মাত্রা ছাড়াত না।
কিন্তু বিদ্বেষের ইতিহাসকে গুরুত্ব দিয়ে লাভ? গোধরা গণহত্যার পরও নরেন্দ্র মোদী ভোটে জিতেছেন, গুজরাতে উন্নয়নের সুপবন বইয়ে দিয়েছেন। মানুষ তাঁকে উন্নয়নের কাণ্ডারী ভাবেন বলেই ভোট দেন! "প্রোপাগান্ডা! গুজরাতে ধনী-গরিব ফারাক অন্য রাজ্যের চেয়ে বেশি, প্রায় ৩২ শতাংশ গরিব। উন্নয়নের জন্য নয়, মুসলিম-বিদ্বেষের কারণেই হিন্দুরা মোদীকে ত্রাতা মনে করে।" শুধু গুজরাত কেন? অধিকাংশ বাঙালি হিন্দুর মনেও রয়েছে এই সাম্প্রদায়িক চেতনা। "সকালে লেকের ধারে হাঁটতে যাই। বেঞ্চে বেশির ভাগ মানুষের মুখে শুনি একই আলোচনা। মোদী দেশের হাল ধরলে সব ঠিক হয়ে যাবে! শিক্ষিত বাঙালি অসাম্প্রদায়িক, হিন্দু-মুসলিম ভেদে বিশ্বাস করে না... এর চেয়ে মিথ্যে আর হয় না," উত্তেজিত ইতিহাসবিদ।
কিন্তু মোদী আজকাল স্বামী বিবেকানন্দের কথাও বলেন! "গর্দভ সিংহের চামড়া পরে নিল, আর তাতে গলে গেলেন? বিবেকানন্দের ভারতচেতনা অন্য। হিন্দুর মস্তিষ্ক, ইসলামিক পেশি। নরেন্দ্র মোদী ওই সমন্বয়ে কবে বিশ্বাস রাখলেন?"
পশ্চিমবঙ্গ অবশ্য অন্য রকম। এখানে মুখ্যমন্ত্রী ইমামদের মাসিক ভাতার বন্দোবস্ত করেছেন। হাসলেন ইতিহাসবিদ, "গোধরার সময় উনি বিজেপি মন্ত্রিসভার শরিক ছিলেন। একটি কথাও বলেননি। মুসলিমদের জন্য চোখের জল তখন কোথায় ছিল? আর মুসলিম সমাজে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের উন্নতি না ঘটিয়ে শুধু মসজিদের ইমামদের জন্য উপহার? গোঁড়া মুসলিমের সংখ্যা বাড়বে, তার প্রতিক্রিয়ায় হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠের মনে সাম্প্রদায়িকতা বাড়বে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানে বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান সকলে। কিন্তু আমাদের রাজনীতির ধরনটা হল, পদে পদে মনে করিয়ে দেওয়া হিন্দু আর মুসলমান পরস্পরের 'আদার'। ব্রিটিশের তৈরি ভ্রান্ত ইতিহাসকে আমরা এ ভাবেই প্রশ্রয় দিই, পদে পদে তাকে ঘাড়ে বয়ে চলি।''
কে জানত, স্বাধীনতার সাড়ে ছয় দশক পরেও এই ভ্রান্ত চেতনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না!

 

আনন্দবাজার পত্রিকা

http://my.anandabazar.com/content/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A7-388

লড়াই দেখছে রাহুলের সঙ্গে

প্রশাসক মোদী প্রশংসা পেলেন মার্কিন রিপোর্টে

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১

Narendra Modi

নরেন্দ্র মোদী | ছবি- নিজস্ব চিত্র

গুজরাত দাঙ্গায় বিতর্কিত ভূমিকার জন্য ছ'বছর আগে যাঁকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছিল আমেরিকা, সেই নরেন্দ্র মোদীকেই 'দক্ষ প্রশাসক' হিসেবে প্রশংসা করল সে দেশের একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। ফলে সদ্য গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে 'স্বস্তি' পাওয়া, জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে আসার চেষ্টায় তিন দিনের অনশন ঘোষণা করা মোদী আরও একটু উজ্জীবিত। শুধু তা-ই নয়, মার্কিন কংগ্রেসের ওই নিজস্ব গবেষণা ও বিশ্লেষণ শাখা কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের (সিআরএস) ধারণা, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন আদতে নরেন্দ্র মোদী বনাম রাহুল গাঁধী হতে পারে। যে রাহুলের 'রাজনৈতিক দক্ষতা' সম্পর্কে প্রশ্নও তুলেছে সিআরএস।

মার্কিন কংগ্রেসনাল রিপোর্টটি যাঁরা তৈরি করেন, তাঁদের মধ্যে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় পক্ষেরই সদস্য রয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা স্বাধীন মতামত দেন। ১ সেপ্টেম্বর পেশ করা ৯৪ পাতার রিপোর্টটি গত কাল প্রকাশ্যে এসেছে। আর তার পরেই সরগরম দিল্লির রাজনীতি।

তার প্রথম কারণ অবশ্যই প্রশাসক নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, "ভারতে সুশাসন এবং চোখে পড়ার মতো উন্নয়নের সব চেয়ে ভাল উদাহরণ সম্ভবত গুজরাত। সেখানে বিতর্কিত মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লাল ফিতের বাঁধন ও দুর্নীতি দূর করে অর্থনৈতিক প্রক্রিয়াকে সরল করেছেন। যার ফলে এই রাজ্য জাতীয় আর্থিক বৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে।" ২০০২ সালের দাঙ্গায় তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে পিছনে ফেলে মোদী যে ভাবে সড়ক ও বিদ্যুৎ পরিকাঠামোয় বিপুল লগ্নির ব্যবস্থা করেছেন এবং রাজ্যের বাৎসরিক আর্থিক বৃদ্ধির হারকে ১১ শতাংশে নিয়ে গিয়েছেন, তার প্রশংসা করা হয়েছে রিপোর্টে।

মার্কিন এই রিপোর্টের কথা জানার পরে মোদী ট্যুইট করে বলেছেন, 'মার্কিন রিপোর্ট রাজ্যের ৬ কোটি গুজরাতির স্বীকৃতি স্বরূপ'। রিপোর্টকে হাতিয়ার করতে আসরে নেমেছে বিজেপি-ও। দলের মুখপাত্র রাজীবপ্রতাপ রুড়ি বলেন, "ক'বছর আগে এই মোদীকেই মার্কিন ভিসা দেওয়া হয়নি। অথচ আজ তারাই মোদীর জয়গান গাইছে।"

কিন্তু মজার কথা হল, রিপোর্টে ২০১৪-র নির্বাচনে মোদী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে পারেন বলে ইঙ্গিত দেওয়া হলেও এ প্রসঙ্গে কিন্তু বিজেপি নীরব। কারণ, এই প্রশ্নে ইতিমধ্যেই দলে জলঘোলা শুরু হয়েছে। মোদী-সহ নবীন প্রজন্মের অনেক নেতাই ওই পদের দিকে তাকিয়ে। তার উপরে লালকৃষ্ণ আডবাণী রথযাত্রার কথা ঘোষণা করার পরে এ-ও জল্পনা যে, তিনিও যে দৌড়ে আছেন সেটা বোঝাতেই তাঁর এই পদক্ষেপ। ফলে গা-বাঁচিয়ে রুড়ি আজ বলেছেন, "খোদ বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীই বলে দিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে নেতা নির্বাচন করা হবে না। তবে এখনও অনেক সময় আছে। দেখা যাক, পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায়।"

বিজেপি সূত্র বলছে, মার্কিন রিপোর্ট নিয়ে দলের তরফে যে আজ ঘটা করে ঢাক পেটানো হল, সেটা মূলত মোদীর চাপে। সেই কারণেই মোদীর প্রশংসার অংশটুকু নিয়েই মুখ খুলেছেন বিজেপি মুখপাত্র। অথচ ওই রিপোর্টেই গুজরাতের পর সব চেয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে বিহার। এনডিএ শাসিত রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও এ নিয়ে নিজের থেকে কিছুই বলেননি রুড়ি। বহু চাপাচাপির পরে তিনি শুধু বলেন, "হ্যাঁ রিপোর্টে বিহারের প্রশংসা করা হয়েছে।" অথচ সুশাসন নিয়ে এনডিএ রাজ্যগুলির প্রশংসা একটা বড় হাতিয়ার হতেই পারত। কিন্তু ঘটনা হল, মোদীর সঙ্গে নীতীশ কুমারের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়।

বিজেপি ওই মার্কিন রিপোর্টে মোদীর প্রশংসার অংশকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করলেও কংগ্রেস স্বাভাবিক ভাবেই তাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেন, "এই রিপোর্টের গুরুত্ব কী? আমাদের দেশে বহু বিশিষ্টজন রয়েছেন। আমরা তাঁদের কথা শুনব। এই বিষয়টি ওঁদের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আর আমাদের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক স্তরে আলোচনার জন্য ছেড়ে দেওয়াই ভাল।" অন্য দিকে মোদীকে এক হাত নিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, "যাঁর শাসনে গুজরাতে হাজার হাজার মানুষ খুন হয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে দেশের মানুষের মনোভাব স্পষ্ট।" মণীশের প্রশ্ন, "ভারতের বহু থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মার্কিন অর্থনীতি ও শাসন-ব্যবস্থা নিয়ে বহু রিপোর্ট তৈরি করে। তা নিয়ে আমেরিকা কতটা মাথা ঘামায়!"

কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, অণ্ণা হজারের অনশন থেকে শুরু মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের এহেন রিপোর্ট থেকে একটা বিষয়ে সংশয় দৃঢ় হচ্ছে। সেটা হল, ইউপিএ সরকারকে কি অস্থির করে তুলতে চাইছে মার্কিন প্রশাসন? কংগ্রেস নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, ইউপিএ সরকার আম আদমির দিকে তাকিয়ে বহু কাজ করছে। রাহুল প্রধানমন্ত্রী হলে আরও বেশি গরিব দরদী নীতি নেবেন। তার ফলে মার্কিন বাণিজ্য স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে আশঙ্কা করেই তাঁর যাত্রাভঙ্গ করার প্রয়াস শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'রাহুলের দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নির্বাচনী রণকৌশল তৈরির ক্ষেত্রেও তিনি সর্বদা সফল নন। জনগণের সামনে তিনি আড়ষ্ট হয়ে থাকেন এবং অনেক সময় ভুলভাল মন্তব্যও করেন।'

আনন্দবাজার পত্রিকা

http://my.anandabazar.com/content/%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%96%E0%A6%AC%E0%A6%B0-416


নরেন্দ্র মোদী কি ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ?

সর্বশেষ আপডেট বৃহষ্পতিবার, 20 ডিসেম্বর, 2012 14:52 GMT 20:52 বাংলাদেশ সময়

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রার্থী নরেন্দ্র মোদী তৃতীয়বারের মত বিজয়ী হয়েছেন।

মোট ১৮৮ আসনের মধ্যে বিজেপি প্রার্থীরা ১১৮টি আসন দখল করেছেন এবং বিরোধীদল কংগ্রেস পেয়েছে ৬০টি আসন।

এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে আগামী সাধারণ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে মি. মোদির দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পথ এখন আরও প্রশস্ত হলো বলেই মনে করা হচ্ছে।

গুজরাটে ২০০২ সালের ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর সেসময়ের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভূমিকার জন্য তীব্রভাবে সমালোচিত হন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের মতো দেশ তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক এড়িয়ে চলেছে।

ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী?

কিন্তু গুজরাটে মি. মোদীর দলের এই বিরাট বিজয় তাঁকে আবার জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনলো বলে মনে করা হচ্ছে।

বিজেপির অনেকে চাইছেন যে তিনি আর শুধু রাজ্য স্তরে আটকে না থেকে জাতীয় স্তরে দলকে নেতৃত্ব দিন।

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য বললেন, "নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও দলে আরও অনেকে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। দল কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে – সেটা দলই ঠিক করবে। তবে তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে দলের সদস্যরা বাড়তি উৎসাহ তো পাবেই। কারণ বি জে পি-র গায়ে যে দাঙ্গার তকমা মিথ্যাচার করে লাগানো হয়েছে – তার বিরুদ্ধে মি. মোদী যেমন লড়েছেন, তেমনই সেই লড়াইটা প্রতিটা বি জে পি কর্মীকেই লড়তে হয়।"

গুজরাটের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নরেন্দ্র মোদী যে ভূমিকা রেখেছেন, সেটা তাকে এই নির্বাচনে জিততে বিরাট সাহায্য করেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে স্থানীয় সাংবাদিক সতীশ মোরি বলেন, এমনকি গুজরাটের মুসলিমরাও এবার বিজেপিকে ভোট দিয়েছে।

"নরেন্দ্র মোদী গত কয়েকবছরে মুসলমানদের সঙ্গে একটা সখ্যতা তৈরী করার চেষ্টা করেছেন ঠিকই, কিন্তু ভোটের সময়ে কোনও মুসলমান প্রার্থীকে টিকিট দেন নি। কিন্তু অনেক মুসলমান প্রধান এলাকার ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে যে কংগ্রেস সেখানে যে মুসলমানদের দাঁড় করিয়েছিল – তাঁরা খুব বাজে ভাবে হেরেছেন।"

মুসলমানরা কেন সেই নরেন্দ্র মোদীর দলকে ভোট দিচ্ছেন – যাঁর বিরুদ্ধে দশ বছর আগের গোধরা পরবর্তী ধর্মীয় দাঙ্গায় মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে?

‌আহমেদাবাদের এক মুসলিম নেতা জে ভি মোমিন বললেন, "গুজরাটের মুসলমানরা আসলে দুটো জিনিস দেখেছেন – এক হল নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় থাকলে দাঙ্গা হয় না এখানে। আর দুই, মুসলমান ব্যবসায়ীরা আসলে দাঙ্গা হাঙ্গামা চান না.. যেটা ব্যবসায় বড় ক্ষতি করে। তাই নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতায় রেখে যদি শান্তি পাওয়া যায় – ক্ষতি কি?"

কিন্তু মি মোদী যদি জাতীয় স্তরে রাজনীতি করতে শুরু করেন, তাহলে কি গুজরাটের বাইরের মুসলমানরা তাঁকে একই ভাবে মেনে নেবেন? বিশ্লেষকরা বলছেন, সেই আশা কম।

কারণ গুজরাটের বাইরের প্রদেশগুলিতে মুসলমান ভোটাররা এখনও নরেন্দ্র মোদী আর গুজরাট দাঙ্গাকে সমার্থক বলে মনে করেন। .ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষরাও মি. মোদীকে একই চোখে দেখেন –এঁদের কাছে নরেন্দ্র মোদীকে যদি বি জে পি হাজির করে, তা কখনোই পূর্ণ সমর্থন পাবে না বলেই ধারণা বিশ্লেষকদের।

http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2012/12/121220_mhgujratmodi.shtml


দিল্লির মসনদে এ বার কি নরেন্দ্র মোদী?



দিল্লির মসনদে এ বার কি নরেন্দ্র মোদী?
গৌতম হোড় 

নয়াদিল্লি: জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল৷ আর জয়ের পর কী প্রশ্ন উঠতে চলেছে সেটা নিয়েও সংশয় ছিল না কারও৷ নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় বারের জন্য গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দলের অন্দরেই তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী করা নিয়ে দাবি জোরালো হয়ে উঠল৷ আর আমেদাবাদে জয়ের পর প্রথম জনসভায় সেই দাবিকেই কৌশলে আরও উস্কে দিলেন খোদ মোদী৷ 

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আমেদাবাদ-সহ সারা গুজরাটে বিজেপি অফিসের সামনে দিনভর স্লোগান উঠেছে, 'আজ কা সিএম, ২০১৪ কা পিএম৷' মোদীই কি আগামী দিনে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী? দিল্লিতে বিজেপি নেতারা এই প্রশ্ন শুনে ক্লান্ত৷ দলের শীর্ষ নেতারা অবশ্য এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন, অথবা বলেছেন, গুজরাতের নির্বাচনটা মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রশ্নকে ঘিরে হয়নি৷ আর যাঁরা এ ব্যাপারে চড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই নাগপুরের আরএসএস নেতারা এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটেছেন৷ 

প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে জল্পনাটা সকালেই উস্কে দিয়েছিলেন রাজ্যসভা সাংসদ স্মৃতি ইরানি৷ তিনি বলেন, 'নরেন্দ্র মোদীকেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা উচিত৷' তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এ ব্যাপারে যারপরনাই সতর্ক৷ লালকৃষ্ণ আডবাণী বলেছেন, 'গুজরাটের ফলাফল সন্তোষজনক৷ ভেবেছিলাম, হিমাচলে আরও ভাল ফল করব৷' আর দলের সভাপতি নীতিন গড়করির মন্তব্য, 'গুজরাট উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে৷ মোদীর নেতৃত্বে গুজরাট আরও এগিয়ে যাবে৷' মোদীর প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়া নিয়ে অরুণ জেটলি বলেন, 'এটা এই মুহূর্তে আলোচনার বিষয়ই নয়৷ মোদী প্রবীণ নেতা৷ দলের কর্মীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়৷' 

সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ নেতা শেষাদ্রিচারী বলেছেন, কে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন তা ঠিক করার সময় এটা নয়৷ দলের মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, 'বিজেপি-তে এমন অনেক নেতা আছেন যাঁরা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য৷' 

তবে শীর্ষ নেতৃত্ব যা-ই বলুন না কেন, মোদী নিজে কিন্ত্ত বুঝিয়ে দিয়েছেন টানা তিনবার গুজরাটে এই বিপুল জয়ের পর তাঁকে উপেক্ষা করা কঠিন হবে৷ জয়ের পর বিকেলে আমেদাবাদে দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে তাঁর প্রথম জনসভায় তিনি বলেন, উন্নয়ন ও সুশাসনের প্রশ্নে ভোট দিয়েছে গুজরাটের মানুষ৷ আর গুজরাটের এই দৃষ্টান্ত দেখে উদ্বুদ্ধ হবেন দেশের বাকি জনতা৷ কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, 'আমার এই জয়ের পর আজ অনেকেরই ভাল করে ঘুম হবে না৷' কিন্ত্ত প্রকাশ্যে কংগ্রেসকে এ কথা বললেও এই মন্তব্যে কি দলে তাঁর বিরোধীদের বিঁধলেন মোদী? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও৷ 

গুজরাটে সাফল্য প্রশ্নাতীত হলেও, তাঁর কাজের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে৷ সে কথা বুঝেই সম্ভবত এই প্রথমবার কিছুটা স্বভাববিরুদ্ধ ভাবেই কথা বলেন মোদী৷ 'যদি কোনও ভুল করে থাকি ক্ষমা করবেন৷ আমার আচরণে যদি কর্মীরা আহত হন, তাঁদের কাছেও ক্ষমা চাইছি৷' মোদীর মুখে এমন বার্তার পিছনে থাকতে পারে রাজনীতির সূক্ষ্ম হিসেব৷ মোদী জানেন হাজার চেষ্টা করেও ২০০২ দাঙ্গার কলঙ্ক তিনি মুছতে পারবেন না৷ তাই মণিনগরে জয়লাভের পরই তিনি বলেন, 'আর পিছু ফিরে তাকানোর প্রয়োজন নেই৷' তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী শ্বেতা ভাটের স্বামী সঞ্জীব ভাট দাঙ্গায় মোদীর ভূমিকার সমালোচনা করে জেলে গিয়েছিলেন৷ সেই অতীতকেই বারবার প্রচারে তুলে এনেছেন শ্বেতা৷ জাতীয় মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে মোদী সেই কারণেই এ দিন বলেন, 'সাম্প্রদায়িকতা ও প্রাদেশিকতার ঊর্ধে উঠে ভোট দিয়ে দেশের সামনে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন গুজরাটের মানুষ৷' 

আসলে মোদীও জানেন প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হতে গেলে তাঁকে শুধু বিজেপির নেতা হলে চলবে না, এনডিএ-র কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে হবে৷ সেই কারণেই নিজের ভাবমূর্তি অনেক নমনীয় করে তুলতে চাইছেন মোদী৷ হয়তো তাই জয়ের পরই গান্ধীনগরে গিয়ে তিনি দেখা করেছেন তাঁর পরাজিত প্রতিপক্ষ কেশুভাই প্যাটেলের সঙ্গে৷ 

তবে, জয়ের আনন্দের মধ্যেও দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব ও নাগপুরের সঙ্ঘ পরিচালকদের নীরবতা চাপে রাখতে পারে মোদীকে৷ তাঁকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে জেডিইউ জানিয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী পদে নীতীশকুমার মোদীর চেয়েও যোগ্যতর ব্যক্তি৷ গুজরাটে তাঁর বিপুল সাফল্য সত্ত্বেও জাতীয় মঞ্চে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে নানা মহলে৷ তবে দলের নিচুতলার কর্মীদের দাবি উপেক্ষা করে মোদীকে কত দিন গান্ধীনগরে আটকে রাখতে পারবে বিজেপি তার উত্তর দেবে ভবিষত্‍৷ 

মোদীর জয়ে চমক নেই, আছে মমতার জন্য বার্তা



মোদীর জয়ে চমক নেই, আছে মমতার জন্য বার্তা
অমল সরকার 

তৃতীয়বারের জন্য গুজরাট শাসনের ছাড়পত্র পেলেন নরেন্দ্র মোদী৷ তাঁর এই জয় প্রত্যাশিতই ছিল৷ ভোটের আগে থেকেই তাঁকে কংগ্রেসের যুবরাজ রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে বিজেপির সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রাথী হিসাবে সংবাদমাধ্যমের একাংশ তুলে ধরেছে৷ কারণ হিসেবে তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতাকেই তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে৷ বলা হয়েছে, রাজ্যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন তিনি৷ 

কিন্ত্ত এই বক্তব্য অতি সরলীকৃত এবং একপেশে বয়ান বলেই মনে হয়৷ মুখ্যমন্ত্রিত্বে হ্যাট্রিক করার লক্ষ্যপূরণের জন্য যাঁরা তাঁকে সু-শাসক হিসেবে তুলে ধরে ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর পদে দেখতে চাইছেন, তাঁরা আসলে গত দেড়-দু'দশকে দেশের রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন৷ দিল্লিতে টানা তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে আছেন কংগ্রেসের শীলা দীক্ষিত৷ তাঁর মতোই সেই ১৯৯৮ সাল থেকে টানা মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরায় সিপিএমের মানিক সরকার৷ এই তালিকায় আছেন অসমের তরুণ গগৈ, ওড়িশায় নবীন পনায়েক, ছত্তিশগড়ে বিজেপির রমন সিং৷ বিহারে এখন নীতীশ কুমারের সেকেন্ড ইনিংস চলছে৷ বিরাট ওলটপালট কিছু না-হলে তাঁরও হ্যাটট্রিক নিশ্চিত৷ দ্বিতীয় দফার মুখ্যমন্ত্রিত্ব করছেন মধ্যপ্রদেশে বিজেপির শিবরাজ সিং চৌহান৷ পাঞ্জাবে দ্বিতীয় দফায় আছেন অকালি দলের প্রকাশ সিং বাদল৷ 

এই রাজ্যগুলিতে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া থমকে যাওয়ার পিছনে অজানা অসুখের মতো কোনও রহস্য নেই৷ বড় রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং দক্ষিণের চার রাজ্য বাদে মোটামুটি সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে, শাসকদল মোটের উপর মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারছে৷ তার প্রধান কারণ হল সুশাসন৷ এই সুশাসনের দু'টি দিক৷ একটি হল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি৷ অন্যটি, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা৷ লক্ষ্যণীয়, এই দু'টি ব্যপারেই মানুষের কোনও আকাশকুসুম চাহিদা নেই৷ বরং প্রথমটি মোটের উপর নিয়ন্ত্রণে থাকলে উন্নয়নের ঘাটতি অনেকটাই সামাল দেওয়া সম্ভব হয় ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে৷ 

উদার অর্থনীতির আবহে সাধারণ মানুষের মধ্যে দর কষাকষির প্রবণতা সমাজের আর পাঁচটা ক্ষেত্রের মতো রাজনীতির ময়দানেও ছাপ ফেলেছে৷ সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সুবাদে মানুষের জানার সুযোগ এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে৷ সেই সুবাদে আমজনতাও আজ অনেক বেশি যুক্তিবাদী৷ ফলে স্রেফ নীতির কাছে আত্মসমর্পণ না-করে মানুষ এখন ভালো-মন্দ বিচার করছে৷ জ্যোতি বসুর সৌভাগ্য, রাজনীতিকে, বিশেষ করে ভোট রাজনীতিকে মানুষ যে সময় থেকে এই ভাবে দেখতে শুরু করেছে, তার আগেই টানা সাড়ে ২৩ বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকার রেকর্ড গড়তে পেরেছিলেন তিনি৷ আজ তা সহজ হত না৷ যেমন লালুপ্রসাদ নিজেকে 'গরিবোঁ কা মসিহা' দাবি করেও বিহারের কুর্সি দখলে রাখতে পারেননি৷ মায়াবতী পারেননি লখনৌয়ের কুর্সি দখলে রাখতে৷ কারণ কাজ না করে শুধু জাতপাতের অঙ্ক কষে বা মতবাদের দোহাই দিয়ে আর ক্ষমতায় টেকা যাচ্ছে না৷ 

লক্ষ্যণীয়, দিল্লির সরকার গড়তে দেশবাসী যেখানে এখনও এক দলের হাতে শাসনক্ষমতা তুলে দিতে দ্বিধান্বিত, সেখানে রাজ্যে রাজ্যে তারা জোটশাসনকে বর্জন করে একটি দলকেই উজাড় করে ভোট দিচ্ছে৷ তাই মায়াবতীকে হটিয়ে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে মুলায়ম সিংয়ের সমাজবাদী পার্টি৷ একই চিত্র পশ্চিমবঙ্গে দেখা গিয়েছিল৷ মানুষ লোকদেখানো নীতি-আদর্শের দাসত্ব করে না বলেই পশ্চিমবঙ্গে সাড়ে তিন দশকের বাম জমানার অবসান হয়েছে৷ বামফ্রন্ট সরকার 'কাজের সরকার' ছিল ১৯৮৭ পর্যন্ত৷ তার পর থেকে বিরোধী শিবিরের খেয়োখেয়ি, বিজেপির উত্থানে ভোট ভাগাভাগির সুযোগ নিয়ে টিকেছিল৷ 

নরেন্দ্র মোদীর এই জয়ের পিছনে তাই কোনও চমক নেই৷ তিনি বিজেপির নেতা না হলে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য তুলে ধরা হত কি না সন্দেহ আছে৷ তিনি কাজ করেছেন, ভোট পেয়েছেন৷ যেমন আরও অনেক মুখ্যমন্ত্রীই পেয়েছেন৷ মুসলিমরা ভোট দেওয়াতে তাঁকে ধর্মনিরপেক্ষতার মুকুট পরানোর চেষ্টা হচ্ছে৷ কিন্ত্ত মুসলিম জনমানসের পরিবর্তনের দিকটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷ প্রথমত, গুজরাটের মুসলিমদের সঙ্গে গোটা দেশের মুসলিমদের এক করে দেখা ঠিক নয়৷ ওই রাজ্যের সিংহভাগ মুসলিম অবস্থাপন্ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত৷ তাঁরা সম্পত্তি বাঁচাতে আপস করে নিয়েছেন৷ দ্বিতীয়ত, গোটা দেশেই মুসলিমদের মধ্যে ধর্মীয় অঙ্ক মেনে ভোট দেওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে৷ 

শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকাও প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া থমকে যাওয়ার একটি কারণ৷ যেখানে বিরোধীরা উন্নততর বিকল্প হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারছে, সেখানে সরকারের অস্তিত্বও প্রশ্নের মুখে৷ যেমনটা ঘটেছে হিমাচল প্রদেশে৷ পশ্চিমবঙ্গে পরবর্তী বিধানসভা ভোটের আগে সিপিএম তেমন বিরোধী দল হতে পারবে কি না এখনই তা বলা যাচ্ছে না৷ তবু গুজরাটের ফলাফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এক সতর্কবার্তা৷ তা হল, কাজ করতে হবে৷ এখনই যেমন শক্ত হাতে আইন-শৃঙ্খলার হাল ফেরানো জরুরি৷ যেমন দরকার উন্নয়নের ছোট ছোট দাবিগুলো পূরণ করা৷ তা না হলে শুধু সিপিএমকে গালমন্দ করে রাইটার্স বিল্ডিংসের কুর্সি দখলে রাখা সহজ হবে না৷ মানুষ কিন্ত্ত বিচার করবে-- মমতা কাজের না অকাজের৷

মোদীর সাফল্যে কাঁটা শুধু সানন্দ



মোদীর সাফল্যে কাঁটা শুধু সানন্দ
সুখের সে দিন। ন্যানো প্রকল্পের উদ্বোধনে টাটা-মোদী
শর্মিষ্ঠা রায় 

চার বছর আগে রতন টাটা সিঙ্গুর থেকে ন্যানোর কারখানা সরিয়ে নেওয়ার পর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেননি নরেন্দ্র মোদী৷ নিজের রাজ্যে সাগ্রহে বরণ করে নিয়েছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে কম দামি চার চাকার গাড়িকে৷ ন্যানোকে কেন্দ্র করে অটোমোবাইল হাব হিসেবে রাতারাতি সারা বিশ্বের নজর কেড়েছিল সানন্দ৷ এ বারের ভোটে উন্নয়নের পাশাপাশি ন্যানোই ছিল মোদীর অন্যতম হাতিয়ার৷ কিন্ত্ত সেই সানন্দেই কি না কংগ্রেসের কাছে হারতে হল বিজেপি প্রার্থীকে৷ 

গুজরাটের এ বারের ভোটে চমক প্রায় নেই বললেই চলে৷ ব্যতিক্রম শুধু সানন্দ৷ মোদীর উন্নয়নের মডেলে একেবারে প্রথম সারিতে ছিল সানন্দ৷ গত চার বছরে দৃশ্যতই পরিবর্তন হয়েছে আমেদাবাদ লাগোয়া এই ছো জনপদে৷ ন্যানোর পথ ধরেই এসেছে দেশি বিদেশি আরও নানা গাড়ি তৈরির সংস্থা৷ চওড়া হাইওয়ে, বিশাল বিশাল আবাসন প্রকল্প, স্থানীয় মানুষের হাতে বিপুল টাকা- বৈভবের চিহ্ন সানন্দের সর্বাঙ্গে৷ এমনকি বিজেপির নতুন পার্টি অফিসটাও সাত তলা৷ এই সানন্দে প্রচার করেছেন নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে লালকৃষ্ণ আডবাণী, বিজেপির প্রায় সমস্ত শীর্ষ নেতাই৷ আর রাহুল গান্ধীর সভা ভরাতে আশপাশের গ্রাম থেকে লোক জোগাড় করতেই কংগ্রেসের নড়বড়ে সংগঠনের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়৷ 

সেই সানন্দে কংগ্রেসের জয়ের রসায়নটা তবে কী? আসলে উত্তরটা লুকিয়ে আছে অন্যখানে৷ ২০১০ সালে টাটার ন্যানো কারখানায় উত্পাদন শুরু পর থেকেই ভোল পাল্টেছে সানন্দ৷ বিনিয়োগের টানে ভিড় জমিয়েছেন শিল্পপতিরা৷ কিন্ত্ত সানন্দের জমিতে টান পড়ার শুরু ওই সময় থেকেই৷ বিপুল টাকায় জমি বিক্রি করে এলাকার মানুষ যেমন রাতারাতি কোটিপতি হয়েছেন, তেমনই জমি মাফিয়াদের চক্করে পড়ে সর্বস্ব খুইয়ে পথে বসতে হয়েছে এমন পরিবারেরও অভাব নেই৷ জমি বেচে হাতে টাকা এলেও সেই টাকায় বাড়ি গাড়ি করে সঞ্চয় শেষ করে ফেলেছেন অনেকেই৷ ফলে বছর দুয়েক আগের সোনালি স্বপ্নের রং অনেকটাই ফিকে হয়ে এসেছে৷ 

সর্বোপরি রয়েছে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ৷ সানন্দের ন্যানো কারখানাকে কেন্দ্র করে এলাকায় যে পরিমাণ কর্মসংস্থান হওয়ার কথা বলা হয়েছিল বাস্তবে তা হয়নি৷ স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এলাকার তরুণদের খুব সামান্য অংশই কারখানা বা ভেন্ডার পার্কে কাজ পেয়েছেন৷ কিন্ত্ত বেশিরভাগই নিরাপত্তারক্ষীর কাজ৷ চোখের সামনেই ভিনরাজ্য থেকে আসা তরুণদের উচ্চপদে কাজ করতে দেখে ক্ষোভ জমেছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে৷ কংগ্রেসের প্রার্থীর জয়ে সেটা বড় ভূমিকা নিয়ে থাকতে পারে৷ 

পরিসংখ্যান বলছে ২০০৯ সালে ৮৬৬০টি মউ স্বাক্ষর করেছেন নরেন্দ্র মোদী৷ সেই প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ হওয়ার কথা ছিল ১২,৩৯,৫৬২ কোটি টাকার৷ কিন্ত্ত বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে ১৩৪২টি প্রকল্প আর বিনিয়োগের পরিমাণ ১,০৪,৫৯০ কোটি টাকা৷ ২০১১ সালে এই অঙ্কটাই পাল্টে গিয়েছে নাটকীয় ভাবে৷ গত বছর মোদীর সরকার ৮৩৮০টি মউ সই করলেও বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে মাত্র ২৪৩টি প্রকল্প৷ ২০,৮৩০৪৭ কোটি টাকার বিনিয়োগের কথা থাকলেও বাস্তবে হয়েছে মাত্র ২৯৮১৩ কোটি টাকা৷ মোদীর হাইটেক প্রচারের আলোয় এই তথ্যগুলো চাপা পড়ে গিয়েছে৷ কিন্ত্ত বিকাশ আর সমৃদ্ধির আড়ালে গুজরাটের নানা কোণে যে ক্ষোভের ধোঁয়া জমছে তা অস্বীকার করা যায় না৷ 


মোদীর বিপুল সাফল্যের দিনে তাই অস্বস্তির কাঁটা হয়ে রইল সানন্দের পরাজয়৷ আর সানন্দ মডেল সফল কি না এই প্রশ্ন তুলে কিঞ্চিত্‍ সান্ত্বনা জুটতে পারে সিঙ্গুরের৷

2002 Gujarat violence

From Wikipedia, the free encyclopedia
2002 Gujarat violence
Ahmedabad riots1.jpg
The skyline of Ahmedabad filled with smoke as buildings and shops are set on fire by rioting mobs
Date27 February 2002–
Mid-June 2002
LocationGujaratIndia
CausesTension between Hindus and Muslims
Casualties
790 Muslims[1] 254 Hindus[1]

The 2002 Gujarat violence was a series of incidents including the Godhra train burning and Naroda Patiya massacre and the subsequent communalviolence between Hindus and Muslims in the Indian state of Gujarat. On 27 February 2002, the Sabarmati Express train was attacked at Godhra by a Muslim mob[2][3] as per a preplanned conspiracy.[4] 58 Hindu pilgrims, including 25 women and 15 children, returning from Ayodhya, were killed in the attack. This in turn prompted retaliatory attacks against Muslims and general communal riots on a large scale across the state, in which 790 Muslims and 254 Hindus were ultimately killed and 223 more people were reported missing.[1][5] 523 places of worship were damaged: 298 dargahs, 205 mosques, 17 temples, and 3 churches. Muslim-owned businesses suffered the bulk of the damage. 61,000 Muslims and 10,000 Hindus fled their homes. Preventive arrests of 17,947 Hindus and 3,616 Muslims were made. In total 27,901 Hindus and 7,651 Muslims were arrested.[6][7][8]

The nature of these events remains politically controversial in India. Some commentators have characterised the deaths of Muslims as a genocide in which the state was complicit,[9] while others have countered that the hundreds of Muslim and Hindu dead were all victims of riots or "violent disturbances".[10]

Contents

  [hide

[edit]Godhra train burning, investigations and judgements

On 27 February 2002, 58 Hindus including 25 women and 15 children, Hindu pilgrims (Kar Sevaks) returning by the Sabarmathi express train from Ayodhya,[11] were burnt alive in a railway coach by a large Muslim mob.[3][4] in a conspiracy.[4] The conspiracy to massacre the Hindus was fueled by false rumours of the abduction of a Muslim girl, that were spread throughout the Muslim majority locality.[12]

Initial media reports blamed the local Muslims for setting the coach on fire.[13] The New Nanavati Report states that the Attack on the "Kar Sevaks" on the train from Ayodhya was pre-planned, and exonerates Chief Minister Narendra Modi.[14] A previous report on the Godhra train burning, filed by Justice Banerjee, a more recent report filed by Justice Nanavati states that it was "pre-planned" by the mob. The Gujarat High Court ruling, as of 2006, has declared as illegal and unconstitutional, setting up of the Umesh Chandra Banerjee committee, which had concluded the fire started by accident. Gujarat High Court quashed the conclusions of the Banerjee Committee and declared its formation as a "colourful exercise," "illegal, unconstitutional, null and void," and its argument of accidental fire "opposed to the prima facie accepted facts on record.".[15][16] .[3] Going further, the report claims that one Hassan Lalu had thrown burning objects into the train and 140 litres of petrol had been used to set the train on fire, adding that stones were thrown at passengers to stop them from fleeing.

Nine years after the Godhra train went up in flames the court on 22 February 2011 pronounced its judgement. Additional Session Judge delivered the verdict and convicted 31 Muslims and acquitted 63.[17][18][19] The bodies of those killed in the train were brought to Ahmedabad, where a procession was held,[20] a move seen as a major provocation for the ensuing communal violence.[21] The VHP issued a call for a state-wide strike on 28 February 2002, which was supported by the Bharatiya Janata Party (BJP).[22][23] In February 2011, the findings of the Nanavati-Mehta commission were upheld in court, and the Godhra train burning was called a "pre-planned conspiracy". 31 people were convicted of setting fire to the train and "roasting alive 59 helpless kar sevaks."[24] of which 11 were sentenced to death and 20 to life sentences.[25]

[edit]Post Godhra violence

Tension gripped parts of Gujarat state while examinations all over the state were cancelled. The Vishwa Hindu Parishad had called for a statewide bandh to protest the Godhra train burning. Fearing communal clashes the administration imposed a curfew in several areas. Rapid Action Force were deployed in Godhra's sensitive area and around Godhra station.[26] On 1 March the Indian government dispatched around 1,000 paramilitary personnel to Gujarat and asked the army to be on standby to maintain law and order in the state. The Army began flag marches in the worst-affected areas and shoot-at-sight orders were issued in 34 curfew-bound cities and towns in Gujarat.[27]

151 towns and 993 villages[28] in fifteen to sixteen of the state's 25 districts were affected by the post-Godhra violence, which was particularly severe in about five or six districts. The violence raged largely between 28 February and 3 March, and after a drop, restarted on 15 March, continuing till mid June.[29] Northern and central Gujarat, as well as the north-eastern tribal belt which are closer to Godhra City, were the worst affected while Saurashtra and Kutch remained largely peaceful.[28]

[edit]Attacks on Muslims

Attacks by large Hindu mobs began in the districts of Ahmedabad, Vadodara, Saberkantha and, for the first time in its history, Gandhinagar on 28 February. Violence spread to the largely rural districts of Panchmahals, Mehsana, Hasnot, Kheda, Junagadh, Banaskantha, Patan, Anand and Narmada the next day. Over the next two days, Bharuch and Rajkot and later Surat were hit.[30]

The first incidents of attacks on the Muslim community started at Ahmedabad, where Hindus began throwing stones at and later burned a Muslim housing complex known as Gulburg Society, and then spread elsewhere.[31] The initial violence was believed to be instigated by unsubstantiated rumours, endorsed by a senior VHP leader, of Muslims having kidnapped three Hindu girls during the Godhra train attack.[31]

In Ahmedabad, the dargah of the Sufi saint-poet Wali Gujarati in Shahibaug and the 16th century Gumte Masjid mosque in Isanpur were destroyed. The Muhafiz Khan Masjid at Gheekanta was ransacked.[32] Police records list 298 dargahs, 205 mosques, 17 temples and three churches as damaged in the months of March and April.[33]

According to Human Rights Watch Report, May 2002 ( http://www.hrw.org/news/2002/04/29/india-gujarat-officials-took-part-anti-muslim-violence) State officials of Gujarat, India were directly involved in the killings of hundreds of Muslims since February 27 and then commenced engineering a massive cover-up of the state's role in the violence.

The police were directly implicated in nearly all the attacks against Muslims that are documented in the 75-page report, 'We Have No Orders to Save You': State Participation and Complicity in Communal Violence in Gujarat. In some cases they were merely passive observers since it was too large for them to control. Panicked phone calls made to the police, fire brigades, and even ambulance services generally proved futile. Several witnesses reported being told by police: "We have no orders to save you."

Three weeks after the initial attacks, Human Rights Watch visited Ahmadabad, a site of large-scale destruction, murder, and several massacres, and spoke to both Hindu and Muslim survivors of the attacks. The report also provides testimony on retaliatory attacks against Hindus, which Human Rights Watch strongly condemned.

More than 850 people have been killed in the Western state of Gujarat in the past two months, most of them Muslims. Unofficial estimates have put the death toll as high as 2,000. The violence began on February 27 after a Muslim mob in the town of Godhra attacked and set fire to two carriages of a train carrying Hindu activists. Fifty-eight people were killed.

Starting February 28, 2002, a three-day retaliatory killing spree by Hindus left hundreds dead and tens of thousands homeless and dispossessed. The looting and burning of Muslim homes, businesses, and places of worship was also widespread. Muslim girls and women were brutally raped. Mass graves have been dug throughout the state. Gravediggers told Human Rights Watch that bodies keep arriving, burnt and mutilated beyond recognition.

Between February 28 and March 2, thousands of attackers descended on Muslim neighborhoods armed with swords, sophisticated explosives, and gas cylinders. In the weeks following the attacks, Hindu homes and businesses were also destroyed in retaliatory attacks by Muslims. The groups most directly involved in the violence against Muslims include the Vishwa Hindu Parishad (World Hindu Council, VHP) and the Bajrang Dal.

"This is a crisis of impunity," said Narula. "If charges against members of these groups are not investigated and prosecuted accordingly, violence may continue to engulf the state, and may even spread to other parts of the country."

The violence in Gujarat has triggered national outrage and has been strongly condemned by political parties, the National Human Rights Commission, the Indian prime minister, and civil society at large. Both the Godhra massacre and the attacks that ensued have been documented in meticulous detail by Indian human rights and civil liberties groups and by the Indian press.

"After two months of violence, the international community is now waking up and needs to respond," said Narula.

Government figures indicate that more than 98,000 people, a majority of them Muslim, are residing in more than one hundred relief camps throughout the state. The state government has failed to provide adequate and timely humanitarian assistance to internally displaced persons in Gujarat. Relief camps visited by Human Rights Watch were in desperate need of more government and international assistance. One camp with 6,000 residents was located on the site of a Muslim graveyard. Residents were literally sleeping in the open, between the graves.

Assistance from international humanitarian and United Nations agencies is urgently needed for Hindus and Muslims in relief camps, Human Rights Watch said. It urged the Indian government to actively seek the assistance of international agencies and to invite United Nations human rights experts to investigate state and police participation in the violence in Gujarat.[34]

[edit]Attacks on Hindus

Attacks on Hindus in Danilimda, Modasa, Himmatnagar, Bharuch, Sindhi Market, Bhanderi Pole, and other localities in the city ofAhmedabad in Gujarat were perpetrated by Muslim mobs.[35] There was a significant loss of property.[36][37] Late in March, more than one hundred Hindus in Dariyapur and Kalupur, including 55 dalits, fled their homes to stay in makeshift shelters after being attacked by Muslims mobs.[38]

Several Hindu residential areas, including Mahajan No Vaado, a fortified enclave in Muslim dominated Jamalpur, were targeted following calls for retaliation.

In the morning the mosques began announcing that Islam was in danger, that there was poison in the milk. This was used as a code word. The milk was meant to be Muslims & poison meant Hindus. The rioting lasted between 2:15 p.m. and 5:30 p.m.[35]

Residents were unable to go to work, fearing attacks. A Hindu temple in the area was destroyed. In Himmatnagar, a young man was killed when he went to a Muslim enclave on business.[35]

[edit]Toll

According to an official estimate, 1044 people were killed in the violence – 790 Muslims and 254 Hindus including those killed in the Godhra train fire. Another 223 people were reported missing, 2,548 injured, 919 women widowed and 606 children orphaned.[39]

Unofficial estimates put the death toll closer to 2000, with Muslims forming a higher proportion of those killed than Hindus.[40]

When missing people were declared dead after 7 years, total deaths went up from 1044 to 1,267.[41][42]

[edit]Security failure

By the evening of 28 February, curfews were imposed in twenty seven towns and cities.[43] By 25 March, thirty five towns were under curfew.[44] Police records show 21,563 preventive arrests were made by the end of April (17,947 of the arrested were listed as Hindus and 3,616 as Muslims) as well as 13,989 substantive arrests (9,954 Hindus and 4,035 Muslims).

The New York Times' Celia Dugger reported that witnesses were "dismayed by the lack of intervention from local police", who often "watched the events taking place and took no action against the attacks on Muslims and their property".[45] Human Rights Watch reported that in some cases members of the state police force led rioting mobs, "aiming and firing at every Muslim who got in the way", or instead of offering assistance "led the victims directly into the hands of their killers."[46] Calls for assistance to the police, fire brigades, and even ambulance services generally proved futile.[46]

Times of India claimed that 93 Muslims were killed in Police firing and only 77 Hindus, however Gujarat Police and BJP claimed that majority of 198 Hindus(excluding 59 killed in Godhra) killed were due to the Police firing and not in riots.

Hindu residents of Mahajan No Vaado, part of the Muslim dominated area of Jamalpur, told HRW that on 1 March, the police ignored phone calls and left them fend for themselves when a Muslim mob attacked.[35] Numerous calls by Hindus throughout the riots were reportedly ignored by the police.[35]

One thousand army troops were flown in by the evening of 1 March to restore order. Intelligence officials alleged that the deployment was deliberately delayed by the state and central governments.[47] On 3 May, former Punjab police chief K P S Gill was appointed as security adviser to the Chief Minister.[48]

The Gujarat government transferred several senior police officers who had taken active measures to contain and investigate violent attacks to administrative positions.[23][49][50]

RB Sreekumar, who served as Gujarat's intelligence chief during the riots, alleged that the state government issued "unconstitutional directives", with officials asking him to kill Muslims involved in rioting or disrupting a Hindu religious event. The Gujarat government denied the allegations, calling them "baseless" and instigated out of malice because Mr. Sreekumar was not promoted.[51]

Defending the Modi administration in the Rajya Sabha against charges of genocide, BJP spokesman V K Malhotra said that the official toll of 254 Hindus, killed mostly in police firing, indicates how the state authorities took effective steps to curb the violence.[52] BJP MP and journalist Balbir Punj disputed allegations of bias against Muslims by the BJP-run state government, pointing out that the majority of those arrested during and after the riots were Hindus.[53]

An unidentified pamphlet circulated to journalists in Gujarat in 2007 labelled Modi's government as anti-Hindu for arresting Vishwa Hindu Parishad (VHP) workers and Hindu activists involved in the riots.[54]

The recent report of Supreme Court appointed Special Investigation Team led by former CBI Chief R.K Raghavan gave clean chit to Gujarat government and noticed that Gujarat Police tried everything to prevent the riots.[55]

On Narendra Modi's role the Special Investigation Team report states,[55]

"Law and order review meetings were held by Modi and all the things was done to control the situation... the Army was called on time to contain the communal violence.

Modi was busy with steps to control the situation, establishment of relief camps for riot victims and also with efforts to restore peace and normalcy.

In view of the detailed inquiry and satisfactory explanation of the person involved, no criminal case is made out against Narendra Modi.

"

[edit]Role of government and police

Sabarmati Express train was attacked within the premises of Godhra Railway Yard. At the time of attack, 14 policemen were on duty at Godhra Railway Yard. Railway Police Station is about 826 meters away from spot of attack. Three Railway Police Force Constables were the first responders. They fired 4 rounds from their .303 rifles to disperse the crowd. Firefighter Sureshgiri Mohangiri Gosai testified that Godhra Municipal Councilor Haji Bilal incited the mob to stop the fire engine. Thereupon some persons in the mob had thrown stones at the fire engine. He has further stated that while they were trying to extinguish the fire, stones were pelted on the train. The first response team of Godhra Police Mobile Van testified that Godhra Municipal President Mohamad Kalota and municipal councillor Haji Bilal were in the mob and they were inciting the Muslims.[56]

The Gujarat state government was reprimanded immediately for failing to prevent the riots, but then increasingly for actively fomenting and participating in it, which was a far more serious charge. Critiques came repeatedly from the Supreme Court, and the upper house of the Indian parliament unanimously passed a resolution calling for federal intervention in Gujarat; a similar censure motion in the lowerhouse was defeated by about 100 votes.[57]

The United States Department of State in its International Religious Freedom Report 2003 commented on the episode,[58] based on a report by USCIRF:

"India's National Human Rights Commission (NHRC), an official body, found evidence in the killings of premeditation by members of Hindu extremist groups; complicity by Gujarat state government officials; and police inaction in the midst of attacks. The NHRC also noted "widespread reports and allegations of well-organized persons, armed with mobile telephones and addresses, singling out certain homes and properties for death and destruction in certain districts-sometimes within view of police stations and personnel," suggesting the attacks may have been planned in advance."[59]

However, the credibility of USCIRF is questionable with not even a single Hindu/Sikh/Buddhist/Jain commissioner. The organization's objective is to push forward the right wing Christian / Islamic agenda[60].

In April 2002, retired supreme court justices V. R. Krishna Iyer and P. B. Sawant headed a citizen's panel to investigate the riots.[61]Their report includes testimony of the then Gujarat Bharatiya Janata Party (BJP) minister Haren Pandya (since murdered), who testified about an evening meeting convened by Narendra Modi the evening of the Godhra train burning. At this meeting, officials were instructed not to obstruct the Hindu rage following the incident.[62] The report also highlighted a second meeting, held in Lunawada village ofPanchmahal district, attended by state ministers Ashok Bhatt, and Prabhatsinh Chauhan, and other BJP and RSS leaders, where "detailed plans were made on the use of kerosene and petrol for arson and other methods of killing."[63]

The Jamiat Ulama-i-Hind claimed in 2002 that some regional Congress workers collaborated with the perpetrators of the violence.[64]

In 2003, A comment by G.T. Nanavati, who leads the official commission investigating the riots, that part of the evidence collected and reviewed till then did not indicate any serious lapse on the part of the government or police in Gujarat[65][66] was criticised as inappropriate by aid and reconciliation activists and other jurists.[67][68]

Organizations such as Human Rights Watch criticised the Indian government for failure to address the resulting humanitarian condition of people, the "overwhelming majority of them Muslim," who fled their homes for relief camps in the aftermath of the events; as well as the Gujarat state administration for engaging in a cover-up of the state's role in the massacres.[69] Many of the investigations and prosecution of those accused of violence during the riots have been opened for reinvestigation and prosecution.[70][71] The large-scale civil unrest has been generally been described as riots or inter-communal clashes.

In response to allegations of state involvement, Gujarat government spokesman, Bharat Pandya, told the BBC that the rioting was a spontaneous Hindu backlash fuelled by widespread anger against Muslims. He said "Hindus are frustrated over the role of Muslims in the on-going violence in Indian-administered Kashmir and other parts of India".[72]

The US Ambassador at Large for International Religious Freedom, John Hanford, expressing concern over religious intolerance in Indian politics, said that while the rioters may have been aided by state and local officials, he did not believe that the BJP-led central government was involved in inciting the riots.[73]

At the same time, about two hundred policemen lost their lives trying to control the violence in Gujarat.[74]

In April 2012, a Special Investigation Team found absolved Modi of any involvement in the Gulberg massacre, arguably the worst episode of the riots.[75]The Special Investigation Team (SIT) report on the riots exonerated Modi of all charges.[76]

In his report, Mr. Raju Ramachandran the amicus curiae for the case, strongly disagreed with a key conclusion of the R.K. Raghavan-led SIT: that IPS officer Sanjiv Bhatt was not present at a late-night meeting of top Gujarat cops held at the Chief Minister's residence in the wake of the 27 February 2002 Godhra carnage. It has been Mr. Bhatt's claim — made in an affidavit before the apex court and in statements to the SIT and the amicus — that he was present at the meeting where Mr. Modi allegedly said Hindus must be allowed to carry out retaliatory violence against Muslims. Raju Ramachandran was of the opinion that Mr Modi could be prosecuted for alleged statements he had made. Mr. Ramachandran said there was no clinching material available in the pre-trial stage to disbelieve Mr. Bhatt, whose claim could be tested only in court. "Hence, it cannot be said, at this stage, that Shri Bhatt should be disbelieved and no further proceedings should be taken against Shri Modi." [77] [78]

[edit]Criminal prosecutions

The Indian Supreme Court has been strongly critical of the state government's investigation and prosecution of those accused of violence during the riots, directing police to review about 2,000 of the 4,000 riot related cases that had been closed citing lack of evidence or leads.[70] Following this direction, police identified nearly 1,600 cases for reinvestigation, arrested 640 accused and launched investigations against 40 police officers for their failures.[71][79]

Human Rights Watch alleged[80] that state and law enforcement officials were harassing and intimidating[81] key witnesses, NGOs, social activists and lawyers who were fighting to seek justice for riot victims. In its 2003 annual report, Amnesty International stated, "the same police force that was accused of colluding with the attackers was put in charge of the investigations into the massacres, undermining the process of delivery of justice to the victims."[82]

The Best Bakery murder trial received wide attention after witnesses retracted testimony in court and all accused were acquitted. TheIndian Supreme Court, acting on a petition by social activist Teesta Setalvad, ordered a retrial outside Gujarat in which nine accused were found guilty in 2006.[83] A key witness, Zaheera Sheikh, who repeatedly changed her testimony during the trials and the petition was found guilty of perjury.[84]

After a local court dismissed the case against her assailants, Bilkis Bano approached the National Human Rights Commission and petitioned the Supreme Court seeking a retrial. The Supreme Court granted the motion, directing the Central Bureau of Investigation to take over the investigation, transferring the case out of Gujarat and directing the central government to appoint the public prosecutor.[85][86] Charges were filed in a Mumbai court against nineteen people as well as six police officials and a government doctor over their role in the initial investigations.[87] In January 2008, eleven men were sentenced to life imprisonment for the rape and murders and a policeman was convicted of falsifying evidence.[88]

In 2005, the Vadodara fast track court acquitted 108 people accused of murdering two youths, during a mob attack on a group of displaced Muslims returning under police escort to their homes in Avdhootnagar. The court passed strictures against the police for failing to protect the people under their escort[89] and failing to identify the attackers they had witnessed.[90]

Nine people were convicted of killing a Hindu man and injuring another during group clashes in Danilimda, Ahmedabad on 12 April, while 25 others were acquitted.[91]

Eight people, including a VHP leader and a member of the BJP, were convicted for the murder of seven members of a family and the rape of two minor girls in the village of Eral in Panchmahal district.[92][93]

Fifty two people from Pavagadh and Dhikva villages in Panchmahal district were acquitted of rioting charges for lack of evidence.[94]

A stringent anti-terror law, the POTA, was used by the Gujarat government to charge 131 people in connection to the Godhra train fire, but not invoked in prosecuting any of the accused in the post-Godhra riots.[95][96] In 2005 the POTA Review Committee set up by central government to review the application of the law opined that the Godhra accused should not be tried under the provisions of POTA.[97]

On 9 November 2011, a court in Ahmedabad sentenced 31 Hindus to life imprisonment for murdering dozens of Muslims, by burning a building in which they took shelter.[98] 41 other Hindus were acquitted of murder charges due to lack of evidence.[98] 22 additional people were convicted for attempted murder on 30 July 2012, while 61 others were acquitted.[99]

On 29 July 2012, an Indian court gave the verdict in the Naroda Patiya massacre case and convicted 32 people, including former state minister Maya Kodnani and Hindu leader Babu Bajrangi of involvement in the attacks. The court case began since 2009, and over 300 people (including victims, witnesses, doctors, and journalists) have testified before the court. For the first time, the verdict acknowledged the role of a politician in inciting Hindu mobs. Activists say that the verdict will embolden the opponent of Narendra Modi, the chief minister of Gujarat, in the crucial run-up to state elections later this year, when Modi will seek a third term. Modi refused to apologize and denied that the government had a role in the riots. Twenty-nine people were acquitted during the verdict. Teesta Setalvad, a human rights campaigner, said, "For the first time, this judgment actually goes beyond neighborhood perpetrators and goes up to the political conspiracy. The fact that convictions have gone that high means the conspiracy charge has been accepted and the political influencing of the mobs has been accepted by the judge. This is a huge victory for justice."[100]

[edit]Public enquiries

[edit]Shah-Nanavati commission

On 6 March, the Gujarat government set up a commission of enquiry headed by retired High Court judge K.G. Shah to enquire into the Godhra train burning and the subsequent violence and submit a report in three months.[101] Following criticism from victims' organisations, activists and political parties over Shah's alleged proximity to the BJP, on 22 May, the government reconstituted the commission, appointing retired Supreme Court Justice G.T. Nanavati to lead the commission.[102][103] In 2008, the Nanavati commission came out largely in favour of the Gujarat government's aspect. Nanavati's evidence hinged on the acquisition of 140 litres of petrol hours before the arrival of the train and the storage of the said petrol at the alleged key conspirator's, Razzak Kurkur, guest house. This was further corroborated by forensic evidence showing fuel was poured on the train compartment before being burnt. The alleged mastermind was said to be the cleric Maulvi Husain Haji Ibrahim Umarji and a dismissed Central Reserve Police Force officer named Nanumiyan, from Assam, who had instigated the Muslim crowds. Furthermore, two Kashmiris, Gulamnabi and Ali Mohammed, were in the same guesthouse for a fortnight prior to the event speaking about the Kashmir liberation movement.[3]

The Communist Party of India (Marxist) and the Indian National Congress party both came out railing against the exoneration of the Gujarat government by the commission citing the timing of the report (with general elections months away) as evident of unfairness. Congress spokesperson Veerappa Moily commented at the strange absolvement of the Gujarat government for complacency for the carnage. He also said the report reinforced communal prejudices.[104]

[edit]National Human Rights Commission

In its Proceedings of 1 April 2002, the Commission had set out its Preliminary Comments and Recommendations on the situation and sent a Confidential Report of the team of the Commission that visited Gujarat from 19–22 March 2002 to Gujarat government and Central Home Ministry. The Gujarat government in its reply did not provide its response to the Confidential report. Therefore, the Commission was compelled to release the confidential report in its entirety[105] and observed that nothing in the reports received in response "rebuts the presumption that the Modi administration failed in its duty to protect the rights of the people of Gujarat" by not exercising its jurisdiction over non-state players that may cause or facilitate the violation of human rights. It further observed that "the violence in the State, which was initially claimed to have been brought under control in seventy two hours, persisted in varying degree for over two months, the toll in death and destruction rising with the passage of time despite the measures reportedly taken by the State Government". The report claims failure of intelligence, failure to take appropriate action, patterns of arrests, uneven handling of major cases, and "Distorted FIRs: 'extraneous influences', issue of transparency and integrity" as key factors in the incident(s).

[edit]Banerjee Committee

In September 2004, a panel appointed by the central government and headed by former Supreme Court judge UC Banerjee to probe the Godhra train fire concluded that the fire was accidental.[106][107] Its findings were challenged by the BJP and the Gujarat inspector-general of police. In October 2006, the Gujarat High Court ruled that the panel was set up illegally, in violation of the Commissions of Inquiry Act, 1952 which prohibits the setting up of separate commissions by state and central governments to probe a matter of public importance.[108]

[edit]Concerned Citizens Tribunal

The citizen tribunal headed by retired Supreme Court justice Krishna Iyer collected evidence and testimony from more than 2000 riot victims, witnesses and others. In its report, the tribunal accuses the state government and chief minister Modi of complicity in the violence. While Krishna Iyer was nominally part of this tribunal, he made it clear in the preface of the report that his involvement was very limited.[109][110][111]

[edit]Aftermath

Opposition parties as well as three coalition partners[112] of the BJP-led central government demanded the dismissal of Gujarat Chief Minister Narendra Modi for failing to contain the violence, with some calling for the removal of Union Home Minister L K Advani as well.[113]

On 18 July, Chief Minister Narendra Modi asked the Governor of Gujarat to dissolve the state assembly and call fresh elections.[114] The Indian Election Commission ruled out early elections, citing the prevailing law and order situation, a decision the union government unsuccessfully[115] appealed against in the Supreme Court.[116]

In August 2002 a plot by Lashkar-e-Toiba to assassinate Narendra ModiPraveen Togadia, and other Sangh Parivar leaders was unearthed by Indian police. The terrorists were planning to set up a base in Gujarat and were trying to lure some of the riot-hit people into taking up "so-called jihadi activities" Delhi Police Special Commissioner (Intelligence) K K Paul said.[117]

In September 2002, at least 29 people were killed when Islamic fundamentalist gunmen engaged in the Akshardham Temple attack in the city of Gandhinagar in Gujarat. The Pakistani Inter-Services Intelligence and Islamic terrorist group Lashkar-e-Toiba were accused of supporting the terrorists.[118][119][120][121]

Elections were held in December and Modi was returned to power in a landslide victory.[122]

Emails made public by the perpetrators of a series of bombings in western India in July 2008 indicated that those attacks were "the revenge of Gujarat".

[edit]Relief efforts

Amnesty International's annual report on India in 2003 claimed the "Gujarat government did not actively fulfill its duty to provide appropriate relief and rehabilitation to the survivors".[82]

The state government initially offered compensation payments of 200,000 rupees to the families of those who died in the Godhra train fire and 100,000 rupees to the families of those who died in the subsequent riots, which local Muslims described as discriminatory.[123]Subsequently, the government set the compensation amount at 150,000 rupees.[124]

By 27 March, nearly 100,000 displaced people moved into 101 relief camps. This swelled to over 150,000 in 104 camps the next two weeks.[29] The camps were run by community groups and NGOs, with the government committing to provide amenities and supplementary services. Drinking water, medical help, clothing and blankets were in short supply at the camps.[125] At least another 100 camps were denied government support, according to a camp organiser.[126] and relief supplies were prevented from reaching the camps over fears that they may be carrying arms.[127]

Relief camp organisers alleged that the state government was coercing refugees to leave relief camps, with 25,000 people made to leave eighteen camps that were shut down. Following government assurances that camps would not be shut down, the Gujarat High Court bench ordered that camp organisers be given a supervisory role to ensure that the assurances were met.[128]

On 23 May 2008, the Union Government announced a 320 crore rupee (US $ 80 million) relief package for the victims of the riots.[129]

[edit]Media coverage

Covering the first major communal riots following in the advent of satellite television to India, television news channels set a precedent by identifying the community of those involved in the violence, breaking a long-standing practice.[130]

Critical reporting on the Gujarat government's handling of the situation helped bring about the Indian government's intervention in controlling the violence.[130] The Gujarat government banned television news channels critical of the government's response. STAR NewsZee NewsAaj TakCNN and local stations were blocked.[130]

The Editorial Guild of India rejected the charge that graphic news coverage aggravated the situation, saying that the coverage exposed the "horrors" of the riots as well as the "supine if not complicit" attitude of the state, helping propel remedial action. The team also faulted Gujarati language papers Gujarat Samachar and the pro-Hindutva Sandesh of distorted and provocative reporting.[130]

The Godhra fire received extensive news coverage until it was overtaken by the subsequent violence and the presentation of the Union budget.[130] Television and newspaper reports, particularly local Gujarati-language media, carried graphic and at times sensationalised images and accounts of the Godhra train fire.[131] S GurumurthyArvind Lavakare and columnist Rajeev Srinivasan argue that news reports emphasised the provocative behaviour of the kar sevaks on the Sabarmathi Express in an effort to rationalise the subsequent mob attack at Godhra and displace blame from the mob on to the kar sevaks.[132][133]

In 2004, the weekly newspaper Tehelka published a hidden camera exposé alleging that a BJP legislator Madhu Srivastava bribed Zaheera Sheikh, a witness in the Best Bakery killings trial.[134] Srivatsava denied the allegation,[135] and an inquiry committee appointed by the Indian Supreme Court drew an "adverse inference" from the video footage, though it failed to uncover evidence that money was actually paid.[136] In a 2007 expose, the newspaper released hidden camera footage of several members of the BJP, VHP and the Bajrang Dal admitting their role in the riots.[137][138] Among those featured in the tapes was the special counsel representing the Gujarat government before the Nanavati-Shah Commission, Arvind Pandya, who resigned from his post after they were made public.[139] While the report was criticised by some as being politically motivated,[140][141][142][143] some newspapers said the revelations simply reinforced what was common knowledge.[138][144][145][146] However there were several inaccuracies in the statements that questioned the sting operation. Babu Bajrani and Suresh Richard in the statements said that Narendra Modi visited Naroda Patiya one day after the massacre to thank them. However official record shows that Naredra Modi didn't visit Naroda Patiya. VHP activist, Ramesh Dave told Tehelka reporter that S.K.Gadhvi, one of the divisional superintendents of Police killed five Muslims in Dariapur area as promised to him. But the official records show that Gadhvi was only posted in Dariapur one month after the riots. During his tenure no such incident took place in Dariapur.[147] The Gujarat government blocked telecast of cable news channels broadcasting the expose, a move strongly condemned by the Editors Guild of India.[148]

The riots were also the subject of a 2004 documentary film by Rakesh Sharma (filmmaker), called Final Solution (Gujarat Riots). The film was denied entry to Mumbai International Film Festival in 2004 due to objections by Censor Board of India, but won two awards at the 54th Berlin International Film Festival (2004)[149]

An interesting observation with regard to media handling of Gujarat riots is that at the time of riots, the media reports had been pointing out the steps taken by Modi administration to curb riots and how even the combined strength of Indian Army which Modi had requested with few hours of riots having broken, and State Police could not control the situation. However, later, the media editorials became critical of Modi, sidelining the facts they'd already published.[150]

[edit]Controversies on the riots

[edit]Atrocities against women

An international fact finding committee formed of experts[who?] from US, UK, France, Germany and Sri Lanka reported, "sexual violence was being used as a strategy for terrorising women belonging to minority community in the state."[151]

Taking a stand decried by the media and other rights groups, Nafisa Hussain, a member of the National Commission for Women accused organisations and the media of needlessly exaggerating the plight of women victims of the riots.[152][153][154] which was strongly disputed as Gujarat did not have a State Commission for Women to act on the ground.[155] The newspaper Tribune reported that "The National Commission for Women has reluctantly agreed to the complicity of Gujarat Government in the communal violence in the state." The tone of their most recent report was reported by the Tribune as "lenient".[156]

[edit]Riot cases controversy

In April 2009, the Special Investigation Team (SIT) setup by the Supreme Court of India to investigate and expedite the Gujarat riot cases submitted before the Court that Teesta Setalvad had cooked up cases of violence to spice up the incidents. The SIT which is headed by former CBI director, R. K. Raghavan has said that false witnesses were tutored to give evidence about imaginary incidents by Setalvad and other NGOs.[157] The SIT charged her of "cooking up macabre tales of killings".[158][159]

The court was told that 22 witnesses, who had submitted identical affidavits before various courts relating to riot incidents, were questioned by SIT and it was found that the witnesses had not actually witnessed the incidents and they were tutored and the affidavits were handed over to them by Setalvad.[158]

The report which was brought to the notice of the bench, consisting of Justices Arijit Pasayat, P Sathasivam and Aftab Alam, noted that the much publicised case of a pregnant Muslim woman Kausar Banu being gangraped by a mob and foetus being removed from sharp weapons, was also cooked up and false.[157][160]

[edit]Popular culture

T. V. Chandran made a trilogy of films based on the aftermaths of Gujarat riots. The trilogy consists of Kathavasheshan (2004),Vilapangalkkappuram (2008) and Bhoomiyude Avakashikal (2012). The narrative of all these films begin on the same day, 28 February 2002, that is, on the day after the Godhra train burning. The protagonist of Kathavasheshan, after reading about the violent incidents that occurred during the riots, decides to commit suicide, "out of shame of being alive in India after Gujarat". The protagonist inVilapangalkkappuram runs away from Gujarat on the same day after her family members are murdered, to seek refuge somewhere else. Bhoomiyude Avakashikal is about a Malayali youth who is driven away from Ahmadabad following the riots and who eventually loses his job and even his identity only to land up somewhere in Kerala where he lives in a Basheerian abode conversing with insects and animals.[161]

[edit]See also

[edit]References

  1. a b c "790 Muslims, 254 Hindus perished in post-Godhra".Times of India (India). 11 May 2005. Retrieved 4 February 2011.
  2. ^ India Godhra train blaze verdict: 31 convicted BBC News, 22 February 2011.
  3. a b c d The Godhra conspiracy as Justice Nanavati saw itThe Times of India, 28 September 2008. Retrieved 2012-02-19.Archived 21 February 2012.
  4. a b c Godhra case: 31 guilty; court confirms conspiracyrediff.com, 22 February 2011 19:26 IST. Sheela Bhatt, Ahmedabad.
  5. ^ "790 Muslims, 254 Hindus perished in post-Godhra". BBC News. 13 May 2005. Retrieved 4 February 2011.
  6. ^ [1] Gujarat Govt website document.
  7. ^ "'Post-Godhra toll: 254 Hindus, 790 Muslims'"Archivedfrom the original on 27 September 2009. Retrieved 25 September 2009.
  8. ^ "rediff.com: Vajpayee to visit two relief camps in Ahmedabad"Archived from the original on 27 September 2009. Retrieved 25 September 2009.
  9. ^ Allan D. Cooper. The Geography of Genocide. 2009, page 183-4
  10. ^ T. K. Oommen Reconciliation in post-Godhra Gujarat: the role of civil society. 2008, page 71
  11. ^ Varadarajan, Siddharth (23 January 2005). "The truth about Godhra"The Hindu (Chennai, India). Retrieved 4 February 2011.
  12. ^http://indiatoday.intoday.in/story/Godhra+carnage+a+conspiracy:+Nanavati+report/1/16270.html
  13. ^ "Call for calm after Indian train attack". CNN. 27 February 2002. Retrieved 4 February 2011. "Scores killed in India train attack". BBC News Online. 27 February 2002. Retrieved 4 February 2011.Killed, One (27 February 2002). "Shoot-at-sight orders, curfew in Godhra". Times of India. Retrieved 4 February 2011.
  14. ^ "Godhra report tabled, Narendra Modi gets clean chit". Indian Server. September 2008. Retrieved 4 February 2011.
  15. ^ Banerjee panel illegal: Gujarat HC Indian Express – 13 October 2006
  16. ^ Bannerjee Committee illegal: High Court The Hindu – 14 October 2006
  17. ^ "Politics/Nation"The Times Of India (India). 22 February 2011. Retrieved 22 February 2011.
  18. ^ Sabarmati Express fire was pre-planned: Godhra reportTimes of India – 26 September 2008
  19. ^ September 2008%203:22:00%20PM Godhra case: Nanavati panel gives clean chit to Modi NDTV – 25 September 2008. Retrieved 5 December 2009 Archived 16 May 2009.
  20. ^ "Godhra panel: Plea to summon Modi"Deccan Herald(India). 1 September 2007. Archived from the original on 22 January 2009.
  21. ^ "Modi wanted Godhra bodies to come to A'bad"Times of India (India). 22 August 2004. Retrieved 4 February 2011.
  22. ^ "VHP-sponsored bandh begins in Gujarat; one killed in Baroda". Rediff News. 28 February 2002. Retrieved 4 February 2011.
  23. a b Celia W. Dugger (27 July 2002). "Religious Riots Loom Over Indian Politics"New York Times. Retrieved 4 February 2011.
  24. ^ 'Carnage was pre-planned' Daily Pioneer – 23 February 2011[dead link]
  25. ^ Godhra: 11 get death, 20 life; parties to move HC IBN – 1 March 2011
  26. ^ Mob sets fire to Wakf board office in Gujarat secretariat, Sheela Bhatt, 28 February 2002, Godhra
  27. ^ "Shoot orders in many Gujarat towns, toll over 200"The Hindu (Chennai, India). 2 March 2002. Retrieved 10 May 2011.
  28. a b Figure reported by the Gujarat additional director general of police to the Election Commission, T K Oommen (2005). Crisis and Contention in Indian Society. Sage Publications. pp. 120
  29. a b Paul R. Brass (2005). The Production Of Hindu-muslim Violence In Contemporary India. University of Washington Press. pp. 385–393. ISBN 978-0-295-98506-0.
  30. ^ Christophe Jaffrelot (July 2003). "Communal Riots in Gujarat: The State at Risk?" (PDF). Heidelberg Papers in South Asian and Comparative Politics (South Asia Institute, University of Heidelberg) (17). Retrieved 4 February 2011
  31. a b Dugger, Celia W. 2000 Are Dead In 3-Day Riot Of Revenge In West India New York Times. New York, N.Y.:2 March 2002. p. A1
  32. ^ Smita Narula (April 2002). ""We Have No Orders To Save You" – State Participation and Complicity in Communal Violence in Gujarat". Human Rights Watch. Retrieved 4 February 2011.,"Mob used bulldozer to raze heritage mosque". Indian Exress. 13 March 2002. Retrieved 4 February 2011.
  33. ^ Sanjay Pandey (28 April 2002). "More fall prey to police firings in Gujarat"Times of India (India). Retrieved 4 February 2011.
  34. ^ http://www.hrw.org/news/2002/04/29/india-gujarat-officials-took-part-anti-muslim-violence
  35. a b c d e Attacks on Hindus,Human Rights Watch
  36. ^ Riots hit all classes, people of all faith
  37. ^ "A home for long now just a death trap"Archived from the original on 23 July 2009. Retrieved 21 July 2009.
  38. ^ With no relief, they turn to religious places for shelter,Indian Express. Retrieved 2009-07-21. Archived 23 July 2009.
  39. ^ These figures were reported to the Rajya Sabha by the Union Minister of State for Home Affairs Sriprakash Jaiswal in May 2005. "Gujarat riot death toll revealed". BBC News. 11 May 2005. Archived from the original on 26 February 2009. PTI (12 May 2005). "BJP cites govt statistics to defend Modi". ExpressIndia. Archived from the original on 26 February 2009.PTI (11 May 2005). "254 Hindus, 790 Muslims killed in post-Godhra riots". Indiainfo.com. Archived from the original on 26 February 2009.
  40. ^ "We Have No Orders To Save You". Human Rights Watch. 30 April 2002. Retrieved 4 February 2011.Fernandez, Percy (22 March 2005). "UK reads the riot act to Narendra Modi". Indiatimes. Retrieved 4 February 2011., Brass (2005) pp. 388,
  41. ^ Khan, Saeed (1 March 2009). "Gujarat riot 'missing' declared dead"The Times Of India (India). Retrieved 4 February 2011.
  42. ^ Misra, Leena (16 February 2009). "Gujarat riots toll to go up from 952 to 1,180"The Times Of India (India). Retrieved 4 February 2011.
  43. ^ Oommen (2005), pp. 120
  44. ^ "Where is normalcy? Curfew still on"Times of India (India). 25 March 2002. Retrieved 4 February 2011.
  45. ^ Dugger, Celia W. Hindu Rioters Kill 60 Muslims in India New York Times. New York, N.Y.:1 March 2002.
  46. a b Police officials led Hindu attackers: HRW report on Muslims' massacre in GujaratDawn, 30 April 2002
  47. ^ Rahul Bedi (4 March 2002). "Soldiers 'held back to allow Hindus revenge'". London: The Telegraph. Retrieved 4 February 2011.
  48. ^ "Gill is Modi's Security Adviser"The Tribune (India). 2 May 2002. Retrieved 4 February 2011.
  49. ^ Kingshuk Nag (29 April 2002). "Disquiet among Gujarat police"Times of India (India). Retrieved 4 February 2011.
  50. ^ "Modi Punishes good officers". Ahmedabad.com (Republished from The Asian Age). 26 March 2002. Archived from the original on 27 March 2008.
  51. ^ BBC UK Website
  52. ^ BJP cites govt statistics to defend Modi
  53. ^ Truth in Gujarat by Balbir Punj[dead link]
  54. ^ Modi vs BJP The Indian Express – 8 December 2007
  55. a b Gujarat riots: Teesta Setalvad's plea for SIT report rejected
  56. ^ http://www.rediff.com/news/2008/sep/27godhra.pdf
  57. ^ "Indian MPs back Gujarat motion". BBC News. 6 May 2002. Retrieved 4 February 2011.
  58. ^ International Religious Freedom Report 2003. By theUnited States Department of State. Retrieved 19 April 2007.
  59. ^ United States Commission on International Religious Freedom"Countries of Particular Concern: INDIA". Archived from the original on 25 December 2007. Retrieved 26 March 2008.
  60. ^ Persecution of Hindus — 1 (USA)http://afreusa.wordpress.com/2012/06/13/persecution-of-hindus-1-usa/
  61. ^ Citizens’ tribunal to investigate Godhra carnage, communal riots, Express News Service, Monday, 1 April 2002, Ahmedabad.
  62. ^ Gujarat Carnage-Role of Narendra Modi, Ram Puniyani, 2 May 2009, tehelka.com
  63. ^ Leads From Purgatory, Darshan Desai, 2 December 2002, Outlook Magazine.
  64. ^ Ramachandran, Rajesh. "Cong silent on cadres linked to Guj riots"Times of India.
  65. ^ No police lapse in Gujarat riots: Justice Nanavati Rediff – 18 May 2003
  66. ^ "Godhra probe: No evidence of lapse against govt"Times of India (India). 19 May 2003. Retrieved 4 February 2011.
  67. ^ "3 organisations withdraw from Godhra hearings"Times of India (India). 16 June 2003. Retrieved 4 February 2011.
  68. ^ "I didn't say so, says Nanavati"The Indian Express (India). 19 May 2003. Retrieved 4 February 2011.
  69. ^ Gujarat Officials Took Part in Anti-Muslim Violence, Human Rights Watch
  70. a b "Court orders Gujarat riot review". BBC News. 17 August 2004. Retrieved 4 February 2011.
  71. a b "Gujarat riot cases to be reopened". BBC News. 8 February 2006. Retrieved 4 February 2011.
  72. ^ "NGO says Gujarat riots were planned". BBC News. 19 March 2002. Retrieved 4 February 2011.
  73. ^ Sridhar Krishnaswami (16 September 2004). "U.S. raised Gujarat riots with BJP-led Government"The Hindu (Chennai, India). Retrieved 4 February 2011.
  74. ^ Rosser, Yvette (2003). "Curriculum as Destiny: Forging National Identity in India, Pakistan, and Bangladesh" (PDF).PhD Dissertation (The University of Texas at Austin): Pg. 356.Archived from the original on 11 September 2008. Retrieved 10 September 2008.
  75. ^ It's official: Modi gets clean chit in Gulberg massacre Daily Pioneer - 10 April 2012
  76. ^ "Narendra Modi as encountered in SIT report". DNA India. 10 May 2012. Retrieved 7 August 2012.
  77. ^ "Proceed against Modi for Gujarat riots: amicus". The Hindu. 7 May 2012. Retrieved 5 September 2012.
  78. ^ "No evidence of Modi promoting enmity: SIT". The Hindu. 9 May 2012. Retrieved 5 September 2012.
  79. ^ "Gujarat riot probe panel moves against 41 cops"The Indian Express (India). 9 February 2006. Retrieved 4 February 2011.[dead link]
  80. ^ Discouraging Dissent: Intimidation and Harassment of Witnesses, Human Rights Activists, and Lawyers Pursuing Accountability for the 2002 Communal Violence in Gujarat, Human Rights Watch September 2004
  81. ^ India: After Gujarat Riots, Witnesses Face Intimidation (Human Rights Watch, 23 September 2004)
  82. a b India Amnesty International
  83. ^ Dionne Bunsha, Verdict in Best Bakery caseFrontline, Volume 23 – Issue 04, 25 February – 10 March 2006
  84. ^ Why did Zaheera Sheikh have to lie?,Rediff.com
  85. ^ "A hopeful Bilkis goes public"Deccan Herald (India). 9 August 2004. Retrieved 4 February 2011.
  86. ^ "Second riot case shift". The Telegraph. 7 August 2004. Retrieved 4 February 2011.
  87. ^ "Charges framed in Bilkis case"The Hindu (Chennai, India). 14 January 2005. Retrieved 4 February 2011.
  88. ^ Jeremy Page (23 January 2008). "Rape victim Bilkis Bano hails victory for Muslims as Hindu assailants are jailed for life"The Times (London). Retrieved 4 February 2011.
  89. ^ "All accused in riot case acquitted"The Hindu (India). 26 October 2005. Retrieved 4 February 2011.
  90. ^ "Over 100 accused in post-Godhra riots acquitted". Rediff News. 25 October 2005. Retrieved 4 February 2011.
  91. ^ Rajeev Khanna (28 March 2006). "Sentencing in Gujarat Hindu death". BBC News. Retrieved 4 February 2011.
  92. ^ "Hindus jailed over Gujarat riots". BBC News. 30 October 2007. Retrieved 4 February 2011.
  93. ^ PTI (30 October 2007). "Godhra court convicts 11 in Eral massacre case; 29 acquitted". Yahoo! India News. Retrieved 4 February 2011.
  94. ^ "52 acquitted in post-Godhra case". Rediff News. 22 April 2006. Retrieved 4 February 2011.
  95. ^ Katharine Adeney (2005). "Hindu Nationalists and federal structures in an era of regionalism". In Katharine Adeney, Lawrence Sáez (Eds.). Coalition Politics And Hindu Nationalism. Routledge. p. 114. ISBN 978-0-415-35981-8
  96. ^ Paranjoy Guha Thakurta, Shankar Raghuraman (2004). A Time of Coalitions: Divided We Stand. Sage Publications. p. 123. ISBN 978-0-7619-3237-6.
  97. ^ "Pota Review Committee Gives Opinion On Godhra Case To POTA Court". Indlaw. 21 June 2005. Archived from the original on 26 May 2006.
  98. a b Indian court sentences 31 Hindus to life in prison for killing dozens of Muslims 9 years ago – The Washington Post, 9 November 2011. Retrieved 12 November 2011.
  99. ^ "India convictions over Gujarat Dipda Darwaza killings". BBC News. 30 July 2012. Retrieved 31 July 2012.
  100. ^ Lakshmi, Rama (29 August 2012). "Indian court convicts former state minister in deadly 2002 anti-Muslim riots". The Washington Post. Retrieved 29 August 2012.
  101. ^ The Hindu : Probe panel appointed
  102. ^ Modi succumbs to pressure, Nanavati put on Shah panelThe Indian Express – 21 May 2002
  103. ^ Former Supreme Court judge joins Gujarat probe The Hindu – 23 May 2002
  104. ^ cong, cpm slam Nanavati report for reinforcing 'communal bias.' Times of India. 28 September 2008.
  105. ^ National Human Rights Commission Archived 24 June 2007 at WebCite
  106. ^ "India train fire 'not mob attack'". BBC News. 17 January 2005. Retrieved 4 February 2011.
  107. ^ Press Trust of India (13 October 2006). "Banerjee panel illegal: Gujarat HC". Express India. Retrieved 4 February 2011.
  108. ^ "HC terms Sabarmati Express panel illegal"The Financial Express. 14 October 2006. Retrieved 4 February 2011.
  109. ^ "Report of Concerned Citizens indicts Modi govt for riots".Times of India (India). 21 November 2002. Retrieved 4 February 2011.[dead link]
  110. ^ "Now citizens' tribunal pins Modi for riots"The Indian Express (India). 22 November 2002. Retrieved 4 February 2011.
  111. ^ "Concerned Citizens Tribunal – Gujarat 2002: An inquiry into the carnage in Gujarat". Sabrang. Retrieved 4 February 2011.
  112. ^ Khozem Merchant (12 April 2002). "Hindu hardliners rally round Gujarat leader"Financial Times. Retrieved 4 February 2011.
  113. ^ "Removal of Advani, Modi sought"The Hindu (Chennai, India). 7 March 2002. Retrieved 4 February 2011.
  114. ^ "Gujarat chief minister resigns". BBC News. 19 July 2002. Retrieved 4 February 2011.
  115. ^ Amy Waldman (7 September 2002). "2 Indian Elections Bring Vote Panel's Chief to Fore"New York Times. Retrieved 4 February 2011.
  116. ^ Mark Tully (27 August 2002). "India's electoral process in question". CNN. Retrieved 4 February 2011.
  117. ^ Plan to kill Modi, Togadia unearthed; 3 held Rediff – 30 August 2002
  118. ^ Lashkar responsible for temple attack,Rediff.com
  119. ^ Gunmen Attack Hindu Temple in Gujarat,ict.org[dead link]
  120. ^ NSG commandos rush to Gandhinagar
  121. ^ ;ISI instigated Akshardham attack: Gujarat police,Rediff.com
  122. ^ "Gujarat victory heartens nationalists". BBC News. 15 December. Retrieved 4 February 2011.
  123. ^ Dugger, Celia W. Ahmedabad Journal – In India, a Child's Life Is Cheap Indeed New York Times. New York, N.Y.:7 March 2002
  124. ^ 254 Hindus, 790 Muslims killed in post-Godhra riots[dead link]
  125. ^ Ruchir Chandorkar (2 July 2002). "Rains, epidemic threaten relief camps". Times of India. Retrieved 4 February 2011.
  126. ^ Priyanka Kakodkar (15 April 2002). "Camp Comatose". Outlook. Retrieved 4 February 2011.
  127. ^ NGO says Gujarat riots were planned
  128. ^ "Govt not to close relief camps"Times of India (India). 27 June 2002. Retrieved 4 February 2011.[dead link]
  129. ^ "Relief for Gujarat riot victims"BBC News (BBC). 23 May 2008. Retrieved 11 September 2008.
  130. a b c d e Sonwalkar, Prasun (2006). "Shooting the messenger? Political violence, Gujarat 2002 and the Indian news media". In Cole, Benjamin. Conflict, Terrorism and the Media in Asia. Routledge. pp. 82–97. ISSN 0415351987
  131. ^ Sevanti Ninan (28 April 2002). "An ounce of image, a pound of performance"The Hindu (Chennai, India). Retrieved 4 February 2011.
  132. ^ "Madam, will they be shamed by your blunt words?". New India Press. 2 March 2002. Retrieved 4 February 2011.Arvind Lavakare (5 March 2002). "Why 'secular' history repeats itself". Rediff. Retrieved 4 February 2011.
  133. ^ Rajeev Srinivasan (7 March 2002). "Blaming the Hindu Victim: Manufacturing Consent for Barbarism". Rediff News. Retrieved 4 February 2011.
  134. ^ "I Paid Zaheera Sheikh Rs 18 Lakh". Tehelka. 6 December 2007. Archived from the original on 29 May 2009. Retrieved 27 May 2009.
  135. ^ "Politician denies bribing witness". BBC News. 22 December 2004. Retrieved 4 February 2011.
  136. ^ "Zahira sting: MLA gets clean chit"Times of India (India). 4 January 2006. Retrieved 4 February 2011.
  137. ^ "Gujarat 2002: The Truth in the words of the men who did it". Tehelka. 3 November 2007. Retrieved 4 February 2011.
  138. a b "Sting traps footsoldiers of Gujarat riots allegedly boasting about killings with state support"The Indian Express (India). 26 October 2007. Archived from the original on 29 May 2009.
  139. ^ "Gujarat Govt counsel quits"The Indian Express (India). 28 October 2007. Retrieved 4 February 2011.
  140. ^ Tehelka sting a political conspiracy: Shiv Sena The Hindu – 27 October 2007. Retrieved 2009-05-27. Archived 29 May 2009.
  141. ^ Tehelka is Cong proxy: BJP Deccan Herald – 27 October 2007[dead link]
  142. ^ A Sting Without Venom Outlook India – 12 November 2007 issue
  143. ^ Godhra Carnage Vs. Pundits Exodus Asian Tribune – 29 November 2007
  144. ^ Nag, Kingshuk (October 2007). "Polls don't tell whole story".Times of India (India). Retrieved 4 February 2011.
  145. ^ "Ghosts don't lie"The Indian Express (India). 27 October 2007. Retrieved 4 February 2011.
  146. ^ Chitra Padmanabhan (14 November 2007). "Everything, but the news"Hindustan Times (India). Retrieved 4 February 2011.
  147. ^http://indiatoday.intoday.in/story/Gujarat:+The+noose+tightens/1/1716.html
  148. ^ "Editors Guild condemns Gujarat action"The Hindu(Chennai, India). 30 October 2007. Retrieved 4 February 2011.
  149. ^ The Hindu Tuesday, 17 February 2004
  150. ^ 'Measuring Modi's guilt through Media's on eyes India behind the lens - 4 September 2012
  151. ^ Intl experts spoil Modi's party, say Gujarat worse than Bosnia
  152. ^ Women's groups decry NCW stand Archived 22 January 2009 at the Wayback Machine
  153. ^ Web-archive of above, from tehelka.com
  154. ^ Gujarat's women were victims of extreme violence[dead link]
  155. ^http://www.fisiusa.org/fisi_News_items/Godhra/godhra093.htmArchived 22 January 2009 at the Wayback Machine
  156. ^ NCM rejects Gujarat report:Directs state to follow its recommendations
  157. a b NGOs, Teesta spiced up Gujarat riot incidents: SIT
  158. a b Setalvad in dock for 'cooking up killings' Setalvad in dock for 'cooking up killings' – Economic Times. Retrieved 2009-05-11. Archived 14 May 2009.
  159. ^ "Gujarat riot myths busted"Archived from the original on 14 May 2009. Retrieved 11 May 2009.
  160. ^ Inhuman rights India Today – 25 March 2010
  161. ^ C. S. Venkiteswaran (4 October 2012). "All things bright and beautiful..."The Hindu (thehindu.com). Retrieved 28 October 2012.

[edit]External links

[edit]Bibliography

No comments:

Post a Comment