চলে গেলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
বাংলা সাহিত্যের নন্দিত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় গতরাতে কোলকাতায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে দক্ষিণ কোলকাতায় নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই হৃদরোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
প্রয়াত লেখকের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, তাঁর ছেলে এখন বিদেশে অবস্থান করছেন। তিনি কলকাতায় আসলেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
মি: গঙ্গোপাধ্যায়ের মরদেহ এখন হিমঘরে রাখা হয়েছে। বাংলা সাহিত্যের তুমুল জনপ্রিয় এই লেখক পশ্চিম বাংলার পাশাপাশি বাংলাদেশেও সমান জনপ্রিয়।
ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রয়াণকে 'বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের পতন' বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, "এর ফলে যে শূন্যতার সৃষ্টি হলো তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। আমি গভীর শোকাহত। তিনি ছিলেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি বুদ্ধিজীবী।"
উপন্যাসের পাশাপাশি ছোটগল্পকার এবং কবি হিসেবেও সমাদৃত ছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর সাহিত্যে সহজ-সরল ভাষায় বর্ণনার মাধ্যমে পাঠকদের আকৃষ্ট করেছেন।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম বাংলাদেশের ফরিদপুরে ১৯৩৪ সালে। কিন্তু মাত্র চার বছর বয়সে তিনি কলকাতায় চলে আসেন।
কলকাতায় বসবাস করলেও বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল এ সাহিত্যিকের।
১৯৫৩ সাল থেকে তিনি কৃত্তিবাস নামে একটি কবিতা পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯৫৮ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'একা এবং কয়েকজন' এবং ১৯৬৬ সালে প্রথম উপন্যাস 'আত্মপ্রকাশ' প্রকাশিত হয়।
উপমহাদেশের ইতিহাসকে উপজীব্য করে তার উপন্যাস 'পূর্ব-পশ্চিম', 'সেই সময়' এবং 'প্রথম আলো' বাংলাদেশ এবং কোলকাতার পাঠক মহলে বেশ আলোড়ন তুলেছিল।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বেশ কিছু কাহিনী চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। তার মধ্যে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত 'অরণ্যের দিনরাত্রি' এবং 'প্রতিদ্বন্দ্বী' উল্লেখযোগ্য।
No comments:
Post a Comment