তদন্ত দুই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধেও | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
কোটি টাকার বেশি নগদে ড্রাফ্ট, তৃণমূলের জবাব চাইল কমিশন | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি ও কলকাতা | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিধি ভেঙে খরচের অভিযোগ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়াকে তদন্তের নির্দেশ দিল নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে কৈফিয়ত চেয়ে তৃণমূল নেতৃত্বকেও চিঠি দিয়েছে তারা। সিপিএমের তরফে সম্প্রতি তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কালো টাকা ব্যবহারের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নগদ ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা দিয়ে দু'টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তারা ড্রাফট তৈরি করেছে। সেই টাকা দেওয়া হয়েছে দু'টি বিজ্ঞাপন সংস্থাকে। অথচ ভোটের সময় নগদ টাকার লেনদেন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরও নিয়ম (২০০৯ সালে জারি করা) হল, ৫০ হাজার বা তার বেশি মূল্যের ড্রাফট নগদ টাকা দিয়ে কেনা যাবে না। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করে তার পরেই পে অর্ডার তৈরি করতে হবে। তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো চিঠিতে নির্বাচন কমিশন বলেছে, "জানা গিয়েছে যে, গত ২৩ মার্চ ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়া থেকে ১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকার পে অর্ডার তৈরি করেছে আপনার দল। 'ভিস্যুয়াল অডিও' নামে একটি সংস্থাকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে ২৪ এপ্রিল ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ক থেকে 'এম পাওয়ার গ্লোবাল অ্যাকসেস ইণ্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড'-এর নামে ১০ লক্ষ টাকার পে অর্ডার তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সর্বদলীয় বৈঠকে কমিশন বারবার বলেছিল এবং সব দলকে নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়েছিল যে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নগদ টাকা ব্যবহার করা যাবে না।" এই ঘটনা সম্পর্কে তৃণমূলের বক্তব্য জানতে চেয়েছে কমিশন। তাদের শুক্রবারের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে আজ দিল্লিতে উপ নির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুতসি জানান। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, "চিঠি পেয়েছি। যথাসময়ে জবাবও দেব।" একই ভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক দু'টির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে। কমিশন জানতে চেয়েছে— "রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিধি ভেঙে এবং নির্বাচনী ব্যয় নিয়ে কমিশনের নির্দেশ অমান্য করে কী ভাবে নগদ টাকার বিনিময়ে পে অর্ডার তৈরি করা হল।" 'নিয়ম ভেঙে' যারা ড্রাফট তৈরি করেছে বলে অভিযোগ, সেই ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়ার ১, হেমন্ত বসু সরণি শাখা এবং ইলাহাবাদ ব্যাঙ্কের ২, নেতাজি সুভাষ রোড শাখাকেও আলাদা করে চিঠি পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ওই ব্যাঙ্ক দু'টির কর্তাদেরও শুক্রবারের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার তাঁদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে রাজ্যের যুগ্ম মুখ্য নির্বাচনী অফিসার দিব্যেন্দু সরকার জানান। নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপে স্বাভাবিক ভাবেই 'উল্লসিত' সিপিএম। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটে কালো টাকা ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে প্রচার পর্বের প্রায় শুরু থেকেই সরব তারা। গত কাল রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী গৌতম দেব কমিশনের কাছে এ ব্যাপারে 'সুনির্দিষ্ট তথ্য' দিয়ে নালিশ জানিয়ে এসেছেন। তার পর আজ দিল্লিতে একই অভিযোগ নিয়ে কমিশনের কাছে গিয়েছিলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশির সঙ্গে দেখা করার পরে তিনি বলেন, "কমিশনের দাবি মতো আমরা কালো টাকা সংক্রান্ত আরও তথ্য জমা দিয়েছি।" কলকাতায় সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, "দু'টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে চারটি ২৫ লক্ষ টাকা এবং একটি ২৩ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক ড্রাফট করা হয়েছে নগদ টাকা জমা দিয়ে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। তাঁরা কী তদন্ত করছেন, তা আমরা জানি না। কিন্তু ৪৯,৯৯৯ টাকার বেশি নগদে ব্যাঙ্ক ড্রাফট করা যায় না। কী করে তা করা হল, তা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে তদন্ত করে দেখতে হবে। তৃণমূল যে ভোটে কালো টাকার ব্যবহার করছে, এটাই তার প্রমাণ। এই ড্রাফটের টাকায় তৃণমূলের অডিও প্রচারের বিল মেটানো হয়েছে।" বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ক এবং ইউবিআই— দুই ব্যাঙ্কের কর্তৃপক্ষই জানান যে, বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। কী পরিস্থিতিতে ওই পে অর্ডার মঞ্জুর করা হয়েছে, তা তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। ইউবিআই-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভাস্কর সেন বলেন, "সাধারণত আমাদের ব্যাঙ্কে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অঙ্কের ক্ষেত্রে নগদ টাকা জমা নিয়ে পে অর্ডার ইস্যু করা হয়। টাকার অঙ্ক তার বেশি হলে প্রথমে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিয়ে তার পর পে অর্ডার ইস্যু করাই প্রথা। এই ক্ষেত্রে অত টাকার পে অর্ডার ওই ভাবে আমাদের ব্যাঙ্ক আদৌ ইস্যু করেছে কিনা অথবা করে থাকলে কী পরিস্থিতিতে তা করেছে, তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।" ইলাহাবাদ ব্যাঙ্কের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর এম আর নায়ক বলেন, "বিষয়টি আমার জানা নেই। খতিয়ে দেখে তার পরই প্রতিক্রিয়া জানাতে পারি।" সিপিএম সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক দু'টি গোড়ায় নগদ টাকা নিয়ে ড্রাফট তৈরি করা যাবে না বলে জানিয়েছিল। কিন্তু পরে তৃণমূলের এক নেতা প্রভাব খাটিয়ে ওই লেনদেনে তাদের বাধ্য করেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, বিষয়টি সামনে আসার পরে প্রথমে আয়কর দফতর তা খতিয়ে দেখে। তাদের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই তৃণমূল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক দু'টিকে অবিলম্বে নোটিস পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্তকে।
|
Thursday, April 28, 2011
কোটি টাকার বেশি নগদে ড্রাফ্ট, তৃণমূলের জবাব চাইল কমিশন http://anandabazar-unicode.appspot.com/proxy?p=28raj1.htm
http://anandabazar-unicode.appspot.com/proxy?p=28raj1.htm
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment