Thursday, February 14, 2013

রাজনীতির বলি এবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার। পার্ক সার্কাস ধর্ষণ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী যখন সাজানো কেস বলেছিলেন, দময়ন্তী সেন তদন্ত করে সত্যানুসন্ধ্যানে নেমেছিলেন। তাঁকে তখন সরানো হয়। এখন তাঁকে আবার দার্জিলিং পাঠানো হয়েছে। এবার তাহলে পচনন্দার যাত্রা শুরু হল। ওপার বাংলায় দেখুন বাঙ্গালি বলতে কি বোঝায়। এপার বাংলায় ত আমরা সবাই মাননীয় তৃণমুল সাংসদ কবীর সুমনের ভাষায় দলদাস হয়ে গেলাম। এত বিতর্ক চ্যানেলে চ্যানেলে, সবাই বিশেষজ্ঞ। তাহলে বরং এক কাজ করলে হয়, ভোটটাও ওরাঁ দিয়ে দিন। রাজনীতির হাঙ্গামায় আমরা ত জীবন জীবিকা আচ্ছন্ন করা এই নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে কিছুই দেখতে পারছি না। সারা দেশে কি চলছে, কিছুই জানতে পারছি না। করপোরেট রাজের অব্যাহত গণহত্যাঅভিযানের বিরুদ্ধে কি বলব, নীতি নির্ধারণ সম্পর্কে কোন খবর আমরা পাই না। রাত দিন সারা দিন স্থানীয় রাজনীতি আর ক্ষমতা দখলের লড়াই। ঘর থেকে বোরোলেই নিরাপত্তাহীনতা। হিংসা ও সন্ত্রাসের এই পরিবেশে আমরা পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালিরা কবন্ধের মত দিন যাপন করছি। তবে মওকা পেলেই হাততালি দিতে হাত দুখানা খোলা আছে। ছিঃ, বাঙ্গালি বলে পরিচয় দিতে লজ্জা হয় না? পলাশ বিশ্বাস


রাজনীতির বলি এবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার। পার্ক সার্কাস ধর্ষণ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী যখন সাজানো কেস বলেছিলেন, দময়ন্তী সেন তদন্ত করে সত্যানুসন্ধ্যানে নেমেছিলেন। তাঁকে তখন সরানো হয়। এখন তাঁকে আবার দার্জিলিং পাঠানো হয়েছে। এবার তাহলে পচনন্দার যাত্রা শুরু হল। ওপার বাংলায় দেখুন বাঙ্গালি বলতে কি বোঝায়।  এপার বাংলায় ত আমরা সবাই মাননীয় তৃণমুল সাংসদ কবীর সুমনের ভাষায় দলদাস হয়ে গেলাম। এত বিতর্ক চ্যানেলে চ্যানেলে, সবাই বিশেষজ্ঞ। তাহলে বরং এক কাজ করলে হয়, ভোটটাও ওরাঁ দিয়ে দিন। রাজনীতির হাঙ্গামায় আমরা ত জীবন জীবিকা আচ্ছন্ন করা এই নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে কিছুই দেখতে পারছি না। সারা দেশে কি চলছে, কিছুই জানতে পারছি না। করপোরেট রাজের অব্যাহত গণহত্যাঅভিযানের বিরুদ্ধে কি বলব, নীতি নির্ধারণ সম্পর্কে কোন খবর আমরা পাই না। রাত দিন সারা দিন স্থানীয় রাজনীতি আর ক্ষমতা দখলের লড়াই। ঘর থেকে বোরোলেই নিরাপত্তাহীনতা। হিংসা ও সন্ত্রাসের এই পরিবেশে আমরা পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালিরা কবন্ধের মত দিন যাপন করছি। তবে মওকা পেলেই হাততালি দিতে হাত দুখানা খোলা আছে। ছিঃ, বাঙ্গালি বলে পরিচয় দিতে লজ্জা হয় না?

পলাশ বিশ্বাস


রাজনীতির বলি এবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার। পার্ক সার্কাস ধর্ষণ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী যখন সাজানো কেস বলেছিলেন, দময়ন্তী সেন তদন্ত করে সত্যানুসন্ধ্যানে নেমেছিলেন। তাঁকে তখন সরানো হয়। এখন তাঁকে আবার দার্জিলিং পাঠানো হয়েছে। এবার তাহলে পচনন্দার যাত্রা শুরু হল। 

কাজ করার অপরাধে আবার সরানো হল পুলিশকে। এবার শাসক দলের রোশের মুখে পড়লেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিত কুমার পচনন্দা। বলা বাহুল্য গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জেরে শাসক দলের সঙ্গে তৈরি হওয়া চাপানউতোরের জেরেই এই পরিণতি হল পুলিশ কমিশনারের।

গার্ডেনরিচ কাণ্ডের তদন্তে নেমে প্রবল চাপের মুখে পরে অবশেষে দুষ্কৃতীদের ধরায় উদ্যোগী হয়েছিলেন পচনন্দা। এই কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত, ফিরহাদ হাকিম ঘনিষ্ট, মহম্মদ ইকবালকে গ্রেপ্তার করায় উদযোগী হতেই রোশের মুখে পড়তে হল নগরপালকে। এই খবর জানার পর বহু আইপিএস অফিসারই পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।

এদিন সকালে মৃত এস আই তাপস চৌধরীর বাড়ি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করেন তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানদের সঙ্গে। সেখান থেকেই তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন যে আইন চলবে আইনের পথেই। কিন্তু দিনের শেষ ভাগে এসে প্রশাসনের তরফ থেকে এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই চাঞ্চল্য তৈরি করেছে সব মহলেই।

এর আগে পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের জেরে সরে যেতে হয়েছিল দময়ন্তী সেনকে। তাঁর অপরাধ সরকারের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন তিনি। সেই একই অপরাধে অপরাধী পচনন্দা। বিভিন্ন মহলে এখন একটাই প্রশ্ন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, তবে কি পুলিশকে পঙ্গু করে রাখাই উদ্দেশ্য বর্তমান সরকারের?

সিআইডিকে এই তদন্তের ভার দেওয়া হল। এ এক নজির বিহীন নির্দেশ। কারণ এই ধরনের ঘটনায় স্থানীয় থানার পর কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরেরই তদন্ত করার কথা।

নতুন পুলিশ কমিশনার হলেন সুরজিত্‍ কর পুরকায়স্থ।

আইন আইনের পথে হাঁটবে। অবশেষে এসআইয়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারে সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন মুকুল রায়। সেখানে গিয়ে তাঁদের সমবেদনা জানানোর পরই এই কথাই বললেন তিনি। গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের সঙ্গে হরিমোহন ঘোষ কলেজের ছাত্র ভোটের সম্পর্কের কথা মানতে নারাজ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷ বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, 'হরিমোহন ঘোষ কলেজে শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়নপত্র তোলার কাজ হয়েছে৷ কলেজের ভিতর ছাত্রদের মধ্যে কি মারামারি হয়েছে? কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের একজনও কি নিগৃহীত হয়েছেন?' শিক্ষামন্ত্রীর এই নতুন ব্যাখ্যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে৷

নিহত পুলিশকর্মীর বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, কর্তব্যরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ায় নিহত পুলিশকর্মীর পরিবার ১৫লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ পাবেন। এছাড়া তিনি আরও বলেন, নিহত তাপস চৌধুরির যতদিন চাকরি আছে, সেই চাকরির টাকা পাবেন তাঁর স্ত্রী। তাপস চৌধুরি ছিলেন বাড়ির একমাত্র রোজগেরে। তাঁর স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের পাশাপাশি বৃদ্ধা মা ও এক অন্ধ বোন রয়েছে। বৃদ্ধা মাকে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। পাশাপাশি ঘোষণা করেন, মেয়ে তনুশ্রী চৌধুরিকে পুলিশ বিভাগের ক্লার্ক পোস্টে চাকরি ও ছেলে তমালের উচ্চতর পড়াশোনার দায়িত্ব নেবে সরকার। এভাবেই পরিবারের পাশে থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

সেদিনের ঘটনায় ১২জনকে গ্রেপ্তার করা হলেো বহাল তবিয়তে রয়েছে মহম্মদ ইকবাল। যিনি পুরো ঘটনার পিছনে প্ররোচনা দিয়েছে বলে দাবি। তাঁর নাম এফআইআর-এ খাতায় নেই। তাঁকে প্রথম থেকেই আড়াল করা চেষ্টা করেছেন পুরমন্ত্রী। এপ্রসঙ্গে রাজ্যপাল নাম না করেই পুরমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, 'আইন আইনের পথে চলবে'। 


গার্ডেনরিচে গুলিকাণ্ডের উল্লেখ না করলেও, তাঁর ভাষণে ওই ঘটনাকে কংগ্রেস ও সিপিএমের যৌথ চক্রান্ত বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ খেজুরিতে তাঁর সভামঞ্চটি প্রশাসনিক কর্মসূচির হলেও, স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে তুলোধনা করলেন একই সঙ্গে কংগ্রেস ও তৃণমূলের৷ নাম না করে কড়া সমালোচনা করলেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর৷ কার্যত তাঁকে গুণ্ডা আখ্যা দিয়ে সিপিএমের ভয়ে এক সময় নিজেকে গুটিয়ে রাখতেন বলে কটাক্ষ করেছেন৷ 

মমতা বলেন, 'গণতন্ত্র মানে ডিএম অফিসে গিয়ে গুন্ডামি করা নয়৷ নন্দীগ্রামের ঘটনার সময় এই কংগ্রেস নেতাদের অনেককে ফোন করেছিলাম৷ কিন্ত্ত সিপিএমের ভয়ে তখন তাঁরা ফোনই ধরতেন না৷ এখন তাঁরাই সিপিএমের সঙ্গে চলছেন৷' এর পরই তাঁর মন্তব্য, 'গণতন্ত্র মানে পুলিশকে গুলি করাও নয়৷' মুখ্যমন্ত্রী দুই মন্তব্যের প্রথমটি যদি হয় অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদে জেলাশাসকের দন্তরে অভিযানের নামে কংগ্রেসের 'গুণ্ডামি'র প্রতি কটাক্ষ, তবে দ্বিতীয়টি সম্ভবত কলকাতার গুলি চালনার প্রসঙ্গ৷ এক্ষেত্রে কংগ্রেস-সিপিএমকে একই আসনে বসিয়েছেন তিনি৷ অর্থাত্‍ গুলি চালনার ঘটনাটি কংগ্রেস এবং সিপিএমের যৌথ চক্রান্ত বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যদিও সরাসরি ওই প্রসঙ্গ একবারও উচ্চারণ করেননি৷ এমনকী, মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার সময় ওই বিষয়ে প্রশ্ন করলে কোনও জবাব দেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ 

দুপুর সাড়ে বারোটা। গার্ডেনরিচেকান্ডে নিহত সাব ইম্সপেক্টর তাপস চৌধুরির বাড়িতে বৃহস্পতিবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। সঙ্গে ছিলেন সুজন চক্রবর্তী ও রবীন দেব। 

নিহত এসআইয়ের স্ত্রী ও মেয়ে-ছেলের সঙ্গে কথা বলেন সিপিএম নেতারা। তাঁরা পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বিরোধী দলনেতা দেখা করার পরই নিহত এসআইয়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন।সেখানে পরিবারের পাশে থেকে এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। তিনি বলেন, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যত্নবান হওয়া উচিত্‍। ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের নাম এফআইআর-এ থাকলে অবিলম্বে গ্রেফতার করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

বাড়িতে রাজ্যপাল ও বিরোধীনেতাদের দেখে শোকস্তব্ধ, শান্ত পরিবেশ ভেঙে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত আসআইয়ের স্ত্রী ও কন্যা। দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক- রাজ্যপালের কাছে কাতর আবেদন জানান নিহত পুলিশকর্মীর স্ত্রী।















ওপার বাংলায় দেখুন বাঙ্গালি বলতে কি বোঝায়।  এপার বাংলায় ত আমরা সবাই মাননীয় তৃণমুল সাংসদ কবীর সুমনের ভাষায় দলদাস হয়ে গেলাম। 

ঢাকা: পুলিশ ও ইসলামি ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষ জারি বাংলাদেশে৷ বুধবার দু'পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে পুনরায় সংঘর্ষ হয়৷ বৃহস্পতিবারের ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন জন পুলিশ সহ অন্তত ৩০ জন৷ গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১০ জনকে৷

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইসলামি ছাত্রশিবিরের কর্মীরা কাটাখালি পৌরসভার সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের উপর গাছির গুঁড়ি ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান৷ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং ওই সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলে পুলিশকে লক্ষ করেও পাথর ও শেল ছোড়া হয়৷ পুলিশও রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে৷ দু'পক্ষের এই সংঘর্ষে আহত হন মতিহার থানার ওসি আবদুস সোবহান সহ তিন পুলিশ কর্মী৷ আহত হন এক চিত্রসাংবাদিকও৷ অন্য দিকে, শিবিরকর্মীদের দাবি, এই সংঘর্ষে তাদের কমপক্ষে ২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷

১৯৭১এ বাংলাদেশি মুক্তযুদ্ধে কমপক্ষে ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটে৷ ধর্ষিতা ও নিগৃহীতা হন একাধিক নারী৷ প্রায় ন'মাসের এই সংঘর্ষে অভিযুক্ত জামাত-ই-ইসলামির একাধিক নেতা৷ ২০১০ সালে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে প্রায় দু'বছরেরও বেশি কাল ধরে এঁদের বিচার চলছে৷ গত সপ্তাহেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় প্রবীণ নেতা আবদুল কাদের মোল্লার৷ এর প্রতিবাদেই গত সপ্তাহ থেকে ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন জামাত-ছাত্রশিবিরের কর্মীরা৷ 

বাংলাদেশের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জামাত-ই -ইসলামির লাইসেন্স বাতিল করার আইন খতিয়ে দেখছে নির্বাচন কমিশন৷ইতিমধ্যেই উচ্চ আদালত জামাতকে স্বাধীনতা বিরোধী দল হিসেবে ঘোষণা করেছে৷ বৃহস্পতিবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানান, উচ্চ আদালত জামাতের লাইসেন্স বাতিলের কোনও নির্দেশ দিলে কমিশন তা পালন করবে৷ এছাড়া, সরকার যদি আইন করে জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, তবে কমিশন তার লাইসেন্স বাতিল করবে৷ যদিও আইনি প্রক্রিয়ায় লাইসেন্স বাতিল সময়সাপেক্ষ বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷

একই দিনে, ঢাকার দিয়াবাড়ি এলাকায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে নিহত হয়েছে তিন ডাকাত৷ গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, ডাকাতের একটি দল দিয়াবাড়ি এলাকায় ট্রান্সফর্মার চুরি করতে জড়ো হচ্ছে বলে খবর পেয়ে হানা দেয় পুলিশ৷ গুলি বিনিময়ে আহত তিন জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷ গ্রেপ্তার হয়েছে ছ'জন৷ - সংবাদসংস্থা

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালে জাগ্রত তারুণ্যের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকার শাহবাগের চৌরাস্তার মহাসমাবেশস্থল থেকে সারা বাংলাদেশে। যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষিত হয়েছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক। এ বিচার মানছে না মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিপ্লবী তারুণ্য। যারা একাত্তরের বর্বর হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতা দেখেনি তারা এবার জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব দেখেছে মারমুখী পুলিশের উপর নির্মম আক্রমণ, ভাংচুর, অতর্কিত হামলার মাধ্যমে। রাজনীতিবিদরা যখন ব্যর্থ হয় তখন তারুণ্যের প্রতিবাদের বিস্ফোরণ ঘটে জাতীয়ভাবে। এভাবে জাতি রক্ষা পেয়ে যায়। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে রক্ত দিয়েছিল তরুণরা মাতৃভাষা রক্ষার্থে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতা এনেছে এবং বিজয় হয়েছে। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানেও রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করেছে এবং স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে। তাদের উত্তাল আন্দোলন এখন দেশব্যাপী জনগণের মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়েছে। অপ্রতিরোধ্য এ চেতনার বিজয় সময়ের ব্যাপার মাত্র। সব যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসির দাবিতে এবং তারুণ্যের প্রতিবাদে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে শাহবাগ স্কোয়ার। তারা সমস্বরে দাবি করছে: সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তাদের কণ্ঠে উদ্ধৃত হচ্ছে অমর একুশের কালজয়ী পংক্তিমালা: 'কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি'। এ শ্ল্লোগান ধ্বনিত হচ্ছে উপস্থিত জনতার মুখে মুখে। শাহবাগ স্কোয়ারের চৌরাস্তা থেকে শিশুমেলা, কাঁটাবন, টিএসসি চত্বর এবং রূপসী বাংলা মোড় পর্যন্ত তরুণরা দিনরাত সমবেত হয়ে উত্তাল করে তুলেছে মহাসমাবেশটি। তাদের আন্দোলন তত্পরতা সরাসরি বিভিন্ন চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে। এ আন্দোলনে বিজয়ী না হয়ে তারা ঘরে ফিরবেন না। লাখো জনতার অংশগ্রহণের ফলে শাহবাগ এলাকা পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে।

দেশজুড়ে এ প্রতিবাদের সমর্থনে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শাহবাগ চত্বর থেকে নতুন করে দেশ রক্ষার ডাক দিচ্ছে তরুণরা। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষের বিপ্লবী শ্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে রাজপথ। রাজধানীবাসীর আন্দোলনের ঠিকানা হয়ে উঠেছে শাহবাগ চৌরাস্তা। মুক্তিযোদ্ধা, কিশোরী, ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে অবুঝ শিশুও অংশ নিচ্ছে নতুন প্রজন্মের বাঁধভাঙ্গা জনসমুদ্রে। বিপ্লবী তারুণ্যের ও গণজাগরণের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে সর্বত্র। পায়ে হেঁটে মানুষ যাচ্ছে এখন 'শাহবাগ স্কোয়ার'-এর দিকে। '৭১-এর ঘাতক কাদের মোল্লার ফাঁসি না হওয়ায় বুকফাটা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ মিরপুরের আলোকদী গ্রামের অনেকে। গৃহিণীরা আসছেন রাতজাগা ও শ্লোগান মুখরিত সন্তানদের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে। শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অনেকে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন পালন করেছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ।

তাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে আসছেন সর্বস্তরের মানুষ। জনসমুদ্রের অসংখ্য ব্যানার আর রাজপথের আল্পনায় পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে সভামঞ্চের প্রাঙ্গণ। ছাত্র-ছাত্রী, সাংস্কৃতিককর্মী ও প্রতিবাদী মানুষের অবস্থানের মাধ্যমে রাজাকারদের প্রতি ঘৃণা ফুটে উঠেছে। উপস্থিত আন্দোলনকর্মীরা আগুন দিচ্ছে রাজাকারদের কুশপুত্তলিকায়। তারা থুতু দিচ্ছে আর জুতো ছুঁড়ে ধিক্কার জানাচ্ছে রাজাকারদের ঘৃণাস্তম্ভে। প্রজেক্টরে দেখানো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। অসংখ্য প্রতিবাদী শ্লোগান, গান আর কবিতা উচ্চারিত হচ্ছে মাইকে। ঢাক- ঢোল, করতালসহ নানা সরঞ্জামের বাদ্যবাজনার তালে তালে চলছে কাদের মোল্লার রায়ের প্রতিবাদ। চারুকলার শিক্ষার্থীরা রাস্তায় এঁকে যাচ্ছেন রাজাকারদের ব্যঙ্গচিত্র। সমস্বরে দাবি জানানো হচ্ছে : 'ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ কর, সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।' রাতব্যাপী ঢাকায় হাজারো মানুষ মশাল হাতে বিক্ষোভ করেছে। সন্ধ্যার পর শাহবাগের পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিপূর্ণ হয়েছে। মোমের প্রদীপের আলোতে অন্ধকার ও কালিমা দূর করার শপথ নিয়েছেন আন্দোলনরতরা। শুক্রবার শাহবাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে মহাসমাবেশ। এ মহাসমাবেশে ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন থেকে শুরু করে সেবা সংস্থাগুলো স্বেচ্ছায় সেবা দিতে এগিয়ে এসেছে। শুকনো খাবার ও পানি বিতরণ করছেন। এ যেন '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। '৭১-এর ঘাতক ও জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে বৃহস্পতিবার রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, ফরিদপুর, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা, মুন্সীগজ্ঞ, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা, নোয়াখালী, রংপুর, সুনামগঞ্জ, বান্দরবান, মাগুরা, দোহার, নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, খাগড়াছড়ি, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর, নরসিংদী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, নড়াইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা, শাবি, ঝিনাইদহ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন, বিক্ষাভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে সাভারে। বাস্তবতা হলো, কাদের মোল্লাসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন শহর থেকে গ্রাম; টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। দেশ আজ বিপ্লবী শ্লোগানে মুখরিত। সপক্ষের দেশপ্রেমিক মানুষ শাহবাগে গিয়ে বিপ্লবীদের সবাইকে মিছিল আর শ্লোগানে উজ্জীবিত হওয়ার জন্য প্রেরণা দিচ্ছেন। এ যুদ্ধে পরাজয়ের কোন সুযোগ নেই। আন্দোলনকারীদের বিজয় অনিবার্য। তাদের কণ্ঠে ক্রমাগত ধ্বনিত হলো: জয়বাংলা/ জয় বাংলাদেশ/বীর বাঙালির হাতিয়ার-গর্জে উঠুক আরেকবার /দালালদের আস্তানা-আপোষের আস্তানা-সমঝোতার আস্তানা ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও/সামপ্রদায়িকতার আস্তানা-রাজাকারের আস্তানা-ইত্যাদি শ্লোগানে উত্তাল ও মুখরিত শাহবাগ চৌরাস্তা। তারা চায় প্রয়োজনে কাদের মোল্লাকে খুন করে জেলে যেতে। তাদের ভাষ্য হলো :'৩৫৫টি খুন ও ধর্ষণ মামলায় যদি ১৪ বছর করে জেল হয় তাহলে একটি খুনের মামলায় হয় প্রায় দুই মাস করে জেল। তাহলে আমরা কাদের মোল্লাকে খুন করে দুই মাস জেলে থাকতে চাই।' তরুণ-তরুণীরা নিজের লেখা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে 'কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই, দিতে হবে দিয়ে দাও' শ্লোগানে মুখর হয়েছে। এ গণআন্দোলনে নামার পর প্রতিবাদে-প্রতিরোধে জ্বলে ওঠার আগুন ঝরছে সবার চোখে মুখে। অনেকেই নিজের মত করে প্রতিবাদী মন্তব্য লিখেছেন; কিন্তু সেইসব মন্তব্যে রাজপথ পরিপূর্ণ হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলছে। সেই লক্ষ্যে কাপড়ের ওপর রাখা হয়েছে কলমও। কে আগে মন্তব্য লিখবেন তা নিয়েও দীর্ঘ লাইন। সংক্ষেপে মন্তব্য লেখার তত্পরতা চলছে। মানবিক আকুতিতে ও ভারাক্রান্ত মন্তব্যে ভরে গেছে কাপড়। সেই কাপড়ে বিপ্লবী মানুষের একটাই দাবি: রাজাকারদের ফাঁসি চাই। কোন আপোষ চলবে না। রাজাকারদের রক্ষায় যারা সহযোগিতা করবে কিংবা আপোষের চেষ্টা চালাবে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে যুব সমাজ। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা শুরু করেছে। সংহতি প্রকাশ করছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সপক্ষের বিভিন্ন সংগঠন। স্বাধীনতাবিরোধীরা '৭১-এর পরে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে সরকার গড়ে তুলেছে। তারা দেশকে জঙ্গিবাদী ও মৌলবাদের রাষ্ট্র বানাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে তরুণ প্রজন্ম যে গণজাগরণ গড়ে তুলেছে তার বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরচক্রও আঘাত হানতে ষড়যন্ত্র করছে। সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তত্পর রয়েছে এব্যাপারে। এ আন্দোলন পরিচালনার ক্ষেত্রে রয়েছে শৃঙ্খলা। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদী মঞ্চে ঘেঁষতে পারছেন না। কারণ যুদ্ধাপরাধের ফাঁসি জাতীয় দাবি। এটি কোন দলীয় দাবি নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতার বিপরীতে অরাজনৈতিক তরুণরা প্রতিবাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে। বিজয় তাদের অনিবার্য। তবে তাদের সঙ্গে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মেডিক্যাল শিক্ষার্থীসহ আরও অনেকে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে তরুণ প্রজন্ম যে আন্দোলন শুরু করেছে তার প্রতি দেশবাসীর সমর্থন রয়েছে। তাই আন্দোলনের বিজয় অনিবার্য। শুধু দেশে নয়, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে দেশ হতে বিশ্বব্যাপী। ফেসবুক, টুইটার প্রতিবাদের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তিগত প্রতিবাদের মাধ্যমে দাবি আদায়ের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি আরব দুনিয়ায় তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমেই স্বৈরশাসকদের ভিত কেঁপে উঠেছিল। কাউকে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। বাংলাদেশেও তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব শুরু হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম আজ প্রযুক্তির মাধ্যমে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তুলেছে। এ জেগে ওঠা আগুনের লেলিহান শিখা ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের শহরে-বন্দরে-গ্রামে। তরুণ প্রজন্ম ফেসবুক, টুইটার আর ব্লগের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে তুলেছে শাহবাগ চৌরাস্তার বিজয়মঞ্চ ও প্রতিবাদ কেন্দ্র। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সংক্ষুব্ধ হয়ে বিবেকের তাগিদে বিগত চারদিন ধরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে। 'ব্লগার এ্যান্ড এ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক' নামের ফেসবুককেন্দ্রিক দলটি টানা প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশের তরুণ সমাজ প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছে। বিবেকের তাগিদে এবং অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে অংশ নিচ্ছে সাধারণ মানুষসহ সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। ২০১৩ সালে জনগণ এখন '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ন্যায় প্রতিবাদী চেতনায় আরেকটি বিজয়ের অপেক্ষায় আন্দোলনরত। 

ঢাকা: জামাতে ইসলামির নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত জনজোয়ারে যেন কায়রোর তাহরির স্কোয়ার হয়ে উঠেছে ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ার।
জামাতের হাঙ্গামা অগ্রাহ্য করে মঙ্গলবার বিকেলে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের শ'তিনেক ছাত্রছাত্রী যে অবস্থান শুরু করেছিল, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বুধবার সারা দিন সেখানে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ অন্তত এক বার হলেও হাজির থাকার চেষ্টা করেছেন। বাবা-মায়ের হাত ধরে এসেছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও। জনপ্রিয় শিল্পী, নাট্যব্যক্তিত্ব, লেখকদের পাশাপাশি এসেছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাও। মঞ্চ তৈরি করে দিন-রাত চলছে গান, নাটক, সিনেমা। সঙ্গে একাত্তরের পরিচিত রাজাকার নেতাদের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান। সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগের মঞ্চ থেকে বুধবারও সারারাত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করা হয়ে। শুক্রবার এখানেই মহাসমাবেশ হবে বলে জানানো হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, যশোর, খুলনা, রাজশাহি, রংপুর, ময়মনসিংহেও অজস্র মানুষ গণহত্যার নায়কদের ফাঁসির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন। 
তাদের নেতাদের বিচার বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার বাংলাদেশ জুড়ে হাঙ্গামা চালানোর পরে বুধবারও হরতালের ডাক দিয়েছিল কট্টর ইসলামি দল জামাতে ইসলামি। সকালে বেশ কিছু জায়গা থেকে তাদের ভাঙচুরের খবর এলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের জোয়ারে তাদের কর্মসূচি কার্যত ভেসে যায়। তার পরেও ঢাকা ও চট্টগ্রামে পুলিশের পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বিজিবি-কেও মোতায়েন রাখা হয়েছে। 
জামাতের ভাঙচুরের ভয়ে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও লঞ্চ ও অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিক ভাবেই চলেছে। ঢাকায় শেয়ারবাজার, ব্যাঙ্ক ও বেশির ভাগ বাজার-দোকান খোলা ছিল। রাস্তায় ছিল প্রচুর রিকশা । তাহরির স্কোয়ারের মতো ঢাকার বিক্ষোভও কাল শুরু হয়েছিল ফেসবুক-টুইটারের মতো স্যোসাল সাইটগুলির প্রচারে। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের এই আন্দোলনই রাত গড়াতে পরিণত হয়েছে গণপ্লাবনে। মিরপুরের 'কসাই' কাদের মোল্লাকে প্রায় সাড়ে তিনশো খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেও ফাঁসির বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। তার প্রতিবাদেই ক্ষুব্ধ মানুষ নেমে এসেছেন ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ারে। তাঁদের দাবি, গোলাম আজম, সাকা চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামি-র মতো গ্রেফতার হওয়া গণহত্যাকারীদের ফাঁসি দিতে হবে। গণসঙ্গীতের পাশাপাশি অবস্থানকারীদের জন্য চাঁদা তুলে খিচুড়ি রাঁধা হয়। মঙ্গলবার রাতেই বেশ কিছু বামপন্থী নেতা শাহবাগ স্কোয়ারে এসে বক্তৃতা দেন, আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন। সরকার-বিরোধী বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আন্দোলনকারী তরুণদের 'এ যুগের মুক্তিযোদ্ধা' আখ্যা দেন। তাঁর অভিযোগ, জামাত ও সরকারের বোঝাপড়ার কারণেই কাদের মোল্লাকে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আওয়ামি লিগের নেতারা সে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে কাজ করছে। আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানান, কাদের মোল্লার প্রাণদণ্ড না হওয়ায় সরকারও হতাশ। তবে সরকার ফাঁসি চেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করছে। দুপুর থেকেই শাহবাগ স্কোয়ারের আন্দেলন ছড়িয়ে যায় দেশজুড়ে। অন্য শহরের পাশাপাশি ঢাকার অন্যত্রও শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ। দেশ জুড়ে এই গণজোয়ারে জামাত যেমন কোণঠাসা, অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে বিএনপি-ও। খালেদা জিয়ার দল জানায়, তারা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। 

এত বিতর্ক চ্যানেলে চ্যানেলে, সবাই বিশেষজ্ঞ। তাহলে বরং এক কাজ করলে হয়, ভোটটাও ওরাঁ দিয়ে দিন

 রাজনীতির হাঙ্গামায় আমরা ত জীবন জীবিকা আচ্ছন্ন করা এই নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে কিছুই দেখতে পারছি না। 

সারা দেশে কি চলছে, কিছুই জানতে পারছি না

 করপোরেট রাজের অব্যাহত গণহত্যাঅভিযানের বিরুদ্ধে কি বলব, নীতি নির্ধারণ সম্পর্কে কোন খবর আমরা পাই না। 

এ এক অদ্ভুত পরিস্থিতি৷ মাসের পর মাস উত্‍পাদন কমছে, কিন্ত্ত জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে৷ উত্‍পাদন না বাড়লে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় না, আয় বাড়ে না৷ অথচ, লোকের হাতে খরচ করার মতো বেশি টাকা না এলে জিনিসপত্র বেশি দামে বিকোয় কী করে? আপাত-বিরোধী হলেও এমনটাই ঘটছে আমাদের দেশে৷ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তর জানিয়েছে, নভেম্বর মাসের পর ডিসেম্বরেও দেশে শিল্পোত্পাদন ২০১১ সালের তুলনায় কমেছে বেশ খানিকটা৷ নভেম্বরে কমেছিল ০.৮ শতাংশ, ডিসেম্বরে কমেছে ০.৬ শতাংশ৷ বস্ত্তত, এপ্রিল ২০১২ থেকে মার্চ ২০১৩ পর্যন্ত ন'মাসের মধ্যে ছ'মাসই শিল্পোত্‍পাদন আগের বছরের তুলনায় কমেছে৷ বেড়েছে কেবল তিন মাস - মে, অগস্ট এবং অক্টোবর৷ অথচ, জুন এবং সেপ্টেম্বর এই দু'মাস বাদ দিলে খুচরো পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি বাড়তে বাড়তে এবছর জানুয়ারিতে ১০.৭৯ শতাংশে পৌঁছেছে৷ এর অর্থ, ২০১২-র জানুয়ারিতে যে জিনিসের দাম ১০০ টাকা ছিল গত মাসে সেই জিনিসেরই দাম বেড়ে হয়েছে ১১০.৭৯ টাকা৷ অথচ, ওই সময় ১০০ টাকা ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানত (ফিক্সড ডিপোজিটে) রাখলে পাওয়া যেত ১০৮ টাকা থেকে ১০৮.৫০ টাকা৷ 

কিন্ত্ত, মজার কথা হল, খুচরো বাজারে জিনিসপত্রের দাম লাগামছাড়া বেড়ে চললেও, পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম কিন্ত্ত কমছে৷ পাইকারি পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি অগস্ট মাসে ৭.৫৫ শতাংশ থেকে পড়তে শুরু করে ডিসেম্বরে ৭.১৮ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে৷ জানুয়ারি মাসের সূচক প্রকাশিত হবে বৃহস্পতিবার৷ অর্থনীতিবিদদের অনুমান, পাইকারি পণ্যে মূল্যবৃদ্ধি জানুয়ারি মাসে ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে৷ জিনিসপত্রের পাইকারি আর খুচরো দামে মূল্যবৃদ্ধির ফারাকটা অনেক৷ এর প্রধাণ কারণ, খুচরো বাজারে আকাশছোঁয়া দাম হচ্ছে শাকসব্জী, মাছ-মাংস, ডাল জাতীয় শস্য, ভোজ্যতেল এবং চিনির৷ 

শিল্প বিনিয়োগ বাড়ছে না, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না৷ ফলে, কমছে আয়৷ গত সন্তাহেই কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দন্তর তাদের পূর্বাভাষে জানিয়েছিল চলতি অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতির বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে, যেটা গত এক দশকে সবচেয়ে কম৷ 

আয় কমলে সরকারের রাজস্ব আদায়ও কমবে৷ চলতি অর্থবর্ষের প্রথম দশ মাসে (এপ্রিল থেকে জানুয়ারি অবধি) সরকারের প্রত্যক্ষ কর বাবদ আয় বেড়েছে মাত্র ১২.৪৯ শতাংশ৷ 

আগামী কয়েক মাসে দেশের অর্থনৈতিক আবহাওয়ার বিশেষ উন্নতির আশা নেই৷ বরং, পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে৷ মূল্যবৃদ্ধি কমাতে অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম আসন্ন বাজেটে বিভিন্ন খাতে ব্যয় সংকোচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ আর্থিক ঘাটতি কমলে টাকার বৈদেশিক মুদ্রায় বিনিময় দর কমবে এবং তার ফলে আমদানি সস্তা হবে৷ এতে জ্বালানি সহ শিল্প সংস্থাগুলির উত্‍পাদন খরচও কমবে, মূল্যবৃদ্ধি কমবে৷ তাই, সকলের নজরে এখন ২৮ ফেব্রুয়ারি৷

ফের যাত্রীভাড়া বাড়তে চলেছে রেলে৷ ডিজেল কেনায় ভর্তুকি উঠে যাওয়ায় ৩,৩০০ কোটি টাকা খরচ বেড়ে গিয়েছে রেলের৷ তাই ভাড়া বাড়িয়ে ওই অতিরিক্ত খরচ তুলতে চায় ভারতীয় রেল৷ রেলসূত্রে জানা গিয়েছে, সবক'টি শ্রেণিতেই যাত্রীভাড়া বাড়তে পারে এবং কিলোমিটার-প্রতি বেশ কয়েক পয়সা করেই৷ 

যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে বর্তমানে ২৫ হাজার কোটি টাকা লোকসানে চলছে রেল৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ২২ ডিসেম্বর ২১ শতাংশ হারে যাত্রীভাড়া বাড়ানো হয় ৬,৬০০ কোটি টাকা ক্ষতি কমাতে৷ কিন্ত্ত ডিজেলের দাম লিটারে ১০.৮০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় রেলের খরচ বছরে ৩,৩০০ কোটি টাকা বেড়ে গিয়েছে৷ 


রাত দিন সারা দিন স্থানীয় রাজনীতি আর ক্ষমতা দখলের লড়াই। 

ঘর থেকে বোরোলেই নিরাপত্তাহীনতা। 

হিংসা ও সন্ত্রাসের এই পরিবেশে আমরা পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালিরা কবন্ধের মত দিন যাপন করছি। তবে মওকা পেলেই হাততালি দিতে হাত দুখানা খোলা আছে। ছিঃ, বাঙ্গালি বলে পরিচয় দিতে লজ্জা হয় না?

কলকাতা: বিচার চেয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ এক ধর্ষিতা কিশোরী৷ উত্তর চব্বিশ পরগনার হাসনাবাদের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী মেয়েটির অভিযোগ, ৯ মাস কেটে গেলেও গ্রেফতার হয়নি ধর্ষণে অভিযুক্তরা৷ মেয়েটির মা জানিয়েছেন, গত বছর ৯মে আমিনা বিবি নামে এক প্রতিবেশী তাঁর মেয়েকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়৷ সেখানে তাকে ধর্ষণ করে সমীর ঘোষ নামে এক যুবক৷ কিশোরীর চিত্কার শুনে পরিজনরা ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে৷ পরিজনদের দাবি, অভিযুক্ত সমীর স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ছেলে৷ ফলে ধরা পড়লেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই ছাড়া পেয়ে যায় সে৷ গ্রেফতার হয়নি আমিনা বিবিও৷ তৃণমূলের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে৷ এরপর সুবিচার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে মন্ত্রী-আমলা এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পর্যন্ত দরবার করেছে কিশোরীর পরিবার৷ কিন্তু কাজ হয়নি বলে অভিযোগ৷ বহাল তবিয়তে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ধর্ষণে অভিযুক্তরা৷ উল্টে এখন মামলা তুলে নিতে তাদের প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷ তাই অভিযুক্তদের সাজার দাবিতে বুধবার রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের দ্বারস্থ হয় ওই কিশোরী ও তার পরিজনরা৷ পরিবারের দাবি, কিশোরীকে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সহ আগামী বুধবার দেখা করতে বলেছেন রাজ্যপাল।

 জনগণ ভোটাধিকার থেকে বন্চিত হলে ল্যাঠা চুকে যায়, রাজনীতি প্রাণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে না। 

আমাদের বাঁচা মরা কিছুই ত আর রাজ্য ও রাজনীতির পর নির্ভর করে না। 

মুক্ত বাজারের বলিস্থলে যতদিন পারি টেনে হিঁচড়ে শান্তিতে বাঁচতে পারি। 

ওবিসি, এসসি ও এসটি গতএকশো বছর ক্ষমতায় না থাকায় আমরা ত দুর্নীতি মুক্ত স্বর্গেই আছি

  স্বর্গে কি গুন্ডা রাজ হয়না?

সমাজবিজ্ঞানী আশিস নন্দী দুর্নীতির জন্য বহুজনসমাজকে দায়ী করেছেন

 হয়ত সুযোগ পেলে বলবেন, করপোরেট, বিল্ডার , প্রোমোটার রাজ, গুন্ডা রাজ এবং আর্থিক সংস্কারের জন্যও বহুজনসমাজ দায়ী। 

অবশ্যই দায়ী

 যাদের কোনো মতামত নেই, যাঁরা শুধু নির্বাক দর্শক, বিনোদনে অভ্যস্ত, অথচ তাঁদেরই ভোটে সরকার যায আসে

 পরিবর্তনও হয়

লালগঢ়, নন্দীগ্রাম,সিঙ্গুর, মুসলিমদের অসন্তোষ আর মতুয়া ভোট না হলে কি পরিবর্তন হয়?

প্রত্যাবর্তনের পথও ত একই

 হিংসা আর সন্ত্রাসে রক্তে ভিজতে থাকবে মাটি

ধর্ষিতা হবে মায়েরা, বোনেরা

মারা যাবে নিস্পাপ শিশুরা

ক্ষমতাদখলের বলি হবে ঝাঁকে ঝাঁকে কিশোর, যুবা

তবেই না পরিবর্তন! থুড়ি প্রত্যাবর্তন!

তার চেয়ে ঢের ভালো, যারা ইস্যু তৈরিতে ওস্তাদ, বিশ্লেষণে অতুলনীয় এবং বিতর্কে মারকাটারি  তাঁরাই পরিবর্তন ও প্রত্যাবর্তনের দায় নিজেধের শক্তিশালী ক্ষমতায়িত স্কন্ধে  তুলে নিয়ে আমাদের রেহাই দিন


 এমন ভোটারদের সন্দিগ্দ্ধ নাগরিক বলে বাতিল করাই বান্ছনীয়

 হাতে গরম নাগরিকত্ব সংশোধন আইন আছে, আধার যোজনা আছে, কযেক লক্ষ বাতিল করলেই হবে। 

এই অবান্ছিত, অপাংতেয়, অস্পৃশ্য বহুজনসমাজকে করপোরেট লোকতন্ত্রের বাইরে ফেললেই যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যায়

 চ্যানেল বন্ধুরা বরং তাই করার ব্যবস্থাই করুন। 

দু চারটে মরিচঝাঁপি হলেই বা কি, কে আর টূঁ শব্দটি করবে?

এমনিতেই রাজনেতিক হিংসায়, সন্ত্রাসে যারা মারা যায় তাঁদের অধিকাংশই ত বহুজনসমাজের নর নারী

সরানো হল কলকাতার পুলিশ কমিশনার আর কে পচনন্দাকে৷ তাঁর জায়গায় নতুন পুলিশ কমিশনার হলেন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সুরজিত্ কর পুরকায়স্থ৷ সূত্রের খবর, গার্ডেনরিচ কাণ্ডে পচনন্দার কঠোর অবস্থান পছন্দ নয় সরকারের৷ তার জেরেই সরতে হল পচনন্দাকে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, এফআইআরে তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার নাম রাখা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত৷ পাশপাশি, তাঁকে গ্রেফতার করতে পচনন্দার তত্পরতাও ভালো চোখে নেয়নি সরকার৷এজন্য তাঁকে কার্যত গুরুত্বহীন এডিজি (সিকিউরিটি) পদে বদলি করা হয়েছে।


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন, ঘটনায় যাদের নাম এফআইআর-এ রয়েছে তাদের এখনও কেন গ্রেফতার করা হয়নি। এজন্যই কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।কিন্তু পুরো ঘটনাক্রমের দিকে নজর রাখলে এবিষয়ে সরকারি তত্পরতার অভাবই দেখা গেছে। গতকালই ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, এই ঘটনায় যাদের গ্রেফতার করার দরকার ছিল তাদের ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আর কাউকে গ্রেফতার করার প্রয়োজন নেই।   একইসঙ্গে ঘটনার তদন্তভার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাত থেকে সিআইডি-কে দেওয়া হল বলে জানা গেছে। যেখানে ইকবাল ও মোক্তারের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে কলকাতা জুড়েই সেখানে হঠাত্ই তদন্তভার সিআইডি-র হাতে দেওয়ায় পুলিশের একাংশ মনে করছে এরফলে তদন্তের গতিপ্রকৃতি ব্যাহত হতে পারে।
সরকারের অভিরুচির বিরুদ্ধে একবারই রুখে দাঁড়িয়ে পদ খোয়াতে হল কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিত কুমার পচনন্দাকে। গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে হিংসার ঘটনায় এস আই তাপস চৌধুরির মৃত্যুর ঘটনায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে নিচুতলার পুলিশকর্মীদের মধ্যে। আগে থেকে হিংসার ইঙ্গিত থাকা স্বত্বেও একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতির মধ্যে নিরস্ত্র অবস্থায় ডিউটি করতে নিচুতলার কর্মীদের বাধ্য করা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তোলেন।  এই অবস্থায় পুলিশের মনোবল বজায় রাখতে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হন কমিশনার। তাঁকে হাসপাতালে নিহত পুলিশ কর্মীর কন্যার প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়। এরপরই গার্ডেনরিচ থানায় গিয়ে অবিলম্বে আততায়ী সুভানকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। পুলিশ গ্রেফতার করে সুভানকে। কিন্তু পুলিশের একাংশের বক্তব্য, গণ্ডগোলে যাঁরা প্ররোচনা দিয়েছিলেন তাঁদের অন্যতম ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর মহম্মদ ইকবাল। ঘটনার ভিডিও ফুটেজে ইকবালকে দেখা গেছে সুভানের পাশেই। এই অবস্থায় ইকবালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোরাল দাবি ওঠে। এই পরিস্থিতিতে দায়ের করা এফআইআরে ইকবালের নাম রাখা হয়। ঘটনার দিন গার্ডেনরিচে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস আশ্রিত মোক্তারের দলবল ইকবালকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। ইকবালকে বাঁচাতে গিয়েই ওই পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এবিপি আনন্দে ঘটনার ফুটেজ প্রকাশিত হতেই সব পরিষ্কার হয়। চাপে পড়ে ইকবালের নাম এফআইআর-এ রাখার পাশাপাশি মোক্তারের নামও রাখা হয়। কিন্তু ইকবালের পাশে দাঁড়ান  ফিরহাদ। বলেন, ইকবাল ঘটনায় জড়িত বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। গার্ডেনরিচ মামলায় ইকবালের গ্রেফতারের সম্ভাবনাও কার্যত খারিজ করে দেন ফিরহাদ। এদিন মৃত এসআই-এর বাড়িতে গিয়ে রাজ্যপাল এম কে নারায়নন ফিরহাদের মন্তব্যের সমালোচনা করেন। তবে এসআই-এর বাড়ির পরিজনদের সঙ্গে দেখা করার পর মুখ্যমন্ত্রী ইকবালের গ্রেফতারি সম্পর্কে একটি কথাও বলেন নি। এরইমধ্যে তিনি বলতে ভুললেন না, এফআইআরে আর কারও নাম থাকা উচিত ছিল৷ কেন নেই, তিনি দেখবেন৷ তবে যাঁদের নাম রয়েছে, অথচ গ্রেফতার হননি, সেবিষয়ে কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কোনও কথা খরচ করেননি৷ যদিও তিনি বলেন, আইন নিজের পথে চলবে৷ আমার এই একটি লাইনই যথেষ্ট৷
এরপরই সন্ধেয় পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। পুলিশ সূত্রে খবর, এফআইআরে তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার নাম রাখা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত৷ পাশপাশি,  ফিরহাদের আপত্তি উপেক্ষা করে তাঁকে গ্রেফতার করতে পুলিশের তত্পরতাও ভালো চোখে নেয়নি সরকার৷ গতকালের পর আজও সারাদিন ইকবালকে ধরতে গার্ডেনরিচ এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ৷ এরইমধ্যে কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে পুলিশ বিভাগে অসন্তোষের ছায়া৷  
উল্লেখ্য, পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ মামলায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেন মুখ্যমন্ত্রীর সাজানো তত্ত্বের বাইরে হেঁটে রহস্য উদ্ঘাটন করার সরকারের রোষের মুখে পড়েছিলেন। তাঁকে একটি গুরুত্বহীন পদে বদলি করা হয়। সেই সময় সরকারের পাশেই ছিলেন পচনন্দা। ভাগ্যের কী পরিহাস-এবার সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে পদ হারাতে হল সেই পচনন্দাকেই।

http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/33573-2013-02-14-14-21-14

গার্ডেনরিচকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা, ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার কাছে পালিয়ে যাওয়া নির্দেশ আসে ঘটনার দিন রাতেই৷ রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইকবালকে সেই নির্দেশ দেন বলে খবর৷ তার আগেই ওই নেতার কাছে পালাবেন কিনা  জানতে চান ইকবাল৷ এবিপি আনন্দর গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই কথোপকথন৷  
ঘটনার পর তখন কেটেছে ৭-৮ ঘণ্টা৷ সকাল থেকে দুপুর প্রকাশ্যে গার্ডেনরিচে দাপাতে দেখা গেলেও সন্ধে নামতেই কিন্তু এলাকায় আর দেখা নেই মহম্মদ ইকবালের৷ 
মহম্মদ ইকবাল৷ ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান৷ বন্দর এলাকার ডাকসাইটে তৃণমূল নেতা৷ 
ঘটনার আগে যিনি ছিলেন আততায়ীর পাশে৷ ঘটনার পরেই যাঁকে দেখা যায় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পাশে৷ সন্ধে নামতেই কোথায় গেলেন তিনি? 
খুঁজতে শুরু করল এবিপি আনন্দর ক্যামেরা৷ 
প্রায় ২ ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর ইকবালের দেখা মিলল বাতিকল এলাকার এক তস্য গলির মধ্যে তৃণমূল কার্যালয়ে৷ ক্যামেরা দেখেই সাফ জানালেন, দলের ওপর মহলের নির্দেশে মুখ খোলা বারণ৷ কী বলতে কী বলবেন, দল অস্বস্তিতে পড়বেন৷
ইকবাল বললেন, 'হাম পাবলিক কা রিপ্রেজেন্টেটিভ হোতে তো আপকো সব বাত বোলতে। লেকিন হম পার্টি কা চেয়ারম্যান হ্যায়। অ্যাজ চেয়ার ম্যান অফ পার্টি, পার্টি কা হাই অথরিটি হম কো জ্যায়সা গাইডলাইন দেগা, হম তো ওহি বোলেঙ্গে আপকো'।
ইতিমধ্যেই ইকবালের কাছে এল ফোন৷ ওপ্রান্তে রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী৷ ফোনে নির্দেশ, কিছুতেই এবিপি আনন্দর কাছে মুখ খোলা যাবে না৷ 
তাঁকে নিয়ে দল যে অস্বস্তিতে পড়েছে তা জানতে পেরেই, মন্ত্রীর সেই সহযোগীর কাছেই মুন্নাভাই জানতে চাইলেন, কী করবেন, পালাবেন?
ইকবাল ফোনে বলছেন, 'সাইলেন্ট হু ইয়ার। কুছ বোল নেহি রহে হ্যায়। ক্যায়া বোল রহে হ্যায়?
আচ্ছা অ্যায়সা করেঁ, ঘর মে বন্ধ হো যায়ে? ক দিন কে লিয়ে বন্ধ হো যায়ে?য্যায়সে বোলিয়ে গা,অ্যায়সাই করেগা, দশ দিন, বিশ দিন, এক মাহিনা।কিতনে দিনো কে লিয়ে?চুপ হো যায়ূঁ? আরে ঠিক হ্যায় ভাই, আপকো বোলা না, ম্যায় সাইলেন্ট হি হুঁ, কিসি কো কুছ নেহি বোল রহা হুঁ।
আপ পতা লগা লিজিয়ে,ফিরহাদ হাকিম সাব কো বোলে, পতা লাগা লে ইঁহা ক্যায়া ম্যায় কিসি কো কুছ বোল রহা হুঁ?
নেহি নেহি, আপ জো বোল রহেঁ হ্যায়,ও ঠিক হ্যায়। আপ ফিরহাদ হাকিম সাব কো বোলিয়ে না, ক্যায়া করে, ভাগ যায়ে ইঁহা সে'?
তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতেই মুন্নাভাইয়ের কাছে পৌঁছে যায় নির্দেশ৷ গা ঢাকা দিতে হবে৷ প্রথমে তাতে রাজি না হলেও বুধবার সন্ধের পরই গা ঢাকা দেন ইকবাল৷ আর সে কারণেই বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় পুলিশ তল্লাশি চালালেও ইকবাল এখনও অধরা৷ 

গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র তোলাকে ঘিরে গোলমালের জেরেই ১২ ফেব্রুয়ারি ওই চত্বরে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কতীদের গুলিতে প্রাণ হারান সাব ইন্সপেক্টর তাপস চৌধুরি৷ স্থানীয় দুই ব্যক্তি আহত অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন৷ মনোনয়নপত্র তোলার আগের রাতে ছাত্র সংঘর্ষের প্রস্ত্ততি হিসাবে বাড়িতে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে আহত হন স্থানীয় কাউন্সিলর রণজিত্‍ শীলের ছেলে অভিজিত্‍ শীল-সহ আরও তিন তৃণমূল সমর্থক৷ এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷ 

প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর সহ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন ছাত্র ভোটের মরশুমে গোলমালের আশঙ্কা নিয়ে ব্রাত্যবাবুর জবাব, 'বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে এর মোকাবিলা করার চেষ্টা করা হবে৷' তবে এই ভোটকে ঘিরে অশান্তি ও হিংসার জেরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই শিক্ষামন্ত্রী এ দিন ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, 'আমরা একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে আছি৷ গণতন্ত্রে এক-এক জনের এক এক রকম মত থাকতেই পারে৷ আমরা সব মত নিয়ে আলোচনা করছি৷ বিরোধীদের মতও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷' সংবাদ মাধ্যমকে কটাক্ষ করে শিক্ষামন্ত্রীর উক্তি, 'আপনাদের মত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ সে তুলনায় সরকারের মত কম গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্তু সেটাও তো একটা মত৷ আমরা সেটা নিয়েও আলোচনা করব৷ তাই অভিন্ন নির্বাচনী বিধি নিজের মতো সময় মেনেই হবে৷ তবে গার্ডেনরিচ-কাণ্ডকে দুর্ভাগ্যজনক, অনভিপ্রেত এবং নিন্দনীয় বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ যদিও কলেজের ছাত্র ভোট নিয়ে ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ 

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিজয় আচার্য জানান, ৩১টি আসনে ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে৷ ১৮ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন জমার শেষ দিন৷ ইতিমধ্যে ১৫৩ টি মনোনয়ন পত্র তুলেছে পড়ুয়ারা৷

 'খুব ভালো প্রকল্প'৷ কিন্ত্ত রাজ্য সরকারের ভাঁড়ে মা ভবানী৷ তাই খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প রূপায়ণে নিজেদের অপারগতার কথা কেন্দ্রকে জানিয়ে দিল রাজ্য৷ 

রাজ্যে গরিবদের সস্তায় চাল-গম পাওয়া ও তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভর্তুকি ও পেনশন, স্কলারশিপের টাকা পাওয়া নিয়ে ঘোর সংশয় দেখা দিল৷ কারণ, অর্থাভাবের জন্য সস্তায় চাল-গম দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার তাদের ভাগের টাকা দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিল৷ আর নীতিগত কারণে দ্বিতীয় প্রকল্পটি রূপায়ণই করবে না তারা৷ ফলে আগামী দিনে কেন্দ্রীয় সরকার গরিবদের জন্য যে দু'টি প্রধান প্রকল্প নিয়ে আসতে চলেছে, সেই খাদ্য সুরক্ষা ও ক্যাশ ট্র্যান্সফার রাজ্যে চালু হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে৷ 

প্রস্তাবিত খাদ্য সুরক্ষা বিল নিয়ে আজ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীদের বৈঠক ডেকেছিল কেন্দ্র৷ সেখানে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গ্রাম ও শহরের গরিবদের যত্সামান্য দামে চাল-গম দেওয়ার জন্য এক পয়সাও খরচ করতে পারবে না রাজ্য সরকার৷ কেন্দ্রীয় সরকার সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনেই খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ করাতে চায়৷ সেই বিল অনুযায়ী, গ্রামের গরিব পরিবারকে সপ্তাহে ৫ কিলোগ্রাম করে চাল-গম দিতে যে খরচ হবে, তার ৭৫ শতাংশ দেবে কেন্দ্র৷ রাজ্য সরকারকে দিতে হবে ২৫ শতাংশ৷ আর শহরের গরিবদের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ দেবে কেন্দ্র, রাজ্যকে দিতে হবে ৫০ শতাংশ৷ আইনানুযায়ী গরিবরা এই খাদ্যশস্য পাবেন৷ পশ্চিমবঙ্গে গরিবদের কাছে সস্তায় চাল-গম পৌঁছে দিতে গেলে রাজ্য সরকারের লাগবে ১,৮০০ কোটি টাকা৷ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী আজ আরও জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের পক্ষে ক্যাশ ট্র্যান্সফার স্কিম বা গরিবদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভর্তুকি ও পেনশন, স্কলারশিপের টাকা দেওয়া সম্ভব নয়৷ তিনি একটি বিচিত্র যুক্তি দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, গরিবরা এই টাকা নেশা করে শেষ করে দেবে ও শেষ পর্যন্ত অনাহারে থাকবে৷ তিনি স্বীকার করেছেন, খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ডিলার, ডিস্ট্রিবিউটারদের অধিকাংশই অসত্‍ , কিন্ত্ত ডিজিটাল কার্ড করে, কম্পিউটারচালিত ব্যবস্থা করে অসততা অনেকটা কমানো যেতে পারে৷ জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেছেন, 'আমি স্বীকার করছি, ২০ হাজার ডিলারের মধ্যে ১৯ হাজার জনই চোর, ৭০০ ডিস্ট্রিবিউটারের মধ্যে সাড়ে ছশোই অসত্‍ , কিন্ত্ত তা সত্ত্বেও অন্য ব্যবস্থা নেওয়া যায়৷ ক্যাশ ট্র্যান্সফার করলে রাজের প্রত্যন্ত গ্রামের গরিবরা সেই টাকা দিয়ে নেশা করবে, জামা কিনবে, অন্য খাতে খরচ করবে, তার পর অনাহারে থাকবে৷ এই প্রকল্প চালু হলে অনাহার বাড়বে৷' 

রাজ্যের আর্থিক অবস্থা এখন এতটাই শোচনীয় যে, তাঁদের পক্ষে খাদ্য সুরক্ষায় এই অর্থ দেওয়া অসম্ভব বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন৷ তবে জ্যোতিপ্রিয়বাবু এ-ও স্বীকার করেছেন, প্রকল্পটি খুবই ভালো৷ রাজ্য সরকার নিজেও জঙ্গলমহল, আয়লা বিধ্বস্ত সুন্দরবন, দর্জিলিঙ-কার্শিয়াঙ-কালিম্পং, ডুয়ার্স, চারটি বন্ধ চা-বাগানের কর্মীদের জন্য সামান্য পয়সায় চাল দেয়৷ লোধা, শবর, বীরহোর ও টোটাদেরও চাল দেওয়া হয়৷ টোটাদের তো বিনা পয়সায় চাল দেওয়া হয়৷ এ জন্য বছরে ৮২০ কোটি টাকা খরচ করা হয়৷ এই টাকা জোগাড় করতেই সরকারের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে৷ আজ বৈঠকে এই অর্থও তিনি কেন্দ্রের কাছ থেকে দাবি করেছেন৷ 

গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জেরে নজিরবিহীনভাবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল রঞ্জিত কুমার পচনন্দাকে। তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হল সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে। গার্ডেনরিচ কাণ্ডে সক্রিয়তা দেখানোয় পচনন্দাকে সরানো হল বলে খবর।

গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জেরেই যে নগরপালকে বদলি করা হয়েছে, তা সরাসরি স্বীকার করে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মহাকরণে মমতা জানান, খিদিরপুর কাণ্ডে অভিযুক্তদের না ধরায় নগরপালকে বদলি করা হল।

এদিকে, সবাইকে অবাক করে গার্ডেনরিচ কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হল সিআইডিকে।

দময়ন্তী সেনের পর রঞ্জিত পচনন্দা। সরকারের সঙ্গে বিরোধীতায় পদ থেকে সরে যেতে হচ্ছে এই শীর্ষ স্থানীয় আইপিএসকে। 

চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার গার্ডেনরিচে কলেজ নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক গণ্ডগোল সৃষ্টি হয়। ঐ দিনই দুষ্কৃতীর গুলিতে প্রকাশ্য রাস্তায় খুন হন কলকাতা পুলিসের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসার তাপস চৌধুরী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তৃণমূল কাউন্সিলার মুন্না ওরফে মহম্মদ ইকবালের বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতারের জোরালো দাবি ওঠে সর্বস্তর থেকে। কিন্তু পুরমন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম এই ঘটনায় সরাসরি মুন্নার পাশে এসে দাঁড়ান। সাংবাদিকদের সামনে জোর সওয়াল করেন মুন্নার হয়ে। এমনকি ফোনেও মুন্নাকে গ্রেফতার না করতে কমিশনারকে নির্দেশ দেন পুরমন্ত্রী। পুরমন্ত্রীর সঙ্গে পচনন্দার ফোনে এই বিষয়ে বিবাদের খবরও প্রকাশিত হয় সংবাদপত্রে।অন্যদিকে মুন্না তথা বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে লালবাজারের অভ্যন্তরে রীতিমত বিদ্রোহ করেন আইপিএস অফিসাররা। এরপর কার্যত বাধ্য হয়েই গোটা ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরে আনতে তল্লাশির নির্দেশ দেন নগরপাল পচনন্দা।      

পুরমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরুদ্ধে গিয়ে পচনন্দার এই নির্দেশের পরেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে আজকেই নিহত পুলিসকর্মীর বাড়িতে গিয়ে আইন আইনের পথেই চলবে বলে দাবি করেন সেখানে ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিস কমিশনারের অপসারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।    

দুষ্কৃতীদের গুলিতে কলকাতা পুলিসের স্পেশাল ব্রাঞ্চের এস আই তাপস চৌধুরীর নিহত হওয়ার ৫২ ঘণ্টা পর তাঁর বাড়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। জানালেন, গোটা ঘটনায় তিনি গভীর ভাবে শোকাহত। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আইন আইনের পথে চলবে। একইসঙ্গে তাঁর হুশিয়ারি, এখনও কয়েকজনের নামে মামলা হয়নি। বিষয়টি তিনি দেখবেন। ঘটনার পর থেকেই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলে আসছেন গার্ডেনরিচের ঘটনায় জড়িত সিপিআইএম। কয়েকজনের নামে মামলা এখনও হয়নি, এই বক্তব্যের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পাশেই দাঁড়ালেন কিনা, উঠছে সেই প্রশ্ন। 

নিহত এসআই তাপস চৌধুরীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর মেয়ের কলকাতা পুলিসের ক্লারিকাল ডিপার্টমেন্টে চাকরির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার সঙ্গেই ২০১৭ পর্যন্ত নিহত তাপস বাবুর স্ত্রী প্রমোশন ও ইনক্রিমেন্ট সহ তাঁর মাস মাইনের অধিকারি হবেন। তবে এত জন্য তাঁকে চাকরি করতে হবে না। প্রসঙ্গত, ২০১৭ পর্যন্তই তাপসবাবুর চাকরীর কার্যকাল ছিল। অন্যদিকে বীমার ১৫ লক্ষ টাকার সঙ্গেই সরকার থেকে অতিরিক্ত ৫ লক্ষ টাকা পাবেন তাপসবাবুর পরিবার। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে তাপস বাবুর বৃদ্ধা মায়ের জন্য এককালীন ৫ লক্ষ টাকারও ঘোষণা করলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। 

এর আগে গার্ডেনরিচকাণ্ডে নিহত এসআই তাপস চৌধুরীর বাড়িতে যান বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ নিহত এসআইয়ের বাড়িতে যান তিনি। নিহত এসআইয়ের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী ও রবিন দেব। তাপস বাবুর স্ত্রী, পুত্র ও কন্যার সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা হওয়ার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাপস বাবুর স্ত্রী।


গার্ডেনরিচ কাণ্ড নিয়ে ফের সরকারের অস্বস্তি বাড়ালেন রাজ্যপাল। নগরপালের অপসারণ প্রসঙ্গে আজ তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে নগরপালকে সরানো হয়ে থাকলে, তা ভুল হয়েছে।  

বর্তমান শাসকদল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই সরকারে এসেছে। সরকার চালানোর ক্ষমতা আছে কি না, সেটা তাদেরই প্রমাণ করতে হবে। গার্ডেনরিচ কাণ্ড নিয়ে গত কয়েকদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ এই মন্তব্য করেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন।

পড়ুন এর আগে কী বলেছিলেন রাজ্যপাল

http://zeenews.india.com/bengali/kolkata/governor-says-its-a-blunder-on-police-commissioner-removal-issue_11415.html
"অভিযুক্তকে আড়াল করা মন্ত্রীর কাজের মধ্যে পড়ে না।" এর আগে গার্ডেনরিচ কাণ্ডে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে এ কথাই বলে ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। আজ নিহত এসআই তাপস চৌধুরীর বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যপাল বলেন, "এফ আইআরএ আরও নাম থাকলে তদন্তকারী দলের হেফাহাজতেই থাকা উচিত অভিযুক্তের। ফিরহাদ হাকিম প্রসঙ্গে বলি, অভিযুক্তকে আড়াল করা তাঁর কাজের মধ্যে পড়ে না, অন্তত আমি সেভাবেই দেখি।"

গার্ডেনরিচের ঘটনাপ্রবাহ বলছে, পুরো ঘটনার পিছনে ছিল ১৫ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার প্ররোচনা। অথচ প্রথম থেকেই তাঁকে বারবার আড়াল করছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মুন্নার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তবু বুধবার মহাকরণে পুরমন্ত্রী বললেন, ঘটনায় মুন্না জড়িত তা তিনি বিশ্বাসই করেন না।


গার্ডেনরিচের ঘটনাপ্রবাহ বলছে, পুরো ঘটনার পিছনে ছিল ১৫ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার প্ররোচনা। অথচ প্রথম থেকেই তাঁকে বারবার আড়াল করছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মুন্নার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তবু গতকাল মহাকরণে পুরমন্ত্রী বললেন, ঘটনায় মুন্না জড়িত তা তিনি বিশ্বাসই করেন না।

৭ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের বাংলো ভাঙচুরের ঘটনায় কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এফআইআর দায়ের করে পুলিস। ৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার নিন্দা করে বিবৃতি দেন পুরমন্ত্রী।

মঙ্গলবার সেই পুরমন্ত্রীকেই দেখা গেল গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজের সামনে। কিছুক্ষণ আগেই সেখানে গুলিতে মারা গেছেন পুলিসকর্মী তাপস চৌধুরী। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর ফোন এল পুরমন্ত্রীর কাছে। ফোনে `দিদি`কে আশ্বস্ত করে তিনি জানালেন `মুন্নাই ছিল আক্রমণের লক্ষ্য`। 

বুধবার পুরমন্ত্রী বক্তব্য অবশ্য কিছুটা পাল্টে গেল।

ঘটনার শুরু থেকে শেষ, প্রবল বিক্রমে লক্ষ্য করা গিয়েছে ১৫ নম্বর বরো চেয়ারম্যান ওরফে মুন্নার উপস্থিতি। তার সঙ্গীরাও যে সশস্ত্র ছিল, তারও প্রমাণও মিলেছে।

পুলিস এই ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। যদিও এফআইআরে নাম নেই মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার। অভিযোগ উঠেছে, পুরমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্যই তাঁকে ছাড় দিয়েছে পুলিস। ঘটনার পরেই ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য ছিল মুন্নাই আক্রান্ত হয়েছে। সেইসময়ও পুরমন্ত্রীর পাশে দেখা দিয়েছে সগর্ব উপস্থিতি।

শেষপর্যন্ত পুরমন্ত্রীর পাশে এই সগর্ব উপস্থিতির কারণেই কী গ্রেফতার করা যায়নি মুন্নাকে? এমনকী তাঁর নেতৃত্বে হামলা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়নি। যদিও দিনকয়েক আগে এই ধরনেরই একটি ঘটনায় কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রনোদিত মামলা দায়ের করেছিল পুলিস।


"অভিযুক্তকে আড়াল করা মন্ত্রীর কাজের মধ্যে পড়ে না।" গার্ডেনরিচ কাণ্ডে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে এ কথাই বললেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। আজ নিহত এসআই তাপস চৌধুরীর বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে রাজ্যপাল বলেন, "এফ আইআরএ আরও নাম থাকলে তদন্তকারী দলের হেফাহাজতেই থাকা উচিত অভিযুক্তের। ফিরহাদ হাকিম প্রসঙ্গে বলি, অভিযুক্তকে আড়াল করা তাঁর কাজের মধ্যে পড়ে না, অন্তত আমি সেভাবেই দেখি।"

গার্ডেনরিচের ঘটনাপ্রবাহ বলছে, পুরো ঘটনার পিছনে ছিল ১৫ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার প্ররোচনা। অথচ প্রথম থেকেই তাঁকে বারবার আড়াল করছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মুন্নার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। তবু বুধবার মহাকরণে পুরমন্ত্রী বললেন, ঘটনায় মুন্না জড়িত তা তিনি বিশ্বাসই করেন না।

মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে পুরমন্ত্রীকেও মহম্মদ ইকবালের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়। পুলিসকর্মী তাপস চৌধুরী মারা যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ফোন আসে পুরমন্ত্রীর কাছে। সাংবাদিকদের সামনেই ফোনে `দিদি`কে আশ্বস্ত করে ফিরহাদ বাবু জানান `মুন্নাই ছিল আক্রমণের লক্ষ্য`।

পুলিস এই ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। যদিও এফআইআরে নাম নেই মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার। অভিযোগ উঠেছে, পুরমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্যই তাঁকে ছাড় দিয়েছে পুলিস। ঘটনার পরেই ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য ছিল মুন্নাই আক্রান্ত হয়েছে। সেইসময়ও পুরমন্ত্রীর পাশে দেখা দিয়েছে সগর্ব উপস্থিতি।

শেষপর্যন্ত পুরমন্ত্রীর পাশে এই সগর্ব উপস্থিতির কারণেই কী গ্রেফতার করা যায়নি মুন্নাকে? এমনকী তাঁর নেতৃত্বে হামলা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়নি। যদিও দিনকয়েক আগে এই ধরনেরই একটি ঘটনায় কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রনোদিত মামলা দায়ের করেছিল পুলিস।


সবাইকে অবাক করে গার্ডেনরিচ কাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হল সিআইডিকে। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক ঘটনাতেই সিবিআই তদন্ত দাবি করতেন। কিন্তু দুষ্কৃতীর গুলিতে পুলিস কর্মীর মৃত্যুর মত এত বড় ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হল সিআইডিকে। এতে পুলিস কর্মীদের মনোবলে চিড় ধরবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঘটনায় যাদের নাম এফআইআর-এ রয়েছে তাদের এখনও কেন গ্রেফতার করা হয়নি। এজন্যই কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।

এর আগে সরানো হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনার আর কে পচনন্দাকে৷ তাঁর জায়গায় নতুন পুলিশ কমিশনার আনা হয় এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সুরজিত্ কর পুরকায়স্থকে৷ সূত্রের খবর, গার্ডেনরিচ কাণ্ডে পচনন্দার কঠোর অবস্থান পছন্দ না হওয়ায় তাকে সরিয়ে দেওয়া হল৷ এফআইআরে তৃণমূল নেতা মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার নাম রাখা নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত। পাশপাশি, তাঁকে গ্রেফতার করতে পচনন্দার তত্পরতাও ভালো চোখে নেয়নি সরকার। এজন্য তাঁকে কার্যত গুরুত্বহীন এডিজি (সিকিউরিটি) পদে বদলি করা হয়েছে।


একনজরে দেখে নেওয়া যাক পুলিসে রদবদল--
পুলিস কমিশনার
এলেন-সুরজিত্‍ পুরকায়স্থ। গেলেন-- রঞ্জিত কুমার পচনন্দা

এডিজি
বাণীব্রত বসু


আইজি আইন শৃঙ্খলা

সোমেন মিত্র



রঞ্জিত কুমার পচনন্দা
ছিলেন পুলিস কমিশনার। হলেন-- এডিজি (সিকিউরিটি), মুখ্যমন্ত্রীর সিকিউরিটি। 


সন্ধ্যার পর থেকেই কলকাতা পুলিসের এস আই খুনের অভিযুক্ত কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর বরো চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নাভাইয়ের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু হল। পুলিস কমিশনার পদ থেকে রঞ্জিত কুমার পচনন্দাকে সরিয়ে দেওয়ার পর সেই তল্লাসি অভিযান আরও গতি পেল। মু্ন্নাকে খুঁজতে জোর অভিযান চালাচ্ছে কলকাতা পুলিসের বিশাল বাহিনী।

গার্ডেনরিচ-কাণ্ডে উঠে এসেছে কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর বরো চেয়ারম্যান মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নাভাইয়ের নাম। পুলিস এখনও তাঁকে গ্রেফতার করেনি। বুধবার, দিনভর প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও আজ কিন্তু তাঁকে একবারের জন্যও দেখা যায়নি। চাপে পড়ে আপাতত গা ঢাকা দিয়েছেন জনপ্রতিনিধি মুন্নাভাই।

মঙ্গলবার গার্ডেনরিচে প্রকাশ্যে পুলিসকর্মীকে হত্যার ঘটনায় মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার ভূমিকা টিভি ক্যামেরার ফুটেজেই স্পষ্ট। জনপ্রতিনিধি মুন্নাভাইয়ের সঙ্গে সে দিন প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের।

অথচ পুলিস মুন্নার বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের মামলা দায়ের করেনি। এফআইআরে নাম থাকলেও তাঁকে ধরার কোনও চেষ্টা হয়নি। বুধবার, দিনভর পুলিসের নাকের ডগায় বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়িয়েছেন মুন্না। এ দিন ১৫ নম্বর বরো অফিসে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।

২৪ ঘণ্টার সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে মুন্নাভাই বলেন জনতাই তার শক্তি। কিন্তু, বৃহস্পতিবার তাঁকে এই জনতার দরবারে একবারের জন্যও দেখা যায়নি। এ দিন বরো অফিসেও তিনি যাননি। দিনভর কার্যত মুন্নাভাইয়ের টিকিরও দেখা মেলেনি।

গার্ডেনরিচ-কাণ্ডে এফআইআরে নাম থাকা কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ মোক্তারের খোঁজে পুলিস তল্লাসি চালালেও মুন্নার খোঁজে কোনও অভিযান হয়নি। তবে, ফিরহাদ হাকিমের মতো তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের হাত মাথায় থাকলেও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি যে খুব একটা সুবিধার নয় তা বুঝতে বাকি নেই ১৫ নম্বর বরো চেয়ারম্যানের। তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করায় রাজ্যপাল কড়া ভাষায় ফিরহাদ হাকিমের সমালোচনা করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আত্মগোপন করে থাকাই শ্রেয় বলে মনে করেই কি গা ঢাকা দিয়েছেন মুন্নাভাই?


ফের তোপের মুখে এক সরকারি আধিকারিক। এবার কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হল যুবকল্যাণ দফতরের যুগ্মসচিবকে। 

গ্রুপ ডি পদে ৫৫ জনের নিয়োগে নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। যুবকল্যাণ দফতরের যুগ্মসচিব কাঞ্চন দাসের অভিযোগ ছিল এই নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থ দফতরের প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছিল না। যদিও সরকারের দাবি, মন্ত্রিসভার সুপারিশ মেনেই হয়েছিল এই নিয়োগ। 

আর এই ঘটনার জেরেই অবসরের মুখে  কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হল যুবকল্যাণ দফতরের যুগ্ম সচিব কাঞ্চন দাসকে। 

আগামী আঠাশে ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করছেন তিনি।

এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের মাঝেই কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের বিডিও শীর্ষেন্দু সাহাকে। অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গিয়েই রোষের মুখে পড়েছেন তিনি।


আজ থেকে পঞ্চায়েত ভোটের লড়াইয়ে রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়তে চলেছেন রেজ্জাক মোল্লা। যেখানে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন সেই ভাঙড়েই আজ সভা করবেন তিনি। উপস্থিত থাকবেন সূর্যকান্ত মিশ্র, গৌতম দেব, সুজন চক্রবর্তীরা। 

বিরোধী দলের এই সভার প্রধান আকর্ষণ রেজ্জাক মোল্লা। ভাঙড়েই আক্রান্ত হন তিনি। দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় তাঁকে। সেই আক্রমণের পর এই প্রথম তাকে কোনও সভায় দেখা যাবে। 

সোমবার ভাঙড়ের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন সংখ্যালঘু উন্নয়নে নিরানব্বই শতাংশ কাজই করে ফেলেছে তার সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবিকে নস্যাত করতেই ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে পাল্টা সমাবেশের ডাক দিয়েছে সিপিআইএম। 

রেজ্জাক মোল্লা জানিয়েছেন, "সোমবার ভাঙড়ের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন সংখ্যালঘু উন্নয়নে ৯৯ শতাংশ কাজই করে ফেলেছে তার সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবিকে নস্যাত করতেই পাল্টা সমাবেশের ডাক দিয়েছে সিপিআইএম।"

মনে করা হচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের কর্মীদের চাঙ্গা রাখতেই এই সভা করছে সিপিআইএম নেতৃত্ব।


ভিভিআইপি হেলিকপ্টার কেনায় দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় গোটা দেশ। কিন্তু, তথ্য বলছে এই প্রথম নয়। এর আগেও, বেশ কয়েকবার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। 

স্বাধীনতার পর থেকেই একাধিক বার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। 

১৯৪৮-এ ভি কে কৃষ্ণ মেননের বিরুদ্ধে আর্মি জিপ কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগের তদন্ত করে ১৯৫১-এ রিপোর্ট পেশ করে অন্তসায়ানাম আয়েঙ্গার কমিটি। সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। ১৯৫৫-এ মামলাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

১৯৮৭-তে বোফর্স কেলেঙ্কারিতে জড়ায় তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর নাম। ১৯৮৯-এ রিপোর্ট পেশ যৌথ সংসদীয় কমিটির। সিবিআই দীর্ঘদিন তদন্ত করলেও, এফআইআর দায়ের হয়নি। পরে মামলা খারিজ করে দেয় দিল্লি হাইকোর্ট।   

আটের দশকে জার্মান সাবমেরিন এইচডিডাব্লিউ কেনাবেচায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০০২-এ তদন্ত বন্ধ করে দেয় সিবিআই।

২০০১-এ তহেলকা ডট কমের স্টিং অপারেশনে প্রতিরক্ষা দুর্নীতির পর্দাফাঁস। নাম জড়ায় তত্কালীন বিজেপি সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণের। তদন্তের দায়িত্ব নিলেও, সংসদীয় আলোড়নে সরে দাঁড়ান বিচারপতি কুণ্ডুস্বামী ভেঙ্কটস্বামী। সিবিআই তদন্তেও অগ্রগতি হয়নি। 

২০০২-এ সালে কফিন কেলেঙ্কারি। নাম জড়ায় তত্কালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজের। যদিও আদালতে দায়ের সিবিআই চার্জশিটে তাঁর নাম ছিল না। 

তথ্য বলছে, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বারবার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও, কোনওক্ষেত্রেই তদন্তে কোনও অগ্রগতি হয়নি। 


ফের দুর্নীতিতে মুখ পুড়ল ইউপিএ সরকারের। এবার বড়সড় মাপের দুর্নীতির অভিযোগ উঠল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে। ইতালীয় সংস্থার সঙ্গে ভিভিআইপি হেলিকপ্টার কেনার চুক্তিতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এস পি ত্যাগীর বিরুদ্ধে। 

দুর্নীতির দায়ে ফিনমেকানিকা সংস্থার সিইওকে গ্রেফতার করেছে ইতালি পুলিস। তাদের তদন্ত রিপোর্টেই উঠে এসেছে এসপি ত্যাগীর নাম। তিন হাজার পাঁচশো ছেচল্লিশ কোটি টাকার চুক্তিতে প্রায় ৩৭০কোটি টাকার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রিপোর্টে। 

ইতালির প্রতিরক্ষা সংস্থা ফিনমেকানিকা-র সঙ্গে বারোটি ভিভিআইপি কোটার অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি আপাতত তাই শিকেয়। ইতিমধ্যে তিনটি হেলিকপ্টার কিনে ফেলেছে ভারত। তবে দুর্নীতি-বিতর্ক সামনে আসার পর বাকি নটি কপ্টার না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ইতালীয় সংস্থার বকেয়া অর্থ আটকে দেওয়া হয়েছে।  তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সিবিআইকে।


হেলিকপ্টার দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের রিপোর্ট মিললেই দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ এই আশ্বাস দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। হেলিকপ্টার কেনাবেচা নিয়ে দুর্নীতি মামলার এর আগেই তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। 

২০১০-র ব্রিটেনের অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড নামে একটি সংস্থার সঙ্গে ১২টি এ ডব্লিউ ১০০ এক হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। হেলিকপ্টার কেনার জন্য ভারতীয় মুদ্রায় দাম নির্ধারিত হয় প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। অভিযোগ, কপ্টার বিক্রির চুক্তি পাকা করার জন্য একটি সংস্থাকে ঘুষ দেওয়া হয়েছিল চুক্তিমূল্যের ১০ শতাংশ অর্থাত চারশো কোটি টাকা। 

গত অক্টোবরেই এনিয়ে তদন্ত শুরু করে ইতালি পুলিস। অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড যে ইতালিয় সংস্থার অধীন, সেই সংস্থার প্রধান গিউসেপ্পে ওরসিকে গ্রেফতার করেছে ইতালি পুলিস। ইতালি পুলিসের দাবি, যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। 

তবে সরকারি নিয়ম মেনেই চুক্তি হয়েছে বলে দাবি করেছে ইতালিয় সংস্থাটি। ইতিমধ্যেই এবিষয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি।  

No comments:

Post a Comment