স্মৃতিটুকু থাক্,ফিরে যাচ্ছি উদ্বাস্তু উপনিবেশে স্বজনদের কাছে হিমালয়ের কোলে!
পলাশ বিশ্বাস
ভারত ভাগের ফলে পূর্ব বাংলা থেকে আসা কোটি কোটি উদ্বাস্তুদের বাংলায় জায়গা হয়নি । তবু যারা এখানে কোনো ক্রমে মাথা গুঁজে আছেন রেল লাইনের ধারে,খালে,বিলে,জলে ,জঙ্গলে তাঁরাও ব্রাত্য।সেই কোটি কোটি বাঙালি উদ্বাস্তুদের নাড়ি এখনো মাটির টানে,মাতৃভাষার শিকড়ে,সংস্কৃতির বন্ধনে বাংলার সঙ্গেই বাঁধা । তবু তাঁরা বাংলার ইতিহাস ভূগোলের বাইরে।
দন্ডকারণ্য থেকে তাঁরা একবার ফিরে মরিচঝাঁপিতে বসত গড়ে ফেলেছিল,সেই বসত শাসক শ্রেণী উপড়ে ফেলেছিল ।সেই গণহত্যার বিচার 30 বছর পরও শুরু হল না ।
আমিও সেই উদ্বাস্তুদের ছেলে ।
উত্তর প্রদেশের বেরেলি শহরের চাকরি ছেড়ে কলকাতায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের চাকরি নিয়ে এসেছিলাম শিকড়ের টানেই ।আজ টানা 27 বছর বাংলায় থাকার পর আমিও 47,64 কিংবা 71 এর উদ্বাস্তুদের মতই বাংলা ছেড়ে ফিরে যাচ্ছি ।
যথাসাধ্য বাংলায় টিকে থাকার চেস্টা অবশ্য করেছি কিন্তু বাংলার বাঙালিরা উদ্বাস্তুদের কোনো দিন স্বীকৃতি দেয়নি,এই শাশ্বত সত্যের মুখোমুখি হয়ে আবার উদ্বাস্তুদের উপনিবেশ উত্তরাখন্ডের দীনেশপুরে নিজের গ্রামে ফিরে যাচ্ছি ।
সারা বাংলায় মানুষের একটি বড় অংশের সঙ্গে যোগাযোগ হলেও বেনাগরিক উদ্বাস্তুদের জীবন যন্ত্রণা থেকে মুক্তির কোনো রাস্তা দেখতে পেলাম না । এখন আর লড়াই করার ক্ষমতা নেই,তাই স্বজনদের মধ্যেই ফিরে যাচ্ছি ।
কোটি কোটি বাঙালিদের বাংলা ছেড়ে যাওয়ায় বাংলা মায়ের চোখের জল পড়েনি কোনো দিন,আমার একার জন্যে সেই অশ্রুপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই । কিন্তু সাতাশ বছরের স্মৃতি ত থেকেই যাচ্ছে ।
নীতীশ বিস্বাস,কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর,শরদিন্দু বিশ্বাস,প্রদীপ রায়, ডঃগুণধর বর্মণ, মহাশ্বেতা দেবী, কমরেড সুভাষ চক্রবর্তী, কমরেড কান্তি গাঙ্গুলি, নাবারুণ ভট্টাচার্য, কমরেড অশোক মিত্র, ডঃগুণ, প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায়,কর্নেল লাহিড়ী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত,গৌতম হালদার ও আরও অনেক গুণী মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছি,যাদের মধ্যে অনেকেই এখন বেঁচে নেই ।আমার সৌভাগ্য ।
2001 সালে উত্তরাখন্ডের বাঙালিদের বিদেশী ঘোষিত করে তাড়ানোর চেষ্টা শুরু করে সেই রাজ্যের প্রথম বিজেপি সরকার ।প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল বাংলা ।সেদিন কোলকাতার তাবত লেখক,শিল্পী,কবি,সাংবাদিক আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ।আজ ফেরার বেলায় তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাই ।
তারপর ক্রমাগত বাংলার বাইরের বাঙালিদের পর আক্রমণ চলছে,কিন্তু 2001 এর পর আর কোনো প্রতিবাদ হয়নি ।
সারা দেশে এই উদ্বাস্তুদের জন্য আজীবন কাজ করে গিয়েছেন দীনেশপুরের পুলিনবাবু,আমার বাবা ।
আমাকে ত তাঁদের পাশেই থাকতে হবে ।
চলে যাওয়ার বেলায় মন ভালো নেই । তাই কোথাও যাওয়া হল না ।কারুর সঙ্গে শেষ দেখাও হচ্ছে না ।
বাংলায় আর ফেরা হবে না ।
আপনাদের ভালোবাসা,সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ ।
ANSC Bank Admit Card 2019 will get released in May 2019 at official website. ANSC Bank Department will be organizing exam for 100 posts.
ReplyDelete10dik24 News
ReplyDelete24 Ghanta