Wednesday, May 1, 2013

চিঠি লিখে ডাকাতি!!


চিঠি লিখে ডাকাতি!! 


চিঠি লিখে ডাকাতি!! এক সময় চিঠি দিয়ে ডাকাতি...
Nagraj Chandal 4:05pm May 1
চিঠি লিখে ডাকাতি!!
এক সময় চিঠি দিয়ে ডাকাতি হত এই বাংলায়। ডাকাতির বিদ্যার এই পরিভাষাকে মহৎ ও বলতে আবার ঔদ্ধত্য হিসেবেও দেখতে পারেন। তবে ডাকাতের খানদানী ও আভিজাত্য বজায় রাখার জন্য এই কাগুজে সংকেতটি ছিল অবশ্য ঘটিতব্য গণবার্তা। শোনা যায় হাটে হাটে ঢেরা পিটিয়েও ডাকাতি হত। এই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ থাকত ডাকাতির সর্তগুলি কি কি। কবে ও কখন ডাকাতি হবে। ডাকাতিতে বাঁধা দিলে কি ধরনের শাস্তি হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।

সেকালের অনেক জমিদার বাবুরাও ডাকাত পুষতেন। তাগড়া জোয়ান লাঠিয়াল,সড়কিবাজ,বল্লমবাজদের নিয়ে গড়া ডাকাত দলগুলি জমিদারদের প্রভাব, প্রতিপত্তি ও সম্পত্তি বাড়াতে উৎসেচকের মত কাজ করতো। ডাকাতগুলিকে পরিচালনা করতেন মেজ, সেজ বা ছোটবাবুরা। কিন্তু আসল কনট্রোল ছিল বড়বাবুদের হাতে। আড়ালে থেকে তিনিই নাড়াচাড়া করতেন জীয়নকাঠি ও মরণকাঠি। মেজবাবু, সেজবাবু বা ছোটবাবুরা কখনো সখনো ফেঁসে গেলে পিছনে থেকেই তিনি আইনি প্যাঁচ পয়জারে রক্ষা করতেন ডাকাতি সংস্কৃতির আপ্ত সহায়ক ও অনুচরদের। সাক্ষ প্রমান ধ্বংস করা, আইনি জটিলতা তৈরি করা ও অচলাবস্থা সৃষ্টি করে অপরাধিকে আড়াল করা বা বেকসুর খালাস করাই ছিল এই সংস্কৃতির মূখ্য উদ্দেশ্য। একেবারে উপায় না থাকলে অগত্যা আইনের জালে আটকা পড়ে যেত দু একটা ডাকাত। তারাই ভোগ করত শাস্তির খাঁড়া।

বর্তমান তৃণমূল সরকার এই লুপ্তপ্রায় লোকায়ত ধারাকে স্বমহিমায় জাগিয়ে তুলতে পেরেছে। চুরি, জালিয়াতি, বলাৎকার, ধর্ষণ ও মিথ্যাচারিতাকে একটা শৈল্পিক উচ্চতায় নিয়ে যেতে পরেছেন। প্রমান করেছেন যে,ঠিক মত লালিত করতে পারলে এই ডাকাতি বিদ্যা বাংলার উর্বর মাটিতে ফুলে ফলে বংশ বিস্তার করতে পারে এখনো। তৃণ-গুল্ম দিয়ে ঢেকে দিতে পারে বাংলার শ্যামলিমা। ফুল হলেও তার গোঁড়ায় আশ্রয় নিতে পারে বিষাক্ত কীট,পতঙ্গ ও সরীসৃপ। বর্তমান তৃণমূল সরকার প্রবল প্রচার ও সদ্মভে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে,বাংলার মাটি অপরাধ ও অপরাধীদের দুর্জয় ঘাটি। একে ডাকাতি বিদ্যার ক্রমবিবর্তন বা অভিযোজন ও বলতে পারেন।

হ্যাঁ,সুদীপ্ত সেনেরা ডাকাতেদের বংশধর। আধুনিক ছলাকলা বিদ্যায় পারদর্শী বর্তমান প্রজন্ম। গুণগত ও মূলগত পার্থক্য এই যে, সেকালের ডাকাতেরা বড়লোক বা জমিদারদের বাড়িতে ডাকাতি করতেন একালের সুদীপ্তরা মা-মাটি-মানুষের ন্যুন্যতম অবলম্বনটুকুও লুন্ঠন করে নেয়। সেকালের ডাকাতদের বড়দাদারা ছিলেন তাদের নিরাপদ আশ্রয়, একালের সুদীপ্তদের নিভৃত আস্তানা মমতাময়ী দিদির আটপৌরে আঁচল। সেকালের ডাকাতেরা রাতের বেলা ডাকাতি করতেন। সুদীপ্তরা দিনের বেলা প্রকাশ্যে পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে লুন্ঠন করে।

সুদীপ্ত সেনেরা চিঠি দিয়েই ডাকাতি করেছেন। সেই চিঠির সঙ্গে ব্যবহার করছেন দিদি ও তার ভাই বোনদের ছবি। পরিবর্তনকামী মানুষেরা ডাকাতির এই পরিবর্তিত পরিভাষাকে সামাজিকীকরণ করে নিয়েছে। আত্তীকরণ করে নিয়েছেন। কিন্তু ভুলেও বুঝতে পারেননি ঘাস ফুলে তার সাজানো বাগান নষ্ট করে ফেলবে। অজন্মা প্রেতে তার সোনার ক্ষেত শুষে খাবে। ফলে এই বুকফাটা ক্রন্দন, "দিদি আমাদের বাঁচান। আমরা আপনার মুখ দেখেই সারদায় টাকা রেখেছি। আজ আমরা সর্বহারা। নিজের ভিটেতেও থাকতে পারছিনা। যতক্ষণ টাকা ফেরত না পাব, আপনার বাড়ির সামনে থেকে নড়বোনা। তৃণমূল ভবনের সামনে থেকে উঠবোনা"।

ডাকাতির অভিজ্ঞানের প্রথম পাঠ থেকে দিদি আউড়ে গেলেন,"আমি তো আপনাদের সারদায় টাকা রাখতে বলিনি । টাকা রাখার আগে ক্রস চেক করা উচিৎ ছিল"।

দ্বন্দ্ব ঘনীভূত হয়। বিদ্বজ্জনেরা চুপ। তারা যে যার নিজের ঘর সামালাতে ব্যস্ত। দু একটা সিঁধেল ছাড়া আসে পাশে আর কেঊ নেই।

দিদির বন্ধ ঘরের জানলা দিয়ে শোনা যায় কালি কীর্তনের সুর,"আমি স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা,দোষ কারো নয় গো মা"।

যুগান্তরের ডাকাতি অভিজ্ঞান তাকে চাগিয়ে তোলে, "না মরবো না, আমি কিছুতেই মরবো না"। আবার ছবির প্রদর্শনী করবো। বুঝিয়ে দেব যে,একেবারে পাতি মাল ও প্রচারের জোরে কেমন কোটি টাকায় বিক্রি হয়। এই খানে চুপি চুপি বলে রাখি, তার ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে কিছু চোর তাদের প্রায়সমাপ্ত ছবি দিদির ক্যানভাসে রেখে যায়। দিদি মিডিয়ার সামনে ওই ছবিতে রং মাখান। এই চোরেদের মধ্যে অনেকে আবার রবীন্দ্রনাথের ছবি জাল করার অপরাধে কেস খেয়ে বসে আছেন।

চেতনাবচেতনের ঘোর। তুলি কোথায় গেল! ছবির ক্যানভাস কোথায়!
এ কী! তুলির বদলে কলসি আর দড়ি! রং এর জায়গায় চুন আর কালি!
তাছাড়া যে এই ছবি কিনবে সে তো জেলে?
"হে মা কালি, টাকা দে, না হয় দেখা দে মা"...। বাবা শিব! উপায় বলে দাও বাবা...তোমায় বেশি করে গাঁজা ...গাঁ...জা। ইউরেকা...ইউরেকা...।
দম মারো দম, বোল শিবশম্ভ...

পরেরদিন ডাকাতির এক অমোঘ ঘোষণা।
"৫০০ কোটি টাকার তোলা আদায় দিতে হবে আমাকে।
আপনারা বেশি বেশি করে সিগারেট খান।
আমি জনগণের কিছু টাকা ফিরিয়ে দেব"।

এই চিঠি বা বিজ্ঞপ্তি জারি হবে সরকারী পৃষ্ঠপোষকটায়।
সুদীপ্তর নামে মামলা করে নয়? সারদার স্থাবর অস্থাবর অধিগ্রহণ করে নয়। সিগারেট, বিড়ি ও গাঁজার নেশা বৃদ্ধি করে, বুকের পাঁজরের মধ্যে ক্যানসারে বিষ ঢুকিয়ে এই টাকা আদায় হবে। সংসারের ১০% বরাদ্য যা শিশুদের খাদ্যে, শিক্ষায় ও অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যয়িত হত, তা চিঠি বা বিজ্ঞপ্তি জারি করেই ডাকাতি হবে!!!

নাগরাজ চন্ডাল
ছাত না,বাঁকুড়া

View Post on Facebook · Edit Email Settings · Reply to this email to add a comment.

1 comment:

  1. Excellent Nagraj. Perfectly you have elaborated the trend of criminalization of politics in Bengal. I appreciate you and your thoughtful criticism to identify the disinherited elements in Bengal.

    ReplyDelete