Tuesday, December 9, 2014

সুবীর মাঝিকে চেনো? না চিনলে নদীয়া গ্রামে যখন ঘুরতে যাবে দেখে এসো। শুভজিত বসাক

 
সুবীর মাঝিকে চেনো? না চিনলে নদীয়া গ্রামে যখন ঘুরতে যাবে দেখে এসো।
শুভজিত বসাক

 
সুবীর মাঝিকে চেনো? না চিনলে নদীয়া গ্রামে যখন ঘুরতে যাবে দেখে এসো।এমন মাটির গড়া মানুষ আজকের দিনে খুবই কম হয়।ভবপাগলা বা আত্মভোলা যাকে বলে তেমন প্রকৃতির মানুষ সে।ঘর-সংসার সবই আছে তার,তবুও যেন কিছুতেই তার বিন্দুমাত্র মন টেকে না।অবাক হবে শুনলে সুভদ্রাকে সে ভালোবেসেই বিয়ে করেছিল।পরে মাঝির মন জলের মত নরম হয়ে কখন যে নদীকেই ভালবেসে মিশে যায় তার সাথে কেউই ওরা বোঝেনি।সুভদ্রাও নরম মনের মেয়ে,কিন্তু ঘর টেকাতে সে মাঝে মাঝেই শক্ত হয়,কিন্তু মাঝির মন যে পাড়ে আটকে তাকে নোঙর তুলে এপাড়ে বাঁধা তার সাধ্যি নেই আর।সুবীরকে সে আজও নিরন্তর ভালবাসে,তাকে শাসন করাটা নিজের শরীরেই আঘাত করার মত প্রতিপন্ন হয় তার কাছে!
মাঝি বেশ প্রাণখোলা মাটির মানুষ।সে খেয়া বাইতে বাইতে যে লোকগীতিগুলো গায় তার সুর মোহিত করে যাত্রীদের।তার দাবি কিছু থাকে না,পয়সা দিতে চাইলে বলে যেমন মর্জি দিতে।যখন সে খেয়া বায় না,পাড়ে নোঙর ফেলে নৌকায় ঠেস দিয়ে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে,কি দেখে ওই জানে।নদী পাড় হতে শশ্মানটা চোখে পড়ে,মড়ার হাড় নিয়ে কুকুরের টানাটানি,মৃতের ছাই ফেলা এসব যেন চোখ সওয়া হয়ে গেছে তার।প্রথম প্রথম কেমন উদাস হত,হাত-পা অসাঢ় হয়ে যেত জ্বলন্ত চিতার তেজস্বী রূপ দেখে।আজ আর ওসব হয় না।ঐ পাড়টায় জেলেপাড়া,পাল পাল জাল বাঁধা আছে সেখানে।গেঁরি-গুগলির খোলসে পাড়টা ভরে আছে।এই মাটি ভেজা আঁশটে গন্ধটা তার খুবই চেনা।পাড়ে বসে এঁটো বাসন ধুতে এসে রাঙ্গা দিদার সাথে খুব ভাব জমেছে সুবীরের।কত গল্প বলে নিজেদের মধ্যে,এমন মাটির মানুষের কথা,সারল্যতা ওঁকে খুবই আকৃষ্ট করে।দিদা ওকে বুঝিয়েও পারেনি ঘরমুখো করতে।
আজও নৌকায় ঠেস দিয়ে বসে,সন্ধ্যা হয়ে এলেও ওর কোনো অভিপ্রায় নেই ঘরে ফেরবার।ভেসে যাওয়া শ্যাওলা-শালুকের দল দেখতে দেখতে বিভোর হয়ে পড়ে।ভরা পূর্ণিমার আলো ভেসে উঠতেই জলটাকে রূপোয় মুড়ে যেতে দেখল সে।কালো আকাশের নীচে রূপোলী জোয়ার,আরেক পাড়ে সে! কোনো চিত্রশিল্পীর পট রচনা করেছে যেন সে।খুশী ধরেছে ওর মনে,গান তুলল সুরেলা গলায়।অপূর্ব মোহময়ী রাত যেন।দূরে শশ্মানটায় আবার একটা চিতা জ্বলল শেষ রাতে,পূর্ণিমার চাঁদ দ্বীপ জ্বেলে যায় চিতার কোটরে,লোকগীতি ছেড়ে রাতটাও যেতে চায় না।তখনও মাঝি ঘরে ফেরেনি,পরিচিত সেই গেঁরি-গুগলি মাখা মাটির আঁশটে গন্ধটা ভেসে আসছে দূরের ঐ পাড় থেকে।
সুবীর মাঝিকে চেনো? না চিনলে নদীয়া গ্রামে যখন ঘুরতে যাবে দেখে এসো।এমন মাটির গড়া মানুষ আজকের দিনে খুবই কম হয়।ভবপাগলা বা আত্মভোলা যাকে বলে তেমন প্রকৃতির মানুষ সে।ঘর-সংসার সবই আছে তার,তবুও যেন কিছুতেই তার বিন্দুমাত্র মন টেকে না।অবাক হবে শুনলে সুভদ্রাকে সে ভালোবেসেই বিয়ে করেছিল।পরে মাঝির মন জলের মত নরম হয়ে কখন যে নদীকেই ভালবেসে মিশে যায় তার সাথে কেউই ওরা বোঝেনি।সুভদ্রাও নরম মনের মেয়ে,কিন্তু ঘর টেকাতে সে মাঝে মাঝেই শক্ত হয়,কিন্তু মাঝির মন যে পাড়ে আটকে তাকে নোঙর তুলে এপাড়ে বাঁধা তার সাধ্যি নেই আর।সুবীরকে সে আজও নিরন্তর ভালবাসে,তাকে শাসন করাটা নিজের শরীরেই আঘাত করার মত প্রতিপন্ন হয় তার কাছে!  মাঝি বেশ প্রাণখোলা মাটির মানুষ।সে খেয়া বাইতে বাইতে যে লোকগীতিগুলো গায় তার সুর মোহিত করে যাত্রীদের।তার দাবি কিছু থাকে না,পয়সা দিতে চাইলে বলে যেমন মর্জি দিতে।যখন সে খেয়া বায় না,পাড়ে নোঙর ফেলে নৌকায় ঠেস দিয়ে একদৃষ্টে চেয়ে থাকে,কি দেখে ওই জানে।নদী পাড় হতে শশ্মানটা চোখে পড়ে,মড়ার হাড় নিয়ে কুকুরের টানাটানি,মৃতের ছাই ফেলা এসব যেন চোখ সওয়া হয়ে গেছে তার।প্রথম প্রথম কেমন উদাস হত,হাত-পা অসাঢ় হয়ে যেত জ্বলন্ত চিতার তেজস্বী রূপ দেখে।আজ আর ওসব হয় না।ঐ পাড়টায় জেলেপাড়া,পাল পাল জাল বাঁধা আছে সেখানে।গেঁরি-গুগলির খোলসে পাড়টা ভরে আছে।এই মাটি ভেজা আঁশটে গন্ধটা তার খুবই চেনা।পাড়ে বসে এঁটো বাসন ধুতে এসে রাঙ্গা দিদার সাথে খুব ভাব জমেছে সুবীরের।কত গল্প বলে নিজেদের মধ্যে,এমন মাটির মানুষের কথা,সারল্যতা ওঁকে খুবই আকৃষ্ট করে।দিদা ওকে বুঝিয়েও পারেনি ঘরমুখো করতে।  আজও নৌকায় ঠেস দিয়ে বসে,সন্ধ্যা হয়ে এলেও ওর কোনো অভিপ্রায় নেই ঘরে ফেরবার।ভেসে যাওয়া শ্যাওলা-শালুকের দল দেখতে দেখতে বিভোর হয়ে পড়ে।ভরা পূর্ণিমার আলো ভেসে উঠতেই জলটাকে রূপোয় মুড়ে যেতে দেখল সে।কালো আকাশের নীচে রূপোলী জোয়ার,আরেক পাড়ে সে! কোনো চিত্রশিল্পীর পট রচনা করেছে যেন সে।খুশী ধরেছে ওর মনে,গান তুলল সুরেলা গলায়।অপূর্ব মোহময়ী রাত যেন।দূরে শশ্মানটায় আবার একটা চিতা জ্বলল শেষ রাতে,পূর্ণিমার চাঁদ দ্বীপ জ্বেলে যায় চিতার কোটরে,লোকগীতি ছেড়ে রাতটাও যেতে চায় না।তখনও মাঝি ঘরে ফেরেনি,পরিচিত সেই গেঁরি-গুগলি মাখা মাটির আঁশটে গন্ধটা ভেসে আসছে দূরের ঐ পাড় থেকে।
Like · Share

No comments:

Post a Comment