বিশ্বের সবকটি আন্তর্জাতিক ব্যাংকের নজর গরিব দেশগুলোর উপর। গরিব দেশগুলোই ব্যাংকের উপযুক্ত গ্রাহক। ধনী দেশগুলো ব্যাংকের অনৈতিক শর্ত মেনে ঋণ নেয় না। তথাকথিত ধনীদেশগুলো যথেচ্ছা অর্থ নিতে পারে এখান থেকে। মূলতঃ এসব ব্যাংক সাধারণ মানুষদের বোকা বানাতে একটা চাতুর্যপূর্ণ স্লোগান দিয়ে থাকে। স্লোগানটা হলো দারিদ্র্য বিমোচন। আকর্ষণীয় স্লোগানই বটে। কিন্তু এই ঋণের টাকায় সত্যিকার দারিদ্র্য বিমোচিত হচ্ছে কি? কি করে হবে? দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়নের নামে যে টাকা আসে তা নানা জরুরী খাতে বণ্টন হয়ে যায়। মূল খাত দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়ন পরবর্তী উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করতে থাকে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে যে পরিমাণ ঋণ ও দানের টাকা এসেছে তা দিয়ে আর একটা বাংলাদেশ নতুন করে সাজানো যেত। কিন্তু হায়! দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়ন যেই তিমীরে ছিল সেই তিমীরেই রয়ে গেল। এই ঋণের পরিবর্তে আমাদের নিজস্ব সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করলেই জনসাধারণ বেশি লাভবান হতো। ঋণের টাকা ভাগাভাগি হয় যে জরুরী খাতে তা একটু জেনে নিন। সুদের টাকা ফেরত, কথিত পরামর্শক নিয়োগসহ নানা শর্তারোপ করে বিপুল অংক ফেরত নেয়া, দালালদের ফি, সর্বোপরি "সিস্টেম লস" সরাসরি চুরি বলাটা শিষ্টাচার বিরোধী। ক্ষমতাবানরা তো লুকিয়ে এ কাজটা করে না, তাহলে চুরি বলা হবে কেন? এটাকে সিষ্টেম লস বলতে হবে। এ শব্দটার মধ্যে একটা আভিজাত্যের এবং পাণ্ডিত্যের ছাপ রয়েছে। স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশে পাকিস্তানের চিহ্নিত ২৬ পরিবারের কেউ ছিল না। এই ২৬ পরিবারই পাকিস্তানের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতো। কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশে রয়েছে! ২৬০০০-এরও বেশি ধনী পরিবার, যারা বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ টাকা তারা পেল কোথা হতে? টাকার খনি হলো আন্তর্জাতিক লগ্নি সংস্থাগুলো। বিষয়টি সবার জানা কিন্তু সবাই নীরব দর্শক। গণতন্ত্রের এটাই ধারা- Corupt The System অর্থাৎ পুরা পদ্ধতিটাই অসৎ। নিষিদ্ধ জিনিসে আকর্ষণ বেশি তাই এসব ঋণ না গ্রহণ করে সরকার চলে না। http://www.al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=2&textid=234 |
কলকাতা: অসুস্থ মহাশ্বেতা দেবীকে দেখতে আজ বিকেল পাঁচটা নাগাদ তাঁর কসবার বাড়িতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আধ ঘণ্টা তাঁদের কথা হয়৷ ১৪ তারিখ মহাশ্বেতা দেবীর জন্মদিন৷ এদিন তাঁকে জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছাও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে ভুগছেন মহাশ্বেতা দেবী৷ সম্প্রতি তাঁর জ্বরও হয়েছে৷ এর আগে গত বছর এই প্রবীণা সাহিত্যিকের জন্মদিনে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মাঝে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের সমালোচনায় সরব হন মহাশ্বেতা দেবী৷ তা নিয়ে মতভেদ প্রকাশ্যে আসে৷ এমনকী মমতার সরকারকে ফ্যাসিস্ত বলেও ক্ষোভ জানান মহাশ্বেতা৷ তার পর এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী-মহাশ্বেতা সাক্ষাত্ হল৷
রাজ্যে পালাবদলের আগে তাঁর সঙ্গে থাকা শিল্পী-বুদ্ধিজীবীদের কেউ কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের নানা কাজকর্মে ক্রমশ বীতশ্রদ্ধ হচ্ছেন৷সেই প্রেক্ষাপটে এদিন মুখ্যমন্ত্রী মহাশ্বেতা দেবীর বাড়িতে যাওয়ায় দু'জনের সম্পর্কের শৈত্য অনেকটাই কাটল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
http://www.starananda.newsbullet.in/state/34-more/32426-2013-01-12-17-04-25
শেষ পর্যন্ত সন্ধিই স্থাপিত হল রাজভবন আর মহাকরণের মধ্যে৷ ভাব হয়ে গেল দুই তরফেই৷ এমনকী শনিবার যুবভারতীতে মুখ্যমন্ত্রী যখন 'ভাল হওয়া এবং ভাল থাকার' শপথ পাঠ করাচ্ছেন, তখন রাজ্যপালও সেই শপথ পাঠ করেছেন৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেও কথা বলতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপালকে৷ শনিবার রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন তাঁর আগের অবস্থান থেকে একশো আশি ডিগ্রি সরে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, 'বেশি কথা না বলাই ভালো৷ কাজই আসল৷'
এ দিন যুবভারতী ক্রী.ডাঙ্গনে বিবেক যুব উত্সবের সমান্তির পর সরকার বনাম রাজ্যপালের মধ্যে তিক্ত চাপানউতোরের প্রসঙ্গ উত্থাপন করতেই নারায়ণন বুঝিয়ে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে শান্তিবার্তায় সাড়া দিতে তিনি নারাজ নন৷ অপ্রিয় প্রসঙ্গগুলি নিয়ে তিনি আর জলঘোলা করতে চান না৷
আসলে 'সন্ধি'-র সুপবন এ দিন আগাগো.ডাই বইছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের মঞ্চে৷ যে মঞ্চে পাশাপাশি বসে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল৷ কে বলবে, এই রাজ্যপালকেই লাল কার্ড দেখানোর হুমকি দিয়েছিলেন মমতার মন্ত্রিসভার প্রবীণ মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ দু'জনের 'বডি ল্যাঙ্গুয়েজে' অশান্তির লেশমাত্র নেই৷ মঞ্চেই হাসি-গল্পে মশগুল৷ কখনও মমতা তাঁর কানে কানে কিছু জরুরি কথা বলছেন৷ হেসে উত্তর দিচ্ছেন রাজ্যপাল৷ মুখ্যমন্ত্রীও হাসিমুখে শুনছেন৷ আবার, কখনও মমতার হাত ধরে কথা বলছেন নারায়ণন৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাঁধে হাত দিয়েও রাজ্যপালকে কিছু বোঝাতে দেখা যায়৷
যাঁর কটাক্ষের জেরে সরকার বনাম রাজ্যপালের লড়াই তুঙ্গে উঠেছিল সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন গরহাজির ছিলেন বিবেক যুব উত্সবে৷ তা নিয়ে সারাদিন ধরে রাজনৈতিক মহলে ছিল জোর জল্পনা৷ ফিসফিসানিও৷ কোথায় সুব্রতবাবু? যেখানে রাজ্য মন্ত্রিসভার তাবড় সদস্যেরা প্রায় সকলেই হাজির, মমতা-রাজ্যপালকে ঘিরে চাঁদের হাট, সেখানে কেন দেখা গেল না পঞ্চায়তমন্ত্রীকে!
এ দিন যুবভারতীতে যখন যুব উত্সব নিয়ে মাতামাতি, তখন সুব্রতবাবু একাকী মহাকরণে৷ দুপুর পৌনে বারোটায় তিনি আসেন রাজ্য প্রশাসনের সদর দন্তরে৷ স্বামী বিবেকানন্দ ও মাস্টারদা সূর্য সেনের ছবিতে মালা দিয়েই তিনি সোজা চলে যান গঙ্গাসাগরে৷ পরে তাঁকে ফোনে প্রশ্ন করা হয়, 'আপনি বিবেক যুব উত্সবের উদ্বোধনে এলেন না কেন?' তাঁর উত্তর, 'কী করব, আমার তো গঙ্গাসাগর যাওয়ার কথা ছিল৷' তবে সরকারি সূত্রের খবর, আগে থেকেই তাঁর এ দিন গঙ্গাসাগরে যাওয়ার কর্মসূচি ছিল৷
বিবেক যুব উত্সবে হাজির ছিলেন শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ মমতা-নারায়ণন দৌত্যকার্যের সাফল্যে ফুল মার্কস মিলেছে তাঁর৷ উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সৌগত রায়ও৷ সুব্রত-উবাচের প্রেক্ষিতে যিনি বলতে ছাড়েননি, সংবিধানে রাজ্যপালের এক্তিয়ারের নির্দিষ্ট কোনও সীমা বাঁধা নেই৷
অন্য দিকে, এ দিন রাজভবনের কর্তার তরফে প্রোটোকলের কোনও বাহুল্যই নজরে পড়েনি৷ ফলে, নির্দ্বিধায় তাঁকে বিবেক যুব উত্সবের শপথবাণী সকলের সঙ্গে সাবলীল ভাবে পড়তে দেখা যায়৷ তিনি নিজে যখন ইংরেজিতে শপথ পাঠ করিয়েছেন, তখন সকলের সঙ্গে মমতাও তা পাঠ করেছেন৷ শপথবাক্য পাঠের সময় রাজ্যপাল সভায় আমন্ত্রিতদের অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে আর্জি জানান, 'এই মুহূর্তে আপনারা সকলেই উঠে দাঁড়ান৷'
এ দিন অনুষ্ঠানের শেষে সংবাদমাধ্যম রাজ্যপালকে ঘিরে ধরে৷ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তিনি বলেন, 'বিবেকানন্দ বলেছেন ওঠো, জাগো৷ ততক্ষণ পর্যন্ত থেমো না, যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছও৷ বিবেকানন্দ বলেছেন বেশি কথা বোলো না৷' বক্তৃতায় তিনি এমন কথাও বলেছেন যা চলতি পরিস্থিতিতে অর্থবহ৷ তিনি বলেন, 'নিজের সম্মান রক্ষা করুন, অন্যের সম্মানও লঙ্ঘন করবেন না৷'
কথায় কথা বাে.ড, এই আন্তবাক্য যদি অবলম্বন করেন রাজ্যপাল, তো পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মুখে কুলুপ আঁটাই যেন শ্রেয় বলে মনে করছেন সুব্রতবাবু৷ এ দিন সকালে একডালিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল, 'ভাঙড়-কাণ্ডে আরাবুলের পাশে দাঁড়াল দল, আর আপনার ক্ষেত্রে কী হল?' সুব্রতবাবু শুধু একটি মন্তব্যই করেছেন, 'লাল কার্ড-হলুদ কার্ড দেখানো এ-সব কোনও কিছুই আমি বলিনি৷ এ-সবের কোনও রেকর্ড দেখাতে পারবেন? আপনাদের জন্যই আমাকে মুশকিলে পড়তে হল৷' বোঝাই যাচ্ছে, রাজ্যপালের মতো সুব্রতবাবুও যুদ্ধবিরতি চান৷
কলকাতা: সরকারি মঞ্চ থেকে দলীয় কর্মসূচী ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যেই৷ এবার বিশ্ব যুব উত্সবের মঞ্চে মা-মাটি-মানুষের নামে শপথ নেওয়ানোর অভিযোগ উঠল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে৷ তিনি সরকারি অনুষ্ঠানের রাজনীতিকরণ করছেন বলে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনায় সরব হলেন তাঁর বিরোধীরা৷ তাঁদের অভিযোগ, দলীয় স্লোগানকে সরকারি স্লোগানে পরিণত করার চেষ্টা চলছে৷
মা-মাটি-মানুষ৷ এ রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িত তৃণমূলের এই স্লোগান৷ প্রায় সব অনুষ্ঠানেই এই স্লোগান শোনা যায় মমতা বা তাঁর দলের নেতাদের মুখে৷ এবার সেই দলীয় স্লোগানকেই সরকারি স্লোগানের পরিণত করার চেষ্টার অভিযোগ৷
শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশ্ব যুব উত্সবের মঞ্চে উপস্থিত সবাইকে একটি শপথবাক্য পাঠ করান মমতা৷ মা-মাটি-মানুষের নামে শপথ নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ শপথ নেন মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যরাও৷ এমনকী, সেই শপথবাক্য পাঠ করানো হয় রাজ্যপালকেও৷ তাঁদের বলতে হয়, মা মাটি মানুষকে শ্রদ্ধা জানানো আমাদের কর্ম। বেলুড় মঠের মহারাজদের উপস্থিতিতেই তৃণমূলের দলীয় স্লোগান পাঠ করতে হয় সবাইকে। দলীয় স্লোগানপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়নমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি, মহম্মদ সেলিম, তথাগত রায়দের কথায়, স্বামীজির বাণীর বদলে মা-মাটি-মানুষ কেন? বিপজ্জনক রাজনৈতিক প্রবণতা চলছে৷ রাজ্যপালও প্রতারণার শিকার, কটাক্ষ করেছেন তথাগত৷
এর আগে লোবা-তেহট্ট কিংবা মিলনমেলায় সরকারি মঞ্চ থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব সারতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে৷ এমনকী, তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভাঙড়কাণ্ডের পর মহাকরণ থেকে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও৷ আর এবার একেবারে সরকারি অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক চেহারা দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে৷
http://www.starananda.newsbullet.in/state/34-more/32425-2013-01-12-16-52-20
উত্তরভারতে তীব্র শৈত্যবপ্রবাহ ও তুষারপাত অব্যাহত থাকলেও হাড় কাঁপানো শীতে ছন্দোপতন ঘটতে চলেছে রাজ্যে। এই মুহূর্তে উত্তুরে হাওয়ার গতিপথে কোন বাধা না থাকলেও আগামী আটচল্লিশ থেকে বাহাত্তর ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের কাছাকাছি আসতে চলেছে একটি পশ্চিমীঝঞ্ঝা। এর ফলে আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টায় তাপমাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের কাছে চলে যাবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
আজ কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এগারো দশমিক দুই ডিগ্রি , স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা একুশ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি কম।
সৌজন্যে আনন্দবাজার পত্রিকা
Saturday, 23 June 2012
বিনিয়োগের পথে বড় বাধা হল অনিশ্চয়তা। আর মামলা-মোকদ্দমার জটিলতায় সেই অনিশ্চয়তারই মাত্রা বেড়ে যায়। তাই সিঙ্গুর-বিবাদকে কোর্টের আঙিনায় দীর্ঘায়িত না-করে টাটা মোটরসের সঙ্গে সমস্যা 'আপসে' মিটিয়ে নেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আর্জি জানাল শিল্পমহল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাদের বক্তব্য: লগ্নি টানতে হলে সহায়ক পরিবেশ একান্ত জরুরি। দীর্ঘ আইনি জটে লগ্নি আটকে পড়লে যে কোনও লগ্নিকারীই সে রাজ্যে পা রাখতে দু'বার ভাববেন বলে শিল্পমহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
সিঙ্গুর-আইনকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের যে রায়, টাটা মোটরস কর্তৃপক্ষ এ দিন সে সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁরা শুধু জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টাটা মোটরসের সহযোগী সংস্থাগুলিও 'সরকারি ভাবে' কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। যদিও আদালত তাদের বক্তব্য শোনায় সহযোগীদের কেউ কেউ ঘনিষ্ঠ মহলে 'সন্তোষ প্রকাশ' করেছে বলে শিল্প-সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, সিঙ্গুর-মামলায় টাটার আইনজীবী সমরাদিত্য পাল এ দিন রায়ের পরে 'ব্যক্তিগত ভাবে' দু'পক্ষের প্রতি আর্জি জানিয়েছেন, রাজ্যের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই তাঁরা যেন আলোচনায় বসে ঐকমত্যের মাধ্যমে সমাধান-সূত্র খুঁজে নেন।
শিল্পমহলের একাংশের মতে, গত ক'দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গের 'ভাবমূর্তি'ই লগ্নি আকর্ষণের পথে বৃহত্তম প্রতিবন্ধক। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম তাতে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। এবং জমির সমস্যা বা সরকারি দীর্ঘসূত্রতার চেয়েও লগ্নি-প্রস্তাব ঘিরে অনিশ্চয়তাই বেশি ভয় ধরিয়েছে লগ্নিকারীদের মনে। ঠিক যে ভাবে বাম আমলেও নানা সময়ে জঙ্গি আন্দোলনের জেরে অনিশ্চয়তায় ভুগেছে রাজ্যের শিল্পক্ষেত্র। বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াতের দাবি, এখনও অনিশ্চয়তারই জন্য পশ্চিমবঙ্গ খানিকটা লগ্নি-বিমুখ।
এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গুর-রায় তাঁকে সন্তুষ্ট করেছে বলে জানিয়েছেন রাওয়াত। একই সঙ্গে রাজ্যের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী-সহ প্রশাসনের প্রতি তাঁর আর্জি, সিঙ্গুর-মামলার জল যেন সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত আর না-গড়ায়। কারণ, তাতে আরও কয়েক বছর চলে যাবে, বাড়বে অনিশ্চয়তা। "মুখ্যমন্ত্রীকে আমার বিনীত অনুরোধ, ওই দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বদলে বরং তাঁরা আলোচনায় বসে সমস্যা মিটিয়ে নিন।" বলেন অ্যাসোচ্যাম-কর্তা। তাঁর যুক্তি: পূর্বতন ও বর্তমান সরকারের আমল মিলিয়ে এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে প্রায় পাঁচ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব রয়েছে। টাটাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সিঙ্গুর-জট কাটাতে পারলে তা ইতিবাচক বার্তা দেবে। তাতে অপেক্ষমান লগ্নির পথ সুগম হবে, আখেরে যা রাজ্যের উন্নয়ন ঘটাবে।
ফিকি'র পূর্বাঞ্চলীয় কর্তা গৌরব স্বরূপও বলছেন, লগ্নিকারীরা আইনি লড়াইয়ে ভয় পায়। তাই কেউ মামলার জালে আটকে থাকতে চায় না। এ দিনের সিঙ্গুর-রায় আইনি ব্যবস্থার উপরে মানুষের আস্থা আরও মজবুত করবে বলে আশা প্রকাশ করলেও নিছক আদালতের রায় যে লগ্নি টানতে পারে না, তা-ও স্পষ্ট জানিয়েছেন গৌরব। যাঁর মন্তব্য, "সিঙ্গুর-কাণ্ডে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল। লগ্নি দূরে সরে গিয়েছিল। সেই অবস্থার বড় কোনও পরিবর্তন এখনও হয়নি। রাজ্য সরকারেরও কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কোনও সংস্থাই আইনি লড়াইয়ে ফেঁসে থাকতে চায় না।"
বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্ট হর্ষ ঝা'র কাছেও জমির পাশাপাশি লগ্নি-সহায়ক পরিস্থিতিটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়, "ভাবমূর্তির সঙ্কট আগেও ছিল, এখনও রয়েছে। কোন সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, তা প্রাসঙ্গিক নয়। লগ্নিকারী দেখতে চান, কোথায় তাঁর লগ্নি সুরক্ষিত থাকবে। এখানেই শিল্পের প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে।"
অন্য রকম ভাবনাও অবশ্য রয়েছে। যেমন ভারত চেম্বারের প্রেসিডেন্ট অশোক আইকত সিঙ্গুরের সঙ্গে লগ্নির বিষয়টি জড়াতে নারাজ। তাঁর মতে, সিঙ্গুরের ঘটনা রাজনৈতিক বিষয়। পশ্চিমবঙ্গের 'শিল্পবন্ধু' ভাবমূর্তি আগের তুলনায় উজ্জ্বল হয়েছে বলে দাবি করছেন অশোকবাবু। পাশাপাশি এ-ও বলছেন, "সিঙ্গুর-সমস্যার সমাধান এমন হতে হবে, যাতে সব শরিক সন্তুষ্ট হয়। আর সেই সমাধান-সূত্রই রাজ্যের ভাবমূর্তি অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাবে।"
বাজেটে প্রতিশ্রুতি ছিল, রাজ্য সরকার এমন কিছু উন্নয়ন করবে, যার দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাবেন সংখ্যালঘু মানুষ। কিন্তু সরকারি তথ্যই বলছে, জনমোহিনী নীতিকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে ঘোষিত লক্ষ্য থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর। যে দফতরের দায়িত্ব খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। বছরের শেষ ভাগে এসে অর্থ দফতর জানাচ্ছে, ওই দফতরের জন্য পরিকল্পনা খাতে যত টাকা বরাদ্দ হয়েছিল, তার ৫০ শতাংশেরও বেশি এখনও খরচই করা সম্ভব হয়নি। অথচ, হাততালি কুড়োনোর প্রকল্পে দান-খয়রাতি করতে গিয়ে পরিকল্পনা বর্হিভূত খাতে বেরিয়ে গিয়েছে বরাদ্দের অতিরিক্ত অর্থ! বাড়তি খরচের সেই সংখ্যাটা খুব কম নয়, ১০০ কোটি টাকা।
কেন এই উলট-পুরাণ? সংখ্যালঘু দফতরের একাধিক অফিসার বলছেন, স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টির চেয়ে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতিই প্রাধান্য পাচ্ছে সরকারি নীতিতে। তাই পরিকল্পনা খাতের টাকা খরচ করে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লক্ষ্যে আশানুরূপ সাফল্য মেলেনি। সরকারি হিসেব বলছে, পরিকল্পনা খাতে বাজেটে বরাদ্দ ৫৭০ কোটি টাকার মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র ২৫৫ কোটি খরচ করতে পেরেছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর। অথচ, পরিকল্পনা বর্হিভূত খাতে সরকার যেখানে ৩৬৬ কোটি টাকা খরচ করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছিল, সেখানে ইতিমধ্যেই ৪৬৬ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, পরিকল্পনা খাতে ৪৪ শতাংশ খরচ হলেও পরিকল্পনা বর্হিভূত খাতে ১২৭ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে।
পরিকল্পনা বর্হিভূত খাতে ওই বাড়তি টাকা কোথা থেকে পেল সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর? রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, চলতি আর্থিক বছরে ওই দফতরের মোট বরাদ্দ ছিল ১২২১ কোটি টাকা। গত বারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। এর মধ্যে ৫৭০ কোটি পরিকল্পনা খাতে, ৩৬৬ কোটি পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে এবং ২৮৫ কোটি টাকা সরাসরি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অনুদান। রাজ্যের মাধ্যমে কেন্দ্র বেশ কিছু সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্প চালায়। ওই ২৮৫ টাকা সেই বাবদ অনুদান। প্রকল্পভিত্তিক হওয়ায় এবং এই টাকার 'ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট' দিতে হয় বলে এই খাত থেকে অর্থ নিয়ে পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতে খরচ করা সম্ভব নয়।
তা হলে?
অর্থ দফতরের এক কর্তা বলেন, "পরিকল্পনা বহির্ভূত খাতের জন্য বাড়তি টাকার দাবি জানিয়েছিল সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর। কিন্তু তাদের বলে দেওয়া হয়, যা বরাদ্দ হয়েছে, তার থেকে বাড়তি টাকা পাওয়া যাবে না।" তার ফলে হাত পড়েছে উন্নয়নের অর্থাৎ, পরিকল্পনা খাতে যে ৫৭০ কোটি বরাদ্দ হয়েছে, সেই টাকায়। ওই কর্তা জানান, "সেই বরাদ্দ ছেঁটেই চলছে নানা ধরনের হাততালি-প্রকল্প।" সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের এক কর্তা যেমন উদাহরণ দিলেন, "প্রায় ৪০ হাজার ইমাম এবং মোয়াজ্জিনকে ভাতা দিতে ১৭২ কোটি টাকা লাগবে। বাজেটে ওই টাকা ধরা ছিল না।" এই ধরনের খরচ জোগাতে গিয়ে অগ্রাধিকারের তালিকায় পিছিয়ে পড়ছে সংখ্যালঘু উন্নয়নে স্থায়ী প্রকল্প রূপায়ণের কাজ। আর প্রশ্ন উঠছে সরকারের সদিচ্ছা নিয়েও।
এমন প্রকল্পের তালিকা দীর্ঘ। যেমন, মাদ্রাসাগুলিতে বিজ্ঞান গবেষণাগার তৈরি করবে বলেছিল রাজ্য, হয়নি। বলা হয়েছিল, স্কুলপড়ুয়া মুসলিম মেয়েদের ইউনিফর্ম দেওয়া হবে, হয়নি। মাদ্রাসাগুলি কম্পিউটার পায়নি। জৈন সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি দেওয়াটাও প্রতিশ্রুতিই থেকে গিয়েছে। সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের ওই কর্তার কথায়, এর বাইরে পরিকল্পনা খাতে যেটুকু খরচ হয়েছে, তা মোটামুটি রুটিনমাফিক। যেমন, সংখ্যালঘু বিত্ত নিগমকে ঋণ দেওয়ার জন্য ২৫ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র ও মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের ভাতা ও উন্নয়নের জন্য যথাক্রমে সাড়ে সাত কোটি, সওয়া ১১ কোটি এবং ২২ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। স্থায়ী কাজের মধ্যে ১৮টি জেলায় সংখ্যালঘু ভবন ও অফিস বাড়ি তৈরির জন্য সাড়ে ছ'কোটি টাকা, দ্বিতীয় হজ হাউস তৈরিতে ৩৭ লক্ষ টাকা এবং কবরস্থানগুলির পাঁচিল দিতে ২০ কোটি টাকা খরচ করেছে সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা বলেন, "আর্থিক বছর শেষ হতে এখনও তিন মাস বাকি। তত দিনে প্রতিশ্রুতি মতো প্রকল্পে আমরা সব খরচ করব। অর্থ দফতর সব টাকা দিয়ে দেবে।"
মন্ত্রী যা-ই বলুন না কেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্থায়ী উন্নয়নে সরকারের মন নেই বলেই বেশির ভাগ মানুষের মত। বিশিষ্টরা অনেকেই মনে করেন, এই কাজে সরকারের কোনও দিশাও নেই। অধ্যাপক ওসমান গনির বক্তব্য, "যা চলছে, তা নিতান্তই ছেলেমানুষি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া কোনও কালেই উন্নতি সম্ভব নয়। তার বদলে খয়রাতি চলছে। বিধান রায়, প্রফুল্ল সেনদের দেখেছি। সিদ্ধাথর্শঙ্কর রায় মাটির ভাঁড়ে চা খেয়ে মাদ্রাসা বোর্ডের সূচনা করেছিলেন। আর এখন সব কিছুই অনুষ্ঠানসর্বস্ব।" প্রায় একই সুরে মীরাতুন নাহারও বলেন, "সংখ্যালঘু উন্নয়নের নামে যে ভাবে টাকা খরচ হচ্ছে, তাতে কাজের কাজ হচ্ছে না। এতে মুখ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিক বাহবা পেতে পারেন, কিন্তু সংখ্যালঘুরা আদতে পিছিয়েই পড়ছেন।" একই ধরনের কথা শোনা গিয়েছে এ দিন শহিদ মিনারে কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের এক সভাতেও। সেখানে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় আসার আগে মুসলিমদের উন্নয়ন নিয়ে তৃণমূল যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার বেশির ভাগই পূরণ হয়নি। এর পরেই পরিষ্কার হুঁশিয়ারির সুরে বলা হয়, এমন চললে ভোটেই জবাব দেওয়া হবে।
এইখানেই প্রশ্ন, হাততালি-কুড়োনোর প্রকল্পে ঢালাও খরচ করে তা হলে লাভ কী হল তৃণমূলের?
http://www.starananda.newsbullet.in/state/34-more/32427-2013-01-13-03-59-41
Sunday, 13 January 2013
প্রথমে হলদিয়া পরে আসানসোল, বাম যুব সংগঠনের সভায় হামলার ঘটনা ঘটল। দু'ক্ষেত্রেই অভিযোগ সেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ফের দলীয় কর্মসূচীতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। উভয় জায়গাতেই সভার আগে ভাঙা হল সভামঞ্চ। আজ হলদিয়ায় জনসভা করার কথা ছিল ডিওয়াইএফআইয়ের। কিন্তু তার আগেই গতকাল রাতে সভামঞ্চ ভাঙচুরের পাশাপাশি ভেঙে দেওয়া হয় সভার মাইকও। অন্যদিকে আজ বারাবনির বুড়াডাঙায় ডিওয়াইএফআই এর এক নম্বর লোকাল কমিটির অষ্টম সম্মেলন চলছিল। অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় পনেরোজন কর্মী লাঠি, হকির স্টিক নিয়ে ডিওয়াইএফআই কর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
বারাবনিতে হামলাকারীরা পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় বলেও অভিযোগ। ডিওয়াইএফআই কর্মীদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিস ঘটনাস্থলে অনেক দেরিতে পৌঁছেছিল।
স্টার আনন্দের খবরঃ
জমি নিয়ে বিবাদের জেরে উত্তেজনা রাজাবাগানের যুগিপাড়া এলাকায়৷ বন্দর এলাকার এই ঘটনাতেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ রাজাবাগান থানার যুগিপাড়া এলাকায় পুলিশের সামনেই গুলি চালিয়ে বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যায় একদল দুষ্কৃতী৷
যুগিপাড়া এলাকায় একটি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন আদালতে মামলা চলছে৷ অভিযোগ, রবিবার সকালে ওই জমিতে খুঁটি পুঁততে যায় এক পক্ষ৷ অপর পক্ষ পুলিশে খবর দেয়৷ এরপর পুলিশের সামনেই জমির পাশের একটি দোকানে ঢুকে গুলি চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী৷ তারপর বোমা ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ৷ দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে জখম দু'জন৷ একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷
ঘটনার পরই রাজাবাগান থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা৷ এলাকায় যান ডিসি বন্দর ভি সলমন৷ তিনি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দেন৷
ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শেখ বাবলু নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশ পিকেটও বসানো হয়৷ তবে কী ভাবে পুলিশের সামনেই দুষ্কৃতিরা এই হামলা চালাল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে৷
অবশেষে প্রথম ব্রিগেডিয়র স্তরে ফ্ল্যাগমিটে সম্মত হল পাকিস্তান। সীমান্ত ঘিরে গত কয়েকদিনের বেড়ে চলা উত্তেজনার পর গতকাল ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান এনএকে ব্রাউন জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের তরফে অস্ত্রবিরতির চুক্তিভঙ্গ লাগাতার চলতে থাকলে ভারত কড়া পদক্ষেপ নেবে। এরপর আজ পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়েছে তারা সোমবার ফ্ল্যাগ মিটের জন্য প্রস্তুত। আগামিকাল একটায় পুঞ্চে আলোচনায় বসবেন ভারত-পাকিস্তানের কমান্ডাররা।
ভারতের পক্ষ থেকে আগেও কয়েকবার ফ্ল্যাগমিটের আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের তরফে এই বিষয়ে সদর্থক কোন প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত ভারতের তরফে কড়া হুঁশিয়ারির পরেই আলোচনায় রাজি হয় পাকিস্তান। গত শনিবার পর্যন্ত এলওসি-র উভয় দিকেই তীব্র গুলিগোলা চলেছে।
কিন্তু বাংলায় বা বাংলাদেশে পক্ষপ্রতিপক্ষের কোনওফ্লাগমিটের আদৌ কোনও সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে বাঙ্গালির চোখে অস্পৃশ্য বাঙ্গালির অন্য মুলুক ত্রিপুরাতে ও দুই বাংলারই অনুরণণ।মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত থাকলেও চাপে পড়ে আবদুর রেজ্জাক মোল্লাকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল আর এন টেগোর হাসপাতাল। সিপিআইএমের তরফে আগেই এই অভিযোগ করা হয়। এ বার লিখিত অভিযোগ জানিয়ে হাসপাতালের কর্ণধার ডক্টর দেবী শেঠীকে চিঠি দিলেন দলের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী।
রবিবার ভাঙড়ে আক্রান্ত হওয়ার পর সোমবারই শুধুমাত্র এক্স-রে রিপোর্টের ভিত্তিতে আবদুর রেজ্জাক মোল্লাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাত তাড়াতাড়ি তাঁকে ছেড়ে দিতে চাওয়ার পিছনে রাজনৈতিক প্রভাবের কথা বলেছিলেন সিপিআইএম নেতারা। পরে, রেজ্জাক মোল্লার এমআরআই রিপোর্টে জানা যায় তাঁর মেরুদণ্ডে গুরুতর চোট আছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, রেজ্জাক মোল্লার মেরুদণ্ডের এল-ওয়ান হাড়ে চিড় ধরেছে। হাড়টি বেঁকে গিয়েছে। মেরুদণ্ডের এল-টু এল-থ্রি, এল-থ্রি এল-ফোর, এল-ফোর এল-ফাইভ এবং এল ফাইভ-এস ওয়ান হাড়ের মধ্যবর্তী গ্রন্থিও নড়ে গিয়েছে। জল জমেছে কোমরের হাড়ের একাংশে।
এমআরআই রিপোর্টে মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত ধরা পড়ায় রেজ্জাক মোল্লা এখনও হাসপাতালেই চিকিত্সাধীন। তবে, সোমবার শুধুমাত্র এক্স-রে রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ? সংবাদমাধ্যমের কাছে এই প্রশ্ন তোলার পর এ বার অভিযোগ জানিয়ে হাসপাতালের কর্ণধারকে চিঠি দিল সিপিআইএম নেতৃত্ব।
স্টার আনন্দের প্রতিবেদনঃ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রেজ্জাক ইস্যুতে সুর চড়াচ্ছে সিপিএম৷ রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমদের নাটক-তত্ত্ব নিয়ে এদিন নতুন করে আক্রমণ শানালেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু৷
শনিবার সরকারের চাপে প্রভাবিত হয়ে রেজ্জাককে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাসপাতাল প্রধানকে চিঠি দেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ রবিবার, রেজ্জাককে দেখতে গিয়ে সুর আরও চড়ান সিপিএম সম্পাদক বিমান বসু৷ তাঁর কটাক্ষ, তৃণমূল বলেছিল হাসপাতালে শুয়ে নাটক করছেন রেজ্জাক মোল্লা৷ যদি, নাটকই করেন, তাহলে রেজ্জাকের মেরুদণ্ডে চিড় ধরল কী করে? তাহলে আসল নাট্যকার কে? প্রশ্ন তোলেন বিমান বসু৷
এদিন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নিয়ে আরাবুল ইসলামকেও কটাক্ষ করেন বিমান বসু৷ এদিকে, হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেজ্জাক মোল্লার শারীরিক অবস্থা একই রয়েছে৷ তাঁকে আরও বেশ কিছুদিন হাসপাতালেই থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিত্সকেরা৷ স্বাভাবিক খাবারই দেওয়া হচ্ছে প্রবীণ এই সিপিএম নেতাকে৷
http://www.starananda.newsbullet.in/state/34-more/32441-2013-01-13-11-15-26
চোদ্দই ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরই কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন বাম কর্মী সমর্থকরা। প্রার্থীদের সমর্থনে চলছে প্রচার। কিন্তু ছন্নছাড়া অবস্থা কংগ্রেসের। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার কংগ্রেস শিবির। লক্ষ্য সপ্তম বামফ্রন্ট সরকার। সেই লক্ষ্যেই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ উপেক্ষা করে প্রচারে নেমে পড়েছেন সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা।
শাসক বাম শিবিরের তুলনায়, বিরোধী কংগ্রেস শিবির কিছুটা ছন্নছাড়া। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতে না হতেই দলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। বক্সনগর কেন্দ্রে তোফাজ্জল হোসেনকে প্রার্থী না করায়, নিজেদেরই বেশ কয়েকটি দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তোফাজ্জল হোসেন গোষ্ঠীর লোকজন। পোড়ানো হয় পতাকা-ফেস্টুন। গোষ্ঠীকোন্দে উত্তপ্ত চড়িলাম, কমলাসাগর, বীরগঞ্জ এবং চণ্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রও।
ত্রিপুরা বিধানসভায় মোট ৬০টি আসনের মধ্যে ৪৯টি আসন বামেদের দখলে। উনিশশো আটাত্তরে ত্রিপুরায় প্রথম ক্ষমতায় আসার পর উনিশশো তিরানব্বই সালে মাত্র একবার পরাজিত হয় বামেরা। এরপর থেকে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় থেকেছে বামেরা। এইমুহূর্তে গোটা দেশে একমাত্র ত্রিপুরায় ক্ষমতায় বামফ্রন্ট সরকার। কেরালা এবং পশ্চিমবঙ্গে বামেদের বিপর্যয়ের পর, ত্রিপুরার দুর্গকে অক্ষত রাখতে সর্বোতভাবে ভোটযুদ্ধে নামছেন তাঁরা।
দু`দিন আগে ভারত-পাক সীমান্তে মেন্ধর সেক্টরে ঢুকে পড়ে দুই ভারতীয় জওয়ানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাক সেনা। ফলে লঙ্ঘিত হয় ২০০৩ -এর অস্ত্রবিরতির চুক্তি। এই ঘটনার পর এশিয়া মহাদেশের দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ নতুন করে বাড়তে শুরু করে।
আগামী পনেরোই জানুয়ারি হলদিয়ায় শুরু হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের শিল্প সম্মেলন। তবে বেঙ্গল লিডসের আগে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন শিল্পমহল। সেই উদ্বেগের কথা এবার প্রকাশ্যেই বলতে শুরু করছেন তাঁরা। শীর্ষ সম্মেলনের এক সপ্তাহ আগে রাজ্য জুড়ে অশান্তির আগুন জ্বলছে। রাজ্যের বেহাল সড়ক নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, বিহার থেকে বাংলায় ঢুকলে প্রাণ হাতে চলে আসে। রাজ্যপাল বলছেন গুণ্ডারাজ চলছে। প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি বিনিয়োগ টানার ভাবমূর্তি রয়েছে বাংলার।
গুজরাটের সাফল্য ভারতের সাফল্য। ভাইব্রান্ট গুজরাট সম্মেলনে এমনই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিনিয়োগকারীদের স্বতস্ফূর্ত যোগদানে এবারও যথারীতি সফল গুজরাটের শিল্প সম্মেলন। দ্বিতীয় দিনেই ২৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব সহ ১২টির বেশি মউ স্বাক্ষর হয়েছে।
সম্মেলনের প্রথম দিনটা কেটেছিল শিল্পমহলের প্রশস্তি আর অভিনন্দন নিতেই। শনিবার থেকেই বিনিয়োগ টানতে পুরোদমে নেমে পড়ল টিম মোদি। এদিনই পেট্রোরসায়ন ও শক্তিক্ষেত্রে ছাব্বিশ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব সহ মোট বারোটি মউ স্বাক্ষর হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে মুকেশ অম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ও টাটা গোষ্ঠীও। মোদির দাবি, এই সাফল্য শুধু গুজরাটের নয়, গোটা দেশের।
তবে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে গুজরাটের অগ্রগতির গতি কিছুটা কম। চিনা উত্পাদনকারীদের দাপটে আন্তর্জাতিক বাজারে যথেষ্টই কোণঠাসা তারা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে বৃদ্ধির চেনাছন্দে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছে গুজরাট সরকার। শিল্পে অগ্রগতি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী মোদি, পরবর্তী সম্মেলনের জন্যও আগাম আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীদের।
ভারী শিল্প বিনিয়োগ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে উন্নয়নের পরিকল্পনার পাশাপাশি, পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও কিছু এবার মউ স্বাক্ষর করেছে গুজরাট সরকার। ডেনমার্ক সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত হয়েছে জল পরিশোধন সংক্রান্ত চুক্তি। বিশেষ বিমান পরিবহণের বিষয়ে গুজরাট সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করেছে থাই এয়ারওয়েজ।
নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক বর্বরতা নিয়ে চরমে উঠল প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের চাপান উতোর। পাক বর্বরতা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানে সন্তুষ্ট নয় প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়েছে তারা। যদিও, পাকিস্তানের ওপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর কৌশলেই অনড় কেন্দ্রীয় সরকার।
নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক পাশবিকতা নিয়ে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। প্রধান বিরোধী দল বিজেপির দাবি, যে বর্বরতার সঙ্গে ভারতীয় সেনার দুই জওয়ানকে হত্যা করা হয়েছে, কঠোরভাবে তার জবাব দিক কেন্দ্র। অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ছিন্ন করারও দাবি জানিয়েছে তারা।
উত্তেজনা আরও বেড়েছে লস্কর-এ-তৈবা প্রধান হাফিজ মহম্মদ সইদের হুমকিতে। আগামীদিনে কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে হুমকি দিয়েছেন সঈদ। পাক বর্বরতার উপযুক্ত জবাব দেওয়ার দাবিতে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপি। বিজেপির সমালোচনার জবাব এসেছে কংগ্রেসের তরফেও।
সমালোচনার জবাবে বিজেপিকে, এনডিএ-এর আমলে কান্দাহার বিমান অপহরণকাণ্ড ও সংসদে জঙ্গি হামলার ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। কূটনৈতিক চাপ বাড়িয়েই পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার কৌশলে অনড় শাসক দল কংগ্রেস। এই উত্তপ্ত রাজনৈতিক বাতাবরণেই নিয়ন্ত্রণরেখায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক পাক অনুপ্রবেশকারীকে। জম্মুর রণজিত্ গেট এলাকায় তাকে গ্রেফতার করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
বারাসতে ইভটিজিংয়ের ঘটনায় অভিযোগকারিণীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারিণী সংবাদমাধ্যমকে বিশেষ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও ঘটনায় নাম জড়িয়েছে স্থানীয় তৃণমূল তেতৃত্বের। শনিবার দুপুরে ইভিটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় হামলার ঘটনা ঘটে বারাসতে। মারধরে গুরুতর আহত এক যুবককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।
ঘটনাস্থল বারাসত থানার বামুনগাঠি এলাকার একটি বেসরকারি সংস্থার মহিলাকর্মীদের অভিযোগ, কাজে যাওয়ার পথে প্রায়ই তাঁদের উত্যক্ত করত এলাকার কয়েকজন যুবক। শনিবার সংস্থার এক মহিলাকর্মীকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করে এক যুবক। এরপরেই তিনি সহকর্মীদের ডেকে এনে প্রতিবাদ জানান। তখনই ওই কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ে অভিযুক্ত যুবক এবং তার সঙ্গীরা।
মারধরে গুরুতর আহত হন কারখানার এক কর্মী। তাঁকে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হন অভিযোগকারিণীও। প্রাথমিক চিকিত্সার পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নয়, একজনের হাতে সব ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণে বিশ্বাসী রাজ্য সরকার। সেকারণেই রাজ্যে চরম অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হলদিয়ার সুতাহাটায় সিপিআইএম নেতা নিরুপম সেন আজ এই অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগ, সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতার কারণেই রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
রাজ্যে একের পর এক রাজনৈতিক হামলার জন্য শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন নিরুপম সেন। হলদিয়ার সুতাহাটায় তিনি বলেন, "বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল সরকার। কিন্তু দেড় বছরের মধ্যেই মানুষের ক্ষোভকে ভয় পেতে শুরু করেছে তাঁরা।" সেকারণেই রাজ্যে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাজ্য সরকারের অক্ষমতার কারণে ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে হলদিয়া শিল্পাঞ্চল। সিপিআইএম নেতা নিরুপম সেন আজ এই অভিযোগ করেন। সুতাহাটায় ডিওয়াইএফআই এর সম্মেলনে তিনি বলেন, বাম শাসনকালে দীর্ঘ চেষ্টায় গড়ে উঠেছিল হলদিয়া শিল্পাঞ্চল। কিন্তু রাজ্য সরকারের শিল্পনীতির কারণে, তা চরম সঙ্কটে পড়েছে বলে অভিযোগ প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রীর।
আতঙ্কে নিবেদিতার বাড়ির বাসিন্দারা
উত্তর কলকাতার বাগবাজারে পুরসভার অধিগৃহীত ভগিনী নিবেদিতার বাড়ি থেকে আবাসিকদের বের করে দেওয়ার জন্য শুক্রবারই নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যদিও সরকারের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও টাকা হাতে পাননি জমির মালিক৷ মেলেনি কাগজপত্র৷ তার আগেই খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি ছাড়া করার হুমকি দেওয়ায় এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন আবাসিকরা৷
মুখ্যমন্ত্রীর হুমকি-বার্তা শোনার পর থেকেই ভয়ে ভয়ে রয়েছেন বাড়ির বর্তমান মালিক প্রবীর বসাক৷ এই বুঝি পুলিশ এসে ঘাড়ধাক্কা মেরে ঘর থেকে বের করে দেবে, এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন তিনি৷ বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের অবস্থাও একই৷ শনিবার প্রবীরবাবু বলেন, 'টাকাই হাতে পেলাম না, অথচ মুখ্যমন্ত্রী না জেনে বুঝেই বলে দিলেন, টাকা মেটানো হয়ে গিয়েছে৷ শুনলাম, মুখ্যমন্ত্রী নাকি পুর কমিশনারকে বাড়ি খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ এটা শোনার পর থেকে আমরা বেশ ভয়ে ভয়ে রয়েছি৷ বাড়ির সদস্য বলতে আমি আর আমার স্ত্রী৷ বাড়ির একটা অংশে আমার মেয়ে-জামাই থাকে৷ মুখ্যমন্ত্রী যা বলছেন তাতে আমাদের এখনই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে৷ এই বুড়ো বয়সে কোথায় যাব বলতে পারেন?'
সরকারের ভূমিকায় হতাশ প্রবীরবাবু বলেন, '১৬ এ, বোসপাড়া লেনের এই বাড়িতে আমার বাপ-ঠাকুরদারা জীবন কাটিয়েছেন৷ আমিও ছোট বেলা থেকে এখানেই বসবাস করছি৷ এই বাড়িতে ভগিনী নিবেদিতা থাকতেন বলে বাড়ির লোকেদের কাছ থেকে কখনও শুনিনি৷ আসলে এসব কিছু নয়৷ আমাদের বাড়ি থেকে হটানোর জন্যই এখানে নিবেদিতা থাকতেন বলে রটিয়ে দেওয়া হয়৷ প্রথমদিকে আমি বাড়ি ছাড়তে রাজি ছিলাম না৷ তখন আমাদের উপর নানাভাবে চাপ দেওয়া শুরু হয়৷ তাতে কাজ না হওয়ায় সরকার জমি অধিগ্রহণ আইনে বাড়িটির দখল নেওয়ার জন্য নোটিস দেয়৷' তিনি আরও বলেন, 'কিন্ত্ত এখনও পর্যন্ত আমি টাকা হাতে পাইনি৷ তার আগেই সরকার কী করে আমাদের বাড়ি থেকে তাড়াতে পারে? আমি মুখ্যমন্ত্রী এবং মেয়রের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, বাড়ি খালি করার জন্য আমাকে মাস আটেক সময় দেওয়া হোক৷ কিন্ত্ত সরকার সেই সময়টুকুও দিতে চাইছে না৷ আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মুখে বলেন, উনি নাকি জোর করে জমি অধিগ্রহণের ঘোরতর বিরোধী৷ অথচ, উনি এখানে সেই কাজটাই করছেন৷ ওনার কাছ থেকে এমনটা আশা করিনি৷'
পুরসভা সূত্রের খবর, ১৮৯৪ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনে বাড়িটি অধিগ্রহণ করার জন্য মালিক পক্ষকে ইতিমধ্যেই নোটিস ধরানো হয়েছে৷ পাঁচ কাঠার ওই জমির দাম ধার্য হয়েছে প্রায় ১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা৷ জমিটি অধিগ্রহণ করে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার হাতে তুলে দেবে পুর কর্তৃপক্ষ৷ তারা বাড়িটিকে মেরামত করে আধুনিক মানের মিউজিয়াম গড়ে তুলবে৷ পুরোটাই অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা৷ স্বামী বিবেকানন্দের জন্মের সার্ধ শতবর্ষ উপলক্ষ্যে নিবেদিতার ব্যবহূত এই বাড়ি সংষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সংষ্কৃতিমন্ত্রক৷ তার জন্য যে অর্থ খরচ হবে তার পুরোটাই কেন্দ্র বহন করবে৷
প্রবীরবাবুর দাবি, ওই বাড়িতে ভগিনী নিবেদিতা কোনওদিনই বসবাস করতেন না৷ নিবেদিতা ১৬/১এ বোসপাড়া লেনের একটি বাড়িতে থাকতেন৷ সেই জায়গায় এখন নতুন বাড়ি উঠেছে৷ ঠিকানাও বদলে গিয়েছে৷ ফরাসি লেখক লিজেল রেঁমর লেখা একটি বইয়ের তথ্যকে প্রামাণ্য নথি হিসাবে তুলে ধরছেন তিনি৷ 'দি ডেডিকেটেড/ আ বায়োগ্রাফি অফ নিবেদিতা' নামে ওই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, নিবেদিতা যে বাড়িতে বসবাস করতেন, সেটি ছিল টালির চালের৷ অত্যন্ত সাদামাটা একটি বাড়ি৷ দেওয়াল ছিল মাটির৷ কিন্ত্ত ১৬ এ বোসপাড়া লেনে যে বাড়িটিকে নিবেদিতার বাসস্থান হিসাবে সরকার অধিগ্রহণ করছে সেটি দোতলা পাকা বাড়ি৷
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'বাড়িটিতে সত্যিই কোনওদিন ভগিনী নিবেদিতা থাকতেন কিনা, সে ব্যাপারে পুরসভার কাছে কোনও রেকর্ড নেই৷ তবে লোকে ওটাকেই নিবেদিতার বাড়ি বলে৷' তবে কীসের ভিত্তিতে বাড়িটি এতটাকা দিয়ে অধিগ্রহণ করা হচ্ছে? মেয়র কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি৷
পুর কমিশনার খলিল আহমেদ বলেন, 'বাড়ির মালিক টাকা পেয়েছেন কি না বলতে পারব না৷ রাজ্য সরকারের যে দপ্তর জমি অধিগ্রহণ করে আমরা তাদের হাতে চেক তুলে দিয়েছি৷ বাকিটা তাদের ব্যাপার৷
No comments:
Post a Comment