Friday, May 30, 2014

এই ভারতবর্ষে বাংলায় কথা বলা রীতিমত বিপজ্জনক।ওপার বাংলায় কিন্তু পয়লা জুলাই থেকে সর্বস্তরে বাংলা অনিবার্য। আবার সেই দুই বাংলা এক করার স্বপ্ন! আরএসএস লোকসভা নির্বাচনে এ লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবকে নিয়োজিত করে এবং হিন্দুত্ববাদী বিজেপিকে বিরাট বিজয় পেতে সহায়তা করে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করা বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি।অনুপ্রবেশকারি তকমা দিয়ে ভিন রাজ্যের বাঙালিদের এবং বাংলাতেও উদ্বাস্তুদের তল্পতল্পা সহ তাড়ানো বাংলার পদ্মপ্রলয়ের প্রথম প্রতিশ্রুতি।

এই ভারতবর্ষে বাংলায় কথা বলা রীতিমত বিপজ্জনক।ওপার বাংলায় কিন্তু পয়লা জুলাই থেকে সর্বস্তরে বাংলা অনিবার্য। আবার সেই দুই বাংলা এক করার স্বপ্ন!

আরএসএস লোকসভা নির্বাচনে এ লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবকে নিয়োজিত করে এবং হিন্দুত্ববাদী বিজেপিকে বিরাট বিজয় পেতে সহায়তা করে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করা বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি।অনুপ্রবেশকারি তকমা দিয়ে ভিন রাজ্যের বাঙালিদের এবং বাংলাতেও উদ্বাস্তুদের তল্পতল্পা সহ তাড়ানো বাংলার পদ্মপ্রলয়ের প্রথম প্রতিশ্রুতি।

পলাশ বিশ্বাস

এই ভারতবর্ষে বাংলায় কথা বলা রীতিমত বিপজ্জনক।ওপার বাংলায় কিন্তু পয়লা জুলাই থেকে সর্বস্তরে বাংলা অনিবার্য। আবার সেই দুই বাংলা এক করার স্বপ্ন!

আরএসএস লোকসভা নির্বাচনে এ লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবকে নিয়োজিত করে এবং হিন্দুত্ববাদী বিজেপিকে বিরাট বিজয় পেতে সহায়তা করে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করা বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি।অনুপ্রবেশকারি তকমা দিয়ে ভিন রাজ্যের বাঙালিদের এবং বাংলাতেও উদ্বাস্তুদের তল্পতল্পা সহ তাড়ানো বাংলার পদ্মপ্রলয়ের প্রথম প্রতিশ্রুতি।

আলোয় ফেরা মেয়েরা বাংলা বললেই ফেরত কেন

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা, ৩০ মে, ২০১৪, ০৩:৩০:৩২


e e e print

11

পাকেচক্রে নানা প্রান্ত থেকে তাঁরা এসে পড়েন যৌন পল্লিতে। চাইলেও সেখান থেকে নিজেরা বেরিয়ে আসবেন, এমন ক্ষমতা অধিকাংশ মহিলারই থাকে না। সরকারি বা কোনও বেসরকারি উদ্যোগে উদ্ধার পেলেও তাঁদের নিয়ে টানাপড়েন চলতেই থাকে। যেমন মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন যৌন পল্লি থেকে উদ্ধারের পরে কোনও মহিলা বাংলায় কথা বললেই তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। তার পরে তাঁদের কী হবে, তার ঠিক থাকে না।

শশীদেবীর অভিযোগ, যৌন পল্লি থেকে যে-সব মহিলাকে উদ্ধার করা হয়, তাঁরা আদতে কোথা থেকে এসেছেন, তা যথাযথ ভাবে খতিয়ে না-দেখেই মহারাষ্ট্র সরকার সরাসরি তাঁদের বাংলার হোমগুলিতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে কিছুই জানতে পারছে না। কারণ, সরকারি স্তরে এই ব্যাপারে কোনও যোগাযোগই করা হচ্ছে না। মন্ত্রী জানান, এই ব্যবস্থা বন্ধ করতে আজ, শুক্রবার মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের একটি চুক্তি হচ্ছে। ওই চুক্তিতে বলা থাকছে, যৌন পল্লি থেকে উদ্ধারের পরে কোনও মহিলা বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাঁকে নির্বিচারে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে না। ওই মহিলা আদতে কোন রাজ্য বা কোন দেশের বাসিন্দা, তা ঠিকঠাক চিহ্নিত করার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

পেটের দায়ে কাজের খোঁজে, অনেক সময় প্রতারকের প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে, আবার কখনও কখনও আড়কাঠির পাল্লায় পড়ে নিত্যদিন অজস্র কিশোরী-তরুণী যৌন পল্লিতে পৌঁছে যান। সঙ্গে সঙ্গে উবে যায় প্রেম। মুক্তির জন্য ডানা ছটফটালেও অনেকেই আর ফিরতে পারেন না। সীমান্ত পেরিয়ে আসা এমন মেয়ের সংখ্যা অগণ্য। মাঝেমধ্যে সরকারি উদ্যোগে পুলিশের তৎপরতায় কোনও কোনও মেয়েকে উদ্ধার করে বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক সময়েই পরিবারের অবহেলা এবং প্রতিবেশীদের বিদ্রুপ তাঁদের আবার যৌন পল্লিতে ফিরে যেতে বাধ্য করে। হোমে ঠাঁই মিললেও স্বস্তির জীবন অধরাই থেকে যায় ওই মেয়েদের। নানা ফাঁদে পা দিয়ে বাংলাভাষী অনেক মেয়েরই ঠাঁই হয় মুম্বইয়ের বিভিন্ন প্রান্তের যৌন পল্লিতে। মহারাষ্ট্র সরকার এমন কিছু কিছু মেয়েকে উদ্ধার করছে ঠিকই। কিন্তু ওই সব মেয়ের ভবিষ্যতের কথা না-ভেবে পত্রপাঠ তাঁদের বাংলায় ঠেলে পাঠাচ্ছে বলে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশীদেবীর অভিযোগ।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্র সরকার তাদের রাজ্যের বিভিন্ন যৌন পল্লি থেকে উদ্ধার করে বহু মহিলাকেই এখানকার হোমগুলিতে পাঠিয়ে দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশি। তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমস্যায় পড়ছে রাজ্য। তৈরি হচ্ছে নানা প্রশাসনিক জটিলতা। তাই পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রের মধ্যে এই বিষয়ে একটি চুক্তির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ওই চুক্তির পরে মহারাষ্ট্র সরকার কোনও মহিলাকে এ রাজ্যে পাঠাতে চাইলে একক সিদ্ধান্তে সেটা করতে পারবে না। রাজ্যে নারী পাচার নিয়ে যে-টাস্ক ফোর্স আছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এবং কোনও মহিলা বাংলাদেশি হলে তাঁকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে মহারাষ্ট্র সরকারকেই।

http://www.anandabazar.com/state/%E0%A6%86%E0%A6%B2-%E0%A7%9F-%E0%A6%AB-%E0%A6%B0-%E0%A6%AE-%E0%A7%9F-%E0%A6%B0-%E0%A6%AC-%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A6%B2-%E0%A6%87-%E0%A6%AB-%E0%A6%B0%E0%A6%A4-%E0%A6%95-%E0%A6%A8-1.36299

এই ভারতবর্ষে বাংলায় কথা বলা রীতিমত বিপজ্জনক।ওপার বাংলায় কিন্তু পয়লা জুলাই থেকে সর্বস্তরে বাংলা অনিবার্য।


রবীন্দ্র,বিবেকানন্দ,নেতাজি,মাইকেল,নজরুল,বিভুতি,রে,ঘটক ইত্যাদি ব্রান্ডেড আইকনই একন বাঙালির আত্মপরিচয়,যা উদ্বাস্তু উপনিবেশে সেই ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি।বেকাযদায় পড়ে অবাঙালি জনপদে হুন্কার দিয়ে নিজেকে রবীন্দ্র নেতাজি বিবকের বংশধর বলে ব্রাত্য উদ্বাস্তু জীবনেও অন্যান্যদের সম্মান আদায় করত তাঁরা।নাগরিকত্ব আইনের পর সেই সম্মানটুকু থেকে বেদখল বাঙালি।বাঙালিবাবূ বা বাবু মোশায় বা বন্ধু শব্দবন্ধ বাংলাদেশি ফতোয়াতে উধাও। সেই 1971এর কথা মনে পড়ে,অবিভক্ত উত্তর প্রদেশে তখন উদ্বাস্তু উপনিবেশগুলিতে তখন আশার আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে,পাকিস্তানি জল্লাদের কবল থেকে মুক্ত বাংলা আবার এক হবে।ইন্দিরা গান্ধী আবার দুই বাংলা এক করে দেবেন।


উদ্বাস্তুরা যারা পন্চাশ বা ষাটের দশকে ওপার বাংলায় সবকিছু হারিয়ে এসেছিলেন তাঁরা দলে দলে ওপার বাংলায় শত্রু সম্পত্তি ঘোষিত ভিটে মাটির খোঁজ করতে বাংলায় দৌড়ে এসেছিলেন।অনেকে আবার উদ্বাস্তু উপনিবেশে ঘর বাড়ি জমি জায়গা জলের দামে বিক্রী করে আবার বাংলা মায়ের বুকে ফেরত আসতে চেয়েছিলেন।ঐ বাহালিত্বের চরমোত্কর্ষ দেখা যায় পশ্চিমবাংলার মরিচঝাঁপিতে দলিত শরণার্থীদের বৈপল্বিক গণহত্যায়।


সেদিন এবং সেই 1971 নৈনীতাল থেকে দৌড়ে ঢাকায় পৌঁছে সর্বভারতীয় উদ্বাস্তু নেতা আমার বাবা দুই বাংলা এক করে স্বাধীন বাংলাদেশের জেলে এক বছর কাটিয়ে এসেছিলেন।কিন্তু পরবর্তীকালে,তিনি বুঝতে পেরেছিলেন উদ্বাস্তু শরণার্থীরা আর বাংলায় বান্ছিত নন।তাই যেমন ষাটের দশকে অসমে বাঙাল খেদাও সময়ে নগাঁও, গোয়ালপাড়া, কাছাড়, কোকড়াঝাড়,কামরুপ থেকে করিমগন্জ পর্যন্ত দাঙ্গাবিধ্বস্ত বাঙালি উদ্বাস্তু উপনিবেশে তিনি স্বজনদের ডেকে বলেছিলেন,যে যেখানে আছো,মাটি কামড়ে পড়ে থাকো,বাংলার দিকে তাকাবে না, বাঁচতে হলে মরতে হলে এি মাটিই ভিটে মাটি,মরিচঝাঁপি আন্দোলনের সময় দন্ডকারণ্যে গিয়েও সেই ডাক দিয়ে স্বজনদের আক্রমণে মরতে মরতে বেঁচেছিলেন।দন্ডকারণ্যে কোউ তাঁর কথা শোনেননি।তাঁকে বাংলার কম্যুনিস্ট নেতাদের বাংলামায়ের আঁচলে ফিরে আসার ডাকের ব্রহ্মমুহুর্তে খলনাযক মনে করেছিলেন তাঁর স্বজনরা।কিন্তু দন্ডকারণ্যের বাইরের বাঙালিরা সেই ডাক তখনো অগ্রাহ্য করেননি।অবিভক্ত উত্তরপ্রদেশ,অসম ও বিহার থেকে একজন উদ্বাস্তুও বাংলায় আসেননি।ততদিনে যারা দুই বাংলা এক হওয়ার আশায় সবকিছু ফেলে রেখে,বাংলা সীমান্তে ছুটে গিয়েছিলনে,তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়ে ফিরে এসে বেদখল নিজের জমিতে দিন মজুর।


আবার ইন্দিরাম্মারদুর্গাঅবতার মোদী কল্কিঅবতারে আবির্ভূত।দুই বাংলা ইন্দিরা এক করতে পারেননি,মোদী এক করে দেবেন।এমনকি আবার অখন্ড সনাতন ভারত বিশ্বদরবারে আমেরিকারও নাক কান কেটে দেবে,সেই প্রচারে মম পদ্ম প্রলয় বাংলার বুকেও।


তবু এপার বাংলায় দুই বাংলা এক করার ডাক দিতে সাহস করে নি কেউ,কিন্তু

নরেন্দ্রভাই মোদীর রামরাজত্বকালে ওপার বাংলায় দুই বাংলা এক করার ডাক উঠে গেল।বাংলাদেশি জিগির এবং পদ্ম প্রলয়ে এই ডাকে ভারতেও সাড়া পড়তে পারে।

ওদিকে কাশ্মীরে ধারা 370 নিকেশ করতে বদ্ধপরিকর সঙ্ঘ পরিাবর সংবিধানের তোয়াক্কাই করছেনা।বাংলাদেশি খেদাও অভিযান বাঙালি রাষ্ট্রপ্রধাণ ও ওবিসি প্রধানমন্ত্রীর তত্বাবধানে খূবই চলবে এবং হরিদাস পালের রামরাজত্বে বাংলার অগ্নিকন্যারও প্রচন্ড শিরঃপীড়া,ক্ষমতা যায় যায়,এমনি বিপর্যয়।


এই খবরটি পড়ুনঃ


গোপন সংগঠন 'বাঙালি ঐক্য পরিষদ': দাবি দুই বাংলা এক করা, সীমান্ত তুলে দেয়া, সদস্য একশ' জনের মতো


দুই বাংলাকে এক করতে হবে, তুলে দিতে হবে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া, বিএসএফের নির্যাতন বন্ধ এবং তাদের হাতে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে—এ দাবিগুলো সামনে রেখে দেশের দক্ষিণ জনপদে মাথাচাড়া দিয়েছে একটি গোপন সংগঠন।

'বাঙালি ঐক্য পরিষদ' নামে ওই সংগঠনটি ইতিমধ্যে খুলনার শিরোমনি, খালিশপুর, দৌলতপুর ও তেরখাদা উপজেলায় গোপনে তত্পরতা শুরু করেছে।এ সংগঠনের সদস্য একশ' জনের মত হবে। বামঘরানা ও বিভিন্ন সময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হতাশ যুবকরা এ সংগঠনের সাথে যুক্ত।

ইতিমধ্যে গোপন এই সংগঠনের দুই সদস্যকে আইন-শৃংখলা বাহিনী গ্রেফতার করেছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তাদের দাবি সম্বলিত প্রচারপত্র ছাপার অপরাধে পুলিশ সংশ্লিষ্ট ছাপাখানাটিকে সিলগালা করার জন্য জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে।

http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDVfMzBfMTRfMV8yXzFfMTM0NDIy


এবং এই মন্তব্যটিঃ


Ajit Kumar Singha

4 hrs

পশ্চিমবঙ্গে পালাবদল দেখে আসলাম । সি পি এম নিঃশেষ ,তৃণমূলের অন্তর্জলি যাত্রা শুরু হয়েছে ।সাধারণ মানুষ ওই দুই দলকে ঘৃণা করে । হাজার হাজার মানুষ রোজদিন প্রাণ বাঁচানোর জন্য বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন ।

তবে মনেদর ভালো খবর হলঃ

বাংলাদেশে আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে দেশের সব অফিস আদালতসহ সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রচলনে হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের আদেশ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে বাংলা ভাষা প্রচলনে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাস্তবায়নে সরকারি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

গত ২৯ এপ্রিল হাইকোর্ট তার আদেশে ১৫ মের মধ্যে সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রচলনের আদেশ দেয়। কিন্তু সরকার এখনো তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় জানান, বাংলা ভাষা প্রচলনে সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন। এরপর আদালত এক মাস সময় বৃদ্ধি করে আদেশ দেয়।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একই বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে সব বিদেশি ভাষার বিজ্ঞাপন ও গাড়ির নেমপ্লেট বাংলা পরিবর্তনের জন্য কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে।

দুই সপ্তাহের মধ্যে বিবাদী মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সুপ্রীম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে জবাব দিতে বলা হয়।

সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী আকন্দ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১৬ ফেব্রুয়ারি এ রিট দায়ের করেন।


ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করা বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এ অনুচ্ছেদে ওই রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তিনি বুধবার শ্রীনগরে সাংবাদিকদের বলেন, তারা গণপরিষদ আহ্বান না করা পর্যন্ত ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করতে পারে না। গণপরিষদই ভারতে জম্মু ও কাশ্মীরের যোগদান অনুমোদন করেছিল। যদি আপনারা এ প্রশ্নই আবার উত্থাপন করতে চান, তাহলে আপনাদের গণপরিষদকে নিয়ে আসতে হবে এবং তখন আমরা কথা বলব। বিজেপির আদর্শিক মূল সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আর এসএসএস) বলেছে, তারা ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করতে চায় সত্য, তবে বাতিল করার চেষ্টায় তাড়াহুড়ো করছে না। বরং তারা চায়, সেটি বাতিল করা হলে দেশের লাভ না ক্ষতি হবে, সেই প্রশ্নে বিতর্ক হোক। এর আগে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য সম্পর্কিত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার প্রশ্নে রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে পৌঁছে। ওই রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো এবং কংগ্রেস ওই সাংবিধানিক বিধান রদ করার যেকোন উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে। আরএসএস আবদুল্লাহর সমালোচনা করে বলেন যে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করা হোক বা নাই হোক জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েই থাকবে। আবদুল্লাহর ওই অনুচ্ছেদ রদ করা হলে রাজ্যটি আর ভারতের অংশ থাকবে না বলেও মন্তব্য করেছিলেন। খবর হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমস ও জিনিউজের।

ওমর বলেন, কেন্দ্রের উচিত রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও জোরদার করা, কিন্তু ওই অনুচ্ছেদ রদ করার কোন উদ্যোগ জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে আরও বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। তিনি জিতেন্দ্র সিংয়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে কথা বলছিলেন। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল না করার প্রশ্নে অনড় ব্যক্তিদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে বলে প্রতিমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন। আরএসএসয়ের তাত্ত্বিক এমজি বৈদ্য বলেন, নরেন্দ্র মোদি জম্মুতে তাঁর নির্বাচনী প্রচার অভিযান চালানোর সময় ওই অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্কের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করতে ক্ষতির কিছু নেই। বৈদ্রের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এ ইস্যুতে জম্মু ও লাদায়ের জনগণের সঙ্গে কথা বলা। তিনি বলেন, যদি এ দুটি অঞ্চল এরূপ কোন বিধান না চায় এবং কাশ্মীরের জনগণ তাদের অবস্থানে অনড় থাকে, তাহলে নাদাখ ও জম্মুকে ওই রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করা হোক।

৩৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ও অন্তর্ভুক্তির দলিলে উল্লিখিত বিষয়াদির ক্ষেত্র ছাড়া ভারতে পার্লামেন্টকে অন্য সবক্ষেত্রে আইন বলবত করতে হলে, রাজ্য সরকারের সম্মতি থাকা প্রয়োজন।

আরএসএস লোকসভা নির্বাচনে এর লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবকে নিয়োজিত করে এবং হিন্দুত্ববাদী বিজেপিকে বিরাট বিজয় পেতে সহায়তা করে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করা বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি। রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল কনফারেন্স ও এর কোয়ালিশন অংশীদার কংগ্রেস এবং বিরোধী পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের ৩৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত উক্তির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। জিতেন্দ্র সিং এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করার প্রক্রিয়ার সূত্রপাত করতে স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ওই বিরোধপূর্ণ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার কোন কোন স্বার্থসংশ্লিষ্টদের আলোচনা করছে তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে ওই সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি শ্রীনগরে বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ওই উদ্যোগের বিরোধিতা করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করব। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী কথা বলছেন, কাজেই এটি সরকারী নীতিগত বিষয়। কেন্দ্রীয় সরকার কাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তা সরকারকে অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে।

জিতেন্দ্র সিংয়ের বিবৃতির পর পরই আবদুল্লাহ তার টুইটারে বলেন, যদি ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয় তাহলে জম্মু ও কাশ্মীর আর ভারতের অংশ থাকবে না। আরএসএস সেজন্য আবদুল্লাহর করা সমালোচনা করে। আরএসএসয়ের মুখপাত্র রাম সাধন তার টুইটারে বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর আর ভারতের অংশ থাকবে? ওমর জি একে তার পৈত্রিক তালুক মনে করেন। ৩৭০ অনুচ্ছেদ থাকুক বা নাই থাকুক, জম্মু ও কাশ্মীর সব সময়েই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে থাকবে। নয়াদিল্লীতে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংডি বলেন, জিতেন্দ্র সিংয়ের মন্তব্য পরিকল্পিত এবং কেবল কাশ্মীরে নয়, দেশজুড়ে বিভাজন সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্য।

জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রস্তাব প্রসঙ্গে আরও সংবেদনশীলতা ও চিন্তাভাবনার গভীরতা আশা করছেন রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ করণ সিং৷


প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতার বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ, তাঁর বাবা মহারাজা হরি সিং-ই ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে ভারত রাষ্ট্রে কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তির দলিলে সই করেছিলেন৷ পাশাপাশি, ১৯৫৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরের সংবিধানে সই করেছিলেন করণ নিজেই৷ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে করণের অবশ্য দাবি, অন্তর্ভুক্তির দলিলে তাঁর বাবা যখন সই করেন, পরিস্থিতি তখন স্বাভাবিক ছিল না৷ করণের কথায়, 'সে সময় পুরোমাত্রায় যুদ্ধ চলছে৷ এটা ঠিক যে, বাকি সব করদ রাজ্য যে দলিলে সই করেছিল, অন্তর্ভুক্তির দলিলের সঙ্গে তার কোনও ফারাক ছিল না৷ তবে বাকি সবক'টি রাজ্যই পরে দেশের সঙ্গে মিলে যাওয়ার নথিতে সই করে৷ কিন্ত্ত বাকি দেশের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের সম্পর্ক যেহেতু একটি বিশেষ পরিস্থিতির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তাই তাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল৷ ১৯৫৭-য় আমার সইয়ে আইনে পরিণত হয় জম্মু ও কাশ্মীরের সংবিধান৷ তা এখনও বৈধ৷'

করণ মনে করছেন, কাশ্মীর ভারতের 'অবিচ্ছেদ্য অংশ' হলেও তাকে অন্য রাজ্যের মতো বিবেচনা করতে হবে, তার কোনও মানে নেই৷ তাঁর যুক্তি, হং কংও চিনের অংশ, কিন্ত্ত তাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে৷ তাই বিচ্ছিন্নতাবাদের যাবতীয় ডাক যেমন অযৌক্তিক, ঠিক তেমনই জোর করে কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়াও ঠিক নয়৷ এখানেই সংবেদনশীলতার আশা করছেন করণ৷ তিনি মনে করছেন, ৩৭০ ধারা পুনর্বিবেচনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং মন্তব্য না-করলেও পারতেন৷ এ প্রসঙ্গে তাঁর বিবৃতি, 'পুরো প্রসঙ্গটাই অত্যন্ত সংবেদনশীল৷ তাই ঠান্ডা মাথায় এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রসঙ্গটি বিবেচনা করা উচিত৷ দু'পক্ষ থেকেই যদি এ ধরনের বিবৃতি দেওয়া হয়, তা হলে তা জম্মু-কাশ্মীরে আরও উত্তেজনার সৃষ্টি করবে৷' বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবার অবশ্য এর প্রেক্ষিতে কোনও মন্তব্য করতে এদিন রাজি হয়নি৷




জিতেন্দ্র চুপ, ৩৭০ থেকে দূরত্ব মোদীর

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও শ্রীনগর, ২৯ মে, ২০১৪, ০৩:০৬:৫২

গত বছর জম্মুতে 'ললকার সমাবেশ'-এ দাঁড়িয়ে তিনিই বলেছিলেন, সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত। তখন তিনি দলের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। কিন্তু কাল প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজের প্রথম দিনে তাঁরই দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ যখন এই নিয়ে বিতর্কটি উস্কে দিলেন, তখন তাঁর থেকে দূরত্ব তৈরি করলেন নরেন্দ্র মোদী। বুঝিয়ে দিলেন, সরকারের জন্মলগ্নে কাশ্মীর নীতিতে হাত দিতে চান না তিনি।

যে বিষয়টি নিয়ে তিনি শুধু মুখই খোলেননি, দলের নির্বাচনী ইস্তাহারেও তা সামিল করা হয়েছিল, তাকে আপাতত দূরে সরিয়ে রাখছেন কেন প্রধানমন্ত্রী মোদী? বিজেপি সূত্র বলছে, কেবল ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদই নয়, নির্বাচনী ইস্তাহারে উন্নয়ন ও সুশাসনের কথাও রয়েছে। বস্তুত, এই দু'টিই ছিল মোদীর মূল অস্ত্র, যার ঘায়ে দেশ জুড়ে ঘায়েল হয়েছে কংগ্রেস। মানুষের সেই প্রত্যাশা পূরণে নয়া সরকার যে আন্তরিক, আপাতত সেই ছবি তুলে ধরাটাই মোদীর লক্ষ্য। তাই বিতর্কিত কোনও বিষয় তিনি ছুঁতে চাইছেন না।

আর তাই গত কাল জিতেন্দ্র সিংহ যখন অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে মন্তব্য করেন, খোদ মোদী তাঁকে ফোন করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন। রাতে বিবৃতি জারি করে গোটা দায় সংবাদমাধ্যমের উপরে ঠেলে দেন জিতেন্দ্র। আজ সকালেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে আলোচনা করেন মোদী। রাজনাথও জিতেন্দ্র সিংহকে আলটপকা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলেন। যার ফল, এ দিন সাংবাদিকদের এড়িয়ে গিয়েছেন জিতেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর দফতর ছাড়াও বিজ্ঞান প্রযুক্তি দফতরের প্রতিমন্ত্রী তিনি। সেখানে সাংবাদিকরা তাঁকে ধরেন। প্রশ্ন শুনে জিতেন্দ্র বলেন, "এখানে তো বিজ্ঞানের গন্ধ। এখানে বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে কথা বলাই উচিত নয়।"

সঙ্ঘ নেতারা কিন্তু একেবারেই অখুশি নন। কারণ, রামমন্দির, অনুচ্ছেদ ৩৭০, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এ সব বরাবরই আরএসএসের মূল ইস্যুগুলির অন্যতম। সঙ্ঘের চাপেই ইস্তাহারে বিষয়গুলিকে সামিল করতে হয়েছিল মোদীকে। কিন্তু মোদী প্রচারের সময় ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনার কথা বললেও রামমন্দির নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য করেননি। কারণ, একদা হিন্দুত্বের পোস্টার বয় থেকে 'বিকাশ পুরুষ' হিসেবে নিজেকে তুলে ধরাই ছিল ভোটের আগে তাঁর লক্ষ্য। আর ভোটের পর সেটিকে প্রমাণ করে একটি দীর্ঘ ইনিংস খেলারই এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।

বিজেপির এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, "ভোটের ফল প্রকাশের দিনই মোদী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, জনমত পাঁচ বছরের হলেও তিনি কমপক্ষে দশ বছরের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন। ফলে পাঁচ বছর পরেও মোদী যদি আবার ভোটে জিতে আসতে চান, তা হলে তিনি কি এখন বিতর্কিত বিষয়গুলি খুঁচিয়ে ঘা করবেন? বরং উন্নয়ন ও দক্ষ প্রশাসনের একটি ছবি জনতার সামনে তুলে ধরেই ফের ভোট চাইবেন।"

কাল জিতেন্দ্রর ওই মন্তব্যের পরে থেকে অবশ্য কাশ্মীরের নেতানেত্রীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা থেকে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি, সকলেই এর সমালোচনা করেন। এক দিকে দিল্লির কংগ্রেস নেতারা, অন্য দিকে সঙ্ঘ নেতা রাম মাধব এঁরা মুখ খুললে বিতর্ক অন্য মাত্রা পেয়ে যায়। বিশেষ করে রাম মাধব এবং ওমরের মধ্যে বাগ্‌যুুদ্ধ অব্যাহত। ওমরের কাল টুইট করেছিলেন: হয় অনুচ্ছেদ ৩৭০ থাকবে, নয়তো জম্মু-কাশ্মীর আর ভারতের অংশ থাকবে না। যার জবাবে রাম মাধবের টুইট, "জম্মু-কাশ্মীর আর ভারতের অংশ থাকবে না? ওমর কি মনে করেন ওটা ওঁর বাবার সম্পত্তি!" ওমর এ দিন বলেন, "আমি কখনওই বলিনি এটা আমার বাবার রাজ্য। আমি জম্মু-কাশ্মীরের এক জন নাগরিক। আর তাই নিজের অধিকার নিয়ে মুখ খোলার অধিকার আছে আমার।" মেহবুবা মুফতি অভিযোগ করেন, "জিতেন্দ্র সিংহের এই মন্তব্য জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দিতে পারে।"

বিজেপি কিন্তু চুপ। মোদী-সহ দলের সব নেতাই কুলুপ এঁটেছিলেন। তবে সঙ্ঘের সূত্র বলছে, সঙ্ঘ যা চাইছিল, জিতেন্দ্র সেটাই করেছেন। কাশ্মীরের নেতানেত্রীরা তো এর বিরোধিতা করবেনই। কিন্তু এর ফলে জাতীয় ক্ষেত্রে বিতর্ক শুরু হল। রাম মাধব বলেছেন, "আলোচনা হোক না। দেশ জুড়ে বিতর্ক হলে ক্ষতি কী!"

মোদী আজ কী করলেন? এ দিন প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমলাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন মোদী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার কথা বলেন। রাজ্যগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে একটি 'দল' তৈরির কথা প্রচারেও বারবার বলেছেন তিনি। আজ সেটাই কার্যকর করার নির্দেশ দেন তিনি। অর্থাত্‌, মোদী বোঝাতে চেয়েছেন, সরকারের কাজেই অনেক বেশি মনোনিবেশ করছেন তিনি। যা থেকে অনুচ্ছেদ ৩৭০ আপাতত অনেকটাই দূরে।

রাজ্য জুড়ে শক্তি দেখাল বিজেপি

lead

খতিয়ে দেখতে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্যের দুই সদ্যনির্বাচিত সাংসদ-সহ পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের কাল, শনিবার সন্দেশখালি ঘুরে রাজ্যের মুখ্যসচিব বা রাজ্য পুলিশের ডিজি-র কাছেও যাওয়ার কথা। পশ্চিমবঙ্গে দলের জন্য তৈরি হওয়া নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও যে উদগ্রীব, প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্তে তারই ইঙ্গিত রয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা। এর আগে বাজপেয়ী সরকারের জমানায় রাজ্যে এনডিএ-র প্রতিনিধিদল এসেছিল একাধিক বার।

কাল রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় দল

sandesh

এই সময়: বিরোধী অবস্থানে থাকাকালীন বামেদের 'সন্ত্রাসে'র বিহিত চেয়ে 'দিল্লির দল' পাঠানোর দাবি তুলতেন তৃণমূল নেত্রী৷ সেই অস্ত্রেই এ বার মমতা সরকারকে চাপে ফেলতে চলেছে বিজেপি৷


সন্দেশখালির সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ দলীয় কর্মীদের দেখতে এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শনে কাল, শনিবার রাজ্যে আসছে শীর্ষ বিজেপি নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা স্বরাষ্ট্রসচিব বা মুখ্যসচিবের সঙ্গেও প্রতিনিধিরা দেখা করতে চাইছেন৷ বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহসভাপতি তথা দার্জিলিংয়ের সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে মীনাক্ষী লেখি, মুক্তার আব্বাস নকভি, সিদ্ধার্থনাথ সিংহ ছাড়াও আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ও থাকবেন৷ রাহুল সিনহা, শমীক ভট্টাচার্যের মতো রাজ্য বিজেপির নেতারাও প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সন্দেশখালি যাবেন৷ সেখান থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব৷ দিল্লি ফিরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহকেও রিপোর্ট দেবেন এই প্রতিনিধিরা৷ রাজ্য বিজেপির পর্যপেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহের কথায়, 'আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে যেমন ঠিক কী ঘটেছিল জানব, তেমনই যাঁরা আহত হয়েছেন--তাঁদের সঙ্গেও দেখা করব৷ দিল্লি ফিরে রাজনাথ সিংহকেও রিপোর্ট করব৷' সন্ত্রাসের ঘটনায় রাজ্য সরকারের 'নিষ্ক্রিয়তা' নিয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া সিদ্ধার্থনাথের৷ তাঁর মন্তব্য, 'এ রকম চলার পরেও কী করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে থাকতে পারেন!'


এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি বন্ধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে৷ উত্তর ও দক্ষিণ বসিরহাটে বন্ধ সর্বাত্মক হলেও বাদুড়িয়া, হাড়োয়ায় তেমন প্রভাব পড়েনি৷ সকালে ভ্যাবলা ও কাকরা মির্জানগরে রেল অবরোধ হয়৷ ৯ জন অবরোধকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ আবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রাজ্য সফরের আগেই সন্দেশখালির সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন এসএসকেএম হাসপাতালে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র৷ গুলিবিদ্ধ গ্রামবাসীদের চিকিত্‍সা নিয়ে খোঁজখবর নেন তাঁরা৷ কথা বলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিত্‍সকদের সঙ্গে৷ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে লাগাতার রাজনৈতিক সংঘর্ষ সত্ত্বেও প্রশাসন সদর্থক কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ করেছেন সূর্যবাবুও৷


বস্ত্তত, বৃহস্পতিবারও পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের মলম গ্রাম পঞ্চায়েতের নরসিংহপুর গ্রামে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ ৬ জন বিজেপি কর্মীর বা‌ি.ড আক্রান্ত হয়েছে৷ গত ২৬ মে মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন নয়াগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দু পাত্র ও তাঁর ভাই সুখেন্দু পাত্রের নেতৃত্বে হাজারখানেক তৃণমূল কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন৷ সুখেন্দ্ুবাবুর অভিযোগ, 'সেই আক্রোশে পুলিশের সামনেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের নেতৃত্বে আমাদের কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে৷ বুধবারও শান্তি কুইল্যা ও তাপস মহাপাত্রকে তৃণমূলের লোকজন ভসরাঘাটের শিশুবাগানে বেঁধে মারধর করেছে৷' যদিও নয়াগ্রামের ডিএসপি কার্তিক মণ্ডলের দাবি, বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি৷ গোলমালের কথা অবশ্য মেনে নিয়েছেন তৃণমূল নেতা উজ্জ্বলবাবু৷ তবে তাঁর দাবি, 'আমাদের শান্তি পদযাত্রায় বিজেপিই পিছন থেকে হমলা চালিয়েছে, আমাদের কর্মীরা প্রতিরোধ করেছে মাত্র৷' স্থানীয় বিজেপি নেতারা দলের রাজ্য সভাপতিকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন৷ বিভিন্ন অঞ্চলে দলীয় কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছে বিজেপি৷ বীরভূমে বোলপুর থানার সামনে এ দিন পৌনে এক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলে৷ পরে থানায় ডেপুটেশনও দেওয়া হয়৷ দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিন্্হা নিজে উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্ক থানার সামনে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন৷


এই প্রেক্ষাপটেই রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে কেন্দ্রীয় দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত বিজেপির৷ উদ্দেশ্য, মূলত দু'টি৷ প্রথমত, রাজনৈতিক ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলকে চাপে রাখা, যাতে বিজেপি কর্মীদের হিংসার শিকার হতে না হয়৷ দ্বিতীয়ত, বিজেপি কর্মীদের আশ্বস্ত করে এটা বোঝানো, যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁদের পাশে রয়েছেন৷ এই দুই লক্ষ্যেই রাহুলবাবুরা সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহের দারস্থ হন৷ রাজনাথ বিমুখ করেননি রাজ্যের নেতাদের৷


No comments:

Post a Comment